সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাকে তার জন্মস্থান ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের কুনু গ্রামে আজ রোববার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
ম্যান্ডেলার শেষকৃত্যে স্বজন, জাতীয় নেতা, বিদেশি অতিথিসহ প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ অংশ নেবেন। এই মহান নেতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটুও শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
১৯১৮ সালে কুনুতে খোসা সম্প্রদায়ে জন্ম নিয়েছিলেন ম্যান্ডেলা। সেই গোত্রের প্রথাগত রীতিতেই তাঁর শেষ শয্যা পাতা হবে।
গতকাল শনিবার ম্যান্ডেলা মরদেহ পৌঁছে কুনুতে। এর আগে প্রিটোরিয়ায় শেষবিদায় জানিয়েছে ম্যান্ডেলার দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)।
প্রিটোরিয়া থেকে মরদেহ ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের কুনুতে নেওয়ার আগে গতকাল বিমানবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ক্ষমতাসীন দল এএনসি। ২৭ বছরের কারাবাস শেষে ১৯৯০ সালে মুক্তির পর ১৯৯১ সালে এই দলের প্রধান নির্বাচিত হন নেলসন ম্যান্ডেলা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, সামরিক ও ঐতিহ্যগত আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ম্যান্ডেলাকে চিরবিশ্রামে শায়িত করা হবে।
প্রিটোরিয়ার বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এএনসির নেতা ও দেশের প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। এ ছাড়া ছিলেন ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল ও সাবেক স্ত্রী উইনি ম্যান্ডেলাসহ এএনসির নেতা-কর্মীরা।
প্রিটোরিয়ার অনুষ্ঠান শেষে ম্যান্ডেলার মরদেহ সামরিক বিমানে করে নেওয়া হয় ইস্টার্ন কেপের এমথাথা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে সামরিক বহরসহকারে মরদেহ নেওয়া হয় কুনু গ্রামে। খোসা সম্প্রদায়ের প্রথা অনুযায়ী গতকাল রাতভর সেখানে শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা চলে। আজ স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে শুরু হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার শেষ পর্ব। এই অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লসসহ বিদেশি অনেক অতিথি থাকছেন। এরপর পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ম্যান্ডেলাকে সমাহিত করা হবে কুনু গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হয় গত মঙ্গলবার জোহানেসবার্গে। সেখানকার এফএনবি স্টেডিয়ামে আয়োজিত স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রায় ১০০টি দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধানসহ সারা বিশ্বের বহু বিশিষ্টজন। সাধারণ অনুরাগীরা তো ছিলেনই। প্রায় এক লাখ ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটির প্রায় পুরোটা ভরে গিয়েছিল। এরপর ম্যান্ডেলার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য গত বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার তাঁর মরদেহ রাখা হয় রাজধানী প্রিটোরিয়ার ইউনিয়ন বিল্ডিংয়ে।
গত ৫ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সময় রাত আটটা ৫০ মিনিটে জোহানেসবার্গের নিজ বাড়িতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাদিবা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর চার মাস ১৭ দিন। এই মহান নেতার মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।