শিরোনামঃ

বিডিআর হত্যা মামলার রায়ে ১৫২ জনের মৃত্যুদন্ড, বিএনপি নেতা নাসির ও আওয়ামীলীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড

সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড; বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে ২৭১জনকে। আর জীবিত ৮৪৬ আসামির মধ্যে বাকিদের তিন থেকে দশ বছর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।BDR

ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৩৫ মিনিটে রায় পাঠ শুরু হয়। রায় পাঠের শুরুতেই বিচারক মামলার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। এতে তিনি জানান, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ‘অপারেশন ডালভাত’ এর অর্থসংশ্লিষ্ট কর্মসূচিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরকে জড়ানো ঠিক হয়নি। এছাড়া এই বিদ্রোহের তথ্য আগে জানতে না পারার ঘটনায় ‘গোয়েন্দা দুর্বলতা’ ছিল বলেও মনে করছে আদালত। রায় পাঠকালে সংশ্লিষ্ট আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।

আদালত পিন্টু ও তোরাব আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন অনাদায়ে আরো পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।

সকাল থেকেই আদালত ঘিরে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। আলিয়া মাদরাসা মাঠ ও আশেপাশের এলাকায় পুলিশ, ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে বিদ্রোহের প্রায় চার বছর আট মাস পর এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। গত ৩০ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণার তারিখ থাকলেও রায় প্রস্তুত না হওয়ায়, ওইদিন রায় ঘোষণার জন্য ৫ নভেম্বর তারিখ ঠিক করা হয়।

এর আগে গত ২০ অক্টোবর পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসার পাশে কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে ঢাকার জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে আসামি ও রাষ্ট্র পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শেষ হয়।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল গণমাধ্যমকে বলেছেন, “ইতিহাসে এত বড় মামলা আর কখনো হয়নি। মামলায় সাড়ে আটশ’ আসামির বিষয়ে প্রায় সাড়ে ছয়শ’ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মাত্র দু’সপ্তাহ আগে মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে। তাই এ মামলায় রায় প্রস্তুত করতে সময় লাগছে।”

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এ ঘটনায় প্রথমে রাজধানীর লালবাগ থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা হয়। পরে এসব মামলা নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর করা হয়।
এ মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২৩ বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রথমে ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার অভিযোগপত্র  দাখিল করে। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আরো ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।

এছাড়া বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় প্রথমে ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। পরে আরো ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। দুই মামলার বিচার একইসঙ্গে চলে।

মামলায় ২০ জন আসামি পলাতক রয়েছেন। বিচার চলার সময়ে বিডিআরের ডিএডি রহিমসহ চার আসামির মৃত্যু হয়।  মামলায় আসামিদের মধ্যে বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীও রয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 218 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen