সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। ক্ষোভ আর অভিমান নিয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অবস্থা “সখী তুমি কার” মত। এখানে কোন সমন্বয় নেই, নেই কোন নীতিমালা। কোন কাজ করতে গেলে পদে পদে বাঁধা আসে। এখানে ভুমি নিয়ে কাজ করা যায় না, ভুমি নিয়ে কাজ করতে গেলে হয় জেলা পরিষদ, না হয় আঞ্চলিক পরিষদ না হয় অন্য কোন কর্তৃপক্ষ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি আইন ব্যবস্থাপনা আইনে নীতিমালা থাকা প্রয়োজন।
এইখানে কে কর্তৃপক্ষ আর কে কর্তৃপক্ষ না, এটা নিয়েও অনেক সমস্যা হয়ে যায়। যদি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে একটি রাস্তা নির্মাণ করতে গেলে হয় আঞ্চলিক পরিষদ, হয় জেলা পরিষদ, আর না হয় ভূমি কমিশনসহ কারো না কারো এখানে হস্তক্ষেপ থাকে। ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য সারা বাংলাদেশে প্রচলিত নীতিমালা রয়েছে। নতুন নীতিমালার প্রয়োজন নাই। কিন্তু সেই নীতিমালা দিয়ে আমরা কাজ করতে পারি না। নতুন নীতিমালা করতে গেলে এই কর্তৃপক্ষ, সেই কর্তৃপক্ষ চলে আসবে। তাই বিষয়টি নিয়ে দ্রুত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন,পার্বত্য অঞ্চলের জন্য একটি ভূমি কমিশন করা হয়েছে। কিন্তু এই কমিশন সক্রিয় না। কোন কাজই হচ্ছে না পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি কমিশন আইন ব্যবস্থাপনা সঠিক না করা পর্যন্ত এই অঞ্চলে শান্তি ফিরে আসবে না। ভূমি কমিশন আইন ব্যবস্থাপনা সঠিক না করতে পারলে এখানে বনায়নও করা যাবে না বিভিন্ন মহলের বাঁধার কারনে।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্প্রতি রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের কারণ অনুসন্ধান ও পরিবেশগত সার্বিক সমীক্ষা কমিটির সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান আরো বলেন, রাঙামাটিতে ১৩জুন পাহাড় ধব্বসের পর আমরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করেছি দুর্যোগ কাটাতে। কোন রকম বিদ্যুৎ ও সড়ক ব্যবস্থা সচল হলে আমরা দেখি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সমন্বয় না করে নিজেদের মত কাজ করছে। কোথায় কি হচ্ছে বা হচ্ছে না আমরা কিছু জানি না। ভুমি ধব্বসের পর আমরা চেষ্টা করেছি ক্ষতিগ্রস্তদের পুর্নবাসন করতে কিন্তু বন্যা ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের মনোযোগ সেদিকে থাকায় আমরা এগোতে পারিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান আরো বলেন, ১৩জুন চট্টগ্রাম বিভাগের আবহাওয়া অধিদপ্তর আবহাওয়া বার্তায় কক্সবাজারসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সর্তক সংকেত দিলেও পার্বত্য এলাকা রাঙামাটিতে ভারি বৃষ্টির কোন কোন সর্তক সংকেত দেয়নি। যদি পূর্বে থেকে সর্তক সংকেত দেওয়া হতো তাহলে এতগুলো মানুষ মারা যেত না। আবহাওয়ার পূর্ব সংকেত পেলে তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হতো।
তিনি আরো বলেন, রাঙামাটি চট্টগ্রাম সড়কে যে সব বালু মাটি দিয়ে গাছের পাইলিং করা হচ্ছে তা অযথা ব্যয় করা হয়েছে। এগুলো ক্ষণিকের জন্য এসব করে এই সড়ককে টিকিয়ে রাখা যাবে না। এ সড়ক টিকাতে হলে রাস্তার দু’পার্শ্বে আর সিসি ওয়াল দিয়ে ড্রেন করে তা নির্মাণ করতে হবে। আমরা সবাই মিলে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করি তা হলে অল্প দিনে রাঙামাটির চেহারা বদলাতে সময় লাগবে না।