সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি উদ্দ্যেশে করে বলেছেন, যে মন্ত্রনালয় চান সেটি দিব তারপরও নির্বাচনে আসুন, দেশে কোন অগনতান্ত্রিক শক্তি মাথা উচু করে দাড়াক আমরা সেটি হতে দেব না। সংবিধানে মোতাবেক নির্বাচন হবে। হরতাল, ভাঙচুর জ্বালাও পোড়াও এসব বন্ধ করে নির্বাচনের অংশ নেন।
রোববার বিকালে গনভবনে আওয়ামীলীগের পার্লামেন্টরিয়ান বোর্ডে মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দল যাকে যোগ্য মনে করবে তাকে মনোনয়ন দিবে, সবাইকে সব কিছু ভুলে দলীয় প্রার্থীর বিজয় ছিনিয়ে আনতে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৫ বছরে দেশের জনগণের জীবনমান উন্নত হয়েছে। সবকিছুতে উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে। আওয়ামী লীগের সাফল্য বলে শেষ করা যাবে না।
এদিকে সংসদীয় আসনভিত্তিক মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাত্কার নেওয়ার কথা থাকলেও সাক্ষাত্কারের বদলে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ায় নাখোশ হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তাঁরা বলছেন, হলে প্রকৃত অবস্থা তাঁরা দলীয় সভানেত্রীকে অবহিত করতে পারতেন। এতে মনোনয়ন-বাণিজ্যও কমে আসত।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের একটি অংশ বলেছে, তাঁরা শুনেছেন দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দূরে সরিয়ে কোন্দল জিইয়ে রাখা এবং দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি নিয়ে যাঁরা এত দিন ব্যস্ত ছিলেন, তাঁদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এ ছাড়া বিতর্কিত নেতাদের জায়গায় নতুন মুখ এবং দলের ত্যাগী নেতারা অগ্রাধিকার পাবেন। ফলে সাক্ষাত্কার অনুষ্ঠিত হলে কে, কেমন, সেটা স্পষ্ট বুঝতে পারতেন শেখ হাসিনা।
কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেছেন, এর আগেও তাঁরা সভানেত্রীর সঙ্গে এমন ঢালাও মতবিনিময়ের সুযোগ পেয়েছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাত্কারের পরিবর্তে মতবিনিময় করে লাভ কী হবে, সেটি তাঁদের বোধগম্য নয়। তাঁরা বলেন, শেখ হাসিনা প্রায় সবার চেহারা ও নাম মনে রাখতে পারেন। সাক্ষাত্কার হলে অন্তত তিনি নাম ও চেহারা মনে রাখতে পারতেন।
যশোর জেলার একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মনে করেছিলাম দলীয় সভানেত্রী আমাদের সরাসরি সাক্ষাত্কার নেবেন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না।’ তিনি জানান, এতে কিছুটা মন খারাপ তাঁর।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘প্রার্থী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্নভাবে জরিপ করেছেন। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। কাকে প্রার্থী দিলে ভালো হয়, সেটা প্রধানমন্ত্রী জানেন। আলাদাভাবে সাক্ষাত্কার গ্রহণ শুধু সময় ক্ষেপণ হবে। এ কারণে সাক্ষাত্কার অনুষ্ঠিত হবে না।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবুল মাল আবদুল মুহিত, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও দীপু মনির আসনেও মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেক।
জানা গেছে, ৩০০ সংসদীয় আসনে দুই হাজার ৬১১ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এর মধ্যে যুবলীগের প্রায় ৩৫ জন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১৫ জন, কৃষক লীগের ২০ জন, যুব মহিলা লীগের ১০ জন, জাতীয় শ্রমিক লীগের ১০ জন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের পাঁচজন। সদ্য যুবলীগ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির ১৪৯ জনের সহ-সম্পাদকের মধ্যে ৯০ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ দলীয় সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদরা প্রায় সবাই মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।