সিএইচটি টুডে ডট কম লক্ষীছড়ি (খাগড়াছড়ি)। লক্ষীছড়ি-সিন্দুকছড়ির দূর্গম সড়কে দু’কোটি টাকার কার্পেটিং কাজ শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নিন্মমানের সামগ্রী অবাধে ব্যবহার ও নিরাপত্তার ধারক দেওয়াল না থাকার কারণে রাস্তাটি এখন ভেঙ্গে যেতে শুরু করেছে। নিম্নমানের কাজের ফলে এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সাধারন মানুষ অভিযোগ করেছে।
সরেজমিন ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় গত ২০১১-১২ অর্থবছরে দুই কিস্তিতে ১ কোটি ৮১ লক্ষ ব্যয়ে লক্ষীছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়কের দূল্যাতলী চোংড়াছড়ি মুখ পাড়াস্থ থেকে সিন্দুকছড়ির দিকে প্রায় ৬ কিলোমিটার কার্পেটিং দরপত্র আহবান করা হয় । এতে সমঝোতার মাধ্যমে কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয় মেসার্স রিপ এন্ট্ার প্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান । কিন্তু তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হাতবদল করে বর্তমানে বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান । এছাড়া নির্মানের সময় নিন্ম মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় পানি ও বালি ব্যবহার না করার অভিযোগ ওঠেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে । নির্মাণ কালীন সময়ে নিরাপত্তার অজুহাতে এলজিডির প্রতিনিধি মাঠ পর্যায়ে উপস্থিত না থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো কাজটি দায়সাড়াভাবে এবছরের জুন মাসে কাজটি শেষ করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি এ প্রতিবেদককে জানান, রাস্তাটি দূর্গম এলাকায় হওয়ার কারণে সন্ত্রাসীদের আনাগোনার ভয় দেখিয়ে ঠিকাদার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সরজমিনে না আসতে প্ররোচিত করে। ফলে ঠিকাদার নিজের মতো করে কাজটি শেষ করতে বেগ পেতে হয়নি!
নির্মাণ কাজে যেসব মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে তা দেখলে রীতিমতো হাস্যকর মনে হয়েছে এলাকা বাসীর নিকট। পাহাড়ে সড়ক নির্মাণের পর যেভাবে রক্ষণা-বেক্ষন করা প্রয়োজন এ সড়কটি নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতির কোন কিছুই মানা হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চাইলাপ্র“ মারমা জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে গোপন সমঝোতার মাধ্যমে অনিয়ম করা হয়েছে ।
তিনি বলেন, রাস্তার বাঁকে বাঁকে যেভাবে ভাঙ্গন সৃষ্টি রোধ করার জন্য তাতে নিরাপত্তার জন্য ধারক দেওয়াল না দিয়ে গাছ ও বাঁশের বেড়া বসিয়ে দায় সাড়া ভাবে মাটি ভরাট করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দূল্যাতলী ইউপি চেয়ারম্যান অংগ্যজাই মারমা বলেন, এ সড়কটি কার্পেটিং করার দাবী দীর্ঘ দিনের কিন্তু ভাঙন রক্ষার জন্য যা ব্যবহার করা হয়েছে তা রীতিমতো ছেলে খোলার সামিল। অথচ রাস্তাটি সম্পুর্ন হলে জেলার সাথে ৩০ কিলোমিটারের দুরত্ব কমে যাবে।
কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দায়সাড়াভাবে কাজ শেষ করার কারণে মাত্র দু’ মাসেই কার্পেটিং ওঠে যাচ্ছে এবং বাঁকে বাঁকে রাস্তা ভেঙ্গে পড়ছে। জরুরী ভিত্তিত্বে এসব ভাঙ্গনরোধে নিরাপত্তার ধারক ওয়াল করা প্রয়োজন। ঠিকাদারের স্থানীয় প্রতিনিধি মো. আবুল কালাম জানান, দূর্গম এলাকায় সড়কের কাজ করতে গিয়ে অনেক সমস্যা হয়েছে। তবে বড় ধরণের অনিয়ম হয়নি।
লক্ষীছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহ আলম’র দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, সড়কে নিরাপত্তা ওয়ালের জন্য স্কিম পাঠানো হয়েছে ।