সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। আমি খুব বিস্মিত ও অবাক হয়েছি রাঙামাটিতে জেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন শ্লোগান দিচ্ছে ‘‘খালেদা জিয়ার গদিতে, জ্বালাও আগুন এক সাথে’’! তারা নিজেরা কি শ্লোগান দিচ্ছে তারা নিজেরাই জানে না। না জানার কারণ- তাদের মাঝে আদর্শ নাই। তাদের কোন কমিটমেন্ট নেই। এসব কারনেই তারা নিজেরা খালেদা জিয়ার গদিতে এক সাথে আগুন লাগাচ্ছে। কিন্তু আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি না যে ছাত্রলীগ নিজ নেত্রীর বিরুদ্ধে এসব শ্লোগান দিবে। কারণ প্রত্যেক মানুষের রক্তের গ্রুপ বিভিন্ন থাকতে পারে কিন্তু ছাত্রলীগ যারা করে তাদের রক্তের গ্রুপ আওয়ামীলীগ। আমি বিশ্বাস করি। তাই ভুলেও কখনো নিজের দলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে পারে না। ভুলে স্লোগান দিলেও জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু এই স্লোগানই দিবে। কারণ আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের কাজ হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা। মানুষের কল্যাণে কথা বলা।
আজ বিকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রাঙামাটি কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্দেগ্যে বেতবুনিয়া হাসপাতাল চত্বওে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর সব জায়গায় উন্নত প্রতিষ্ঠানের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে। গত ১০ই জানুয়ারী রাঙামাটিতে ছিল রণক্ষেত্র। কারণ- রাঙামাটিতে সবাই চেয়েছে বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হোক কিন্তু জেএসএস তারা চায় না। এই বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য রাঙামাটিতে কার্পিউ জারি করতে হয়েছে। একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো বাহিওে নেওয়ার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ প্রধান মন্ত্রী যথেষ্ট আন্তরিক ছিল রাঙামাটি বাসীর জন্য। নানা ঝড়ঝাপটা, প্রতিকুলতা পেরিয়ে, আজকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের ৪র্থ ব্যাচ চলছে। আগামী ২২ তারিখ থেকে পুরো দমে ক্লাস শুরু হবে।
কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতুমং মারমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বাবু চৌধুরীর সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, সাবকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। এছাড়ার কাউখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অংসুইপ্রু চৌধুরী, সহ-সভাপতি এস এম চৌধরী, ক্যজাই মারমা, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক সামশুদোহা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যচিংমং মারমা, আ্রইন বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাবেক কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী হাইদার ছিদ্দিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক পাইচিমং মরমা, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, সাবেক রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ এমরান রোকন, কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন হামিদ মনজু, রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সুলতান মাহম্মুদ বাপ্পা ও সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ ইমতিয়াজ রিয়াদ, কাউখালী উপজেলা ছাত্রলীগের পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক শাহিনসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথি শান্তি চুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, রাজা দেবাশী রায় বলেছে, সন্তু বাবুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেখা হলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের রাস্তা পরিষ্কার হবে। গত ১জানুয়ারী প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে সন্তু লারমার সাথে । এখন সন্তু লারমা বলছেন, প্রধান মন্ত্রী আমাকে কোন কথা দেয় নাই শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে। বৈঠকেতো কেউ ছিল না। কি বলেছে, কি নিয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে আপনাদের মাঝে। তা কেউ জানে না। নিশ্চয় শান্তি চুক্তির ব্যাপারে কথা হয়েছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বদনাম করছেন। আমরা সব সময় বলি রোডম্যাপ করলেও কিছু হবে না, একশত বার প্রধান মন্ত্রীর সাথে দেখা করলেও কিছু হবে না। যদি আপনাদের দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন না হয়। ইতিবাচক মনোভাব না নিয়ে সামনে আগালে কখনো শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সব সময় জেএসএস এর মনোভাব নীতিবাচক। এখানে তারা সকল ধরনের উন্নয়নে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্ট করে। পার্বত্যবাসীকে পিছনে রাখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। তাই তিনি জেএসএস কে দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন ও ইতিবাচক মনোভাব না নিয়ে সামনে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন।
তিনি ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক-সম্পীতি নষ্ট করার জন্য জন্য জেএসএস নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। যাতে করে এখানকার মানুষের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট হয়। হানা-হানি মারামারি যাতে প্রতিনিয়ত লেগেই থাকে। তাই তিনি ছাত্রলীগসহ সকল নেতাকর্মীকে সজাগ থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, কেউ যাতে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে তার জন্য ছাত্রলীগকে ভুমিকা রাখার আহবান জানান।
ছাত্রলীগের ভুমিকা বাংলাদেশে বিরল। ছাত্রলীগের অনেক সুনাম ও ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা অপকর্মে লিপ্ত। যারা অপকর্মে লিপ্ত তারা কখনো ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্মী হতে পারে না। তাই তিনি সেসব ছাত্রলীগকে সঠিক পথে আসার অনুরোধ জানান।
তিনি হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, যারা টেন্ডার বাজি, চাদাবাজি ও বিভিন্ন অপকর্মের সাথে লিপ্ত, যেসব নেতার জন্য ভোট কমবে, তাদের মত নেতা কর্মীর দলে দরকার নাই।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। তাই তিনি আগামীতে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহবান জানান।
আলোচনা সভা আগে সুগার মিল থেকে একটি শোভা যাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বেতবুনিয়া হাসপাতাল চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা শেষ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেট কাটা হয়। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।