সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অশান্ত অস্থিতিশীল পরিবেশ ছিল শান্তিচুক্তি করার ফলে বর্তমানে তা নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ বর্তমানে অনেক শান্তিতে বসবাস করতে পারছে। তিনি শান্তিচুক্তি বিরোধীতাকারীদের শান্তি প্রক্রিয়ায় নিজেদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পার্বত্য এলাকার মানুষ শান্তি সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন চায়। তারা অশান্তি চায় না। আসুন পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজেদের সম্পৃক্ত করুন।
শনিবার রাঙামাটি সদর উপজেলার কাটাছড়ি কলাবুনিয়া গ্রামের বইয়ো তারুম গ্রন্থাগার উদ্বোধন কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
নিখিল কুমার চাকমা আরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিতে বিশ্বাস করে। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে। স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর, পবিত্রস্থান ও অফুরন্ত জ্ঞানের ভান্ডার হলো পাঠাগার। পাঠাগারে জ্ঞান আহরণের মাধ্যমে মানুষ সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে। শিক্ষিত ও জ্ঞানী মানুষেরা দেশ ও সমাজের উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করার প্রয়াসী হন।
তরুণ সমাজ কর্মী কার্ত্তিক দেওয়ানের সঞ্চালনায় ও স্থানীয় মুরুব্বী ত্রিনয়ন চাকমার সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হৃদয় বিকাশ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক সাধন মনি চাকমা ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাবেক মহিলা মেম্বার ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজাতা দেওয়ান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কার্বারী লক্ষী কুমার চাকমা, সাপছড়ি ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার রঞ্জন চাকমা, সদানন্দ চাকমা, প্রদীপ কান্তি চাকমাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
লাইব্রেরী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এলাকার তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ গ্রহণ করেন এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সভায় নিখিল কুমার চাকমা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন বিষয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে তিনটি আসনে আঞ্চলিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হলেও সরকার যদি আন্তরিক না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জন্য কাজ করা কঠিন। তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা ৫৮টি আসন পেয়েও কিছুই করতে পারিনি। আমাদের অত্যন্ত মেধাবী দক্ষ ও সফল অর্থমন্ত্রী শাহ এসএমএস কিবরিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেনেড হামলা চালিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে । ঐ ঘটনায় আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমাদের ৫৮জন এমপি থাকা সত্ত্বেও তাদের কোনো দাবীই কর্ণপাত করেনি তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকার। তিনি বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি আসনে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর দাবী আদায় সম্ভব হবে না যদি চুক্তি বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় চলে আসে। আওয়ামী লীগ সরকারই কেবল পাহাড়িদের দাবীর প্রতি যতœশীল।
আলোচনা সভা শেষে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্থানীয় কলাবুনিয়া বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন এবং বিহার অধ্যক্ষ চন্দ্রবংশ স্থবিরের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় তিনি বিহারের বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড পরিদর্শন করেন এবং বিহার উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে তিনি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।