শিরোনামঃ

রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক

ভুমি কমিশনের বিধিমালা প্রণীত না হলে কাজ এগিয়ে নেয়া কঠিন হবে: সন্তু লারমা

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, ভুমি কমিশনের কাজ আরো ত্বরান্বিত হওয়ার দরকার এজন্য যত দ্রুত সম্ভব সরকারকে ভুমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে ভুমি কমিশনের বিধিমালা প্রণীত না হলে কাজ এগিয়ে নেয়া কঠিন হবে সম্ভব হবে না। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে ভুমিকা নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কমিশনের কাজ সহজ করতে সরকার রাঙামাটি ও বান্দরবানে শাখা অফিস স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে এজন্য প্রয়োজন লোকবল, অর্থ ও অফিস।

আজ রাঙামাটিতে ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সন্তু লারমা একথা বলেন।
পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে কমিশনের সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোমিনুর রশিদ আমিন, চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, মং সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী, বোমাং সার্কেল চিফ উ চ প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যা শৈ হ্লাসহ কমিশনের ৮ সদস্য যোগ দেন।
প্রায় আড়াইঘন্টা অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পাহাড়ের ভুমি বিরোধ বিষয়ক অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা, আনীত অভিযোগের বিষয়ে করনীয় পদক্ষেপ,কমিশনের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয় ।

সভা শেষে কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক সাংবাদিকদের জানান, ইতোমধ্যে ভুমি বিরোধ সংক্রান্ত প্রায় ২২ হাজার আবেদন কমিশনে জমা পড়েছে, বর্তমানে আবেদন গুলোর শ্রেণি বিভাজন করা হচ্ছে। নিষ্পত্তি কোনটা আগে করা দরকার, কোনটা পরে করা দরকার এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ভুমি কমিশন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগে ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের জায়গা জমির বিরোধ নিষ্পত্তি করবে।
ভুমি কমিশন চেয়ারম্যান আরো জানান, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলায় খুব শীঘ্রই কমিশনের শাখা স্থাপন করা হবে। এছাড়া কমিশনের প্রয়োজনীয় জনবল এবং সূযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে যত দ্রুত পদক্ষেপ নেবে কমিশনও দ্রুত কাজ করতে পারবে। তিনি জানান আগামী মার্চ মাসে কমিশনের পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেছেন, পাহাড়ে আইন লঙ্ঘন করে যেসব ভুমি বা জমি বন্দোবস্তু নেয়া হচ্ছে, সেগুলো অবৈধ, জরিপ ও যাচাই বাছাই করে পাহাড়ের সব অবৈধ ভূমি বন্দোবস্তু বাতিল করা হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিবাদমান ভূমি বিরোধ নিস্পত্তিকল্পে কমিশন দ্রুত কাজ শুরু করবে।

কমিশনের সদস্য চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশিষ রায় জানান, যেহেতু কমিশন জনবল সংকট প্রকট আগে এ সংকট দুর করতে হবে। কমিশনের লজিষ্ট্রিক সার্পোট দেয়া জরুরী বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রসঙ্গত: পার্বত্য ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আনোয়ার উল হকের দ্বিতীয় মেয়াদে এটি প্রথম বৈঠক। এর আগে সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৭ সনের ১৬ জানুয়ারী বান্দরবান সার্কিট হাউজে। ২০১৪ সনের ৭ সেপ্টেম্বর আনোয়ার উল হককে চেয়ারম্যান পদে ৩ বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়, গতবছরের ৭ সেপ্টেম্বর তার মেয়াদ শেষ হলে ১৩ ডিসেম্বর তাকে পুনরায় পার্বত্য ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ৬ষ্ঠতম চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 500 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen