শিরোনামঃ

পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, খুন, চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে কাল রাঙামাটিতে মহাসমাবেশ

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পাবত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, প্রতিনিয়ত সন্ত্রাস চাঁদাবাজি,অপহরণ, খুন, গুম এবং হুমকি ধামকি বন্ধসহ সকল প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও নৈরাজ্য বন্ধের প্রতিবাদে আওয়ামীলীগসহ কয়েকটি সংগঠনের সমন্বয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির ব্যানারে রাঙামাটিতে রোববার বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১৯৯৭ সনের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর দ্বিতীয়বারের মত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্ষমতসীনদল আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে নাগরিক সমাজ সমাবেশ করবে। সমাবেশ সফল করতে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে লিফলেট ও সভা করছে নাগরিক কমিটি। সকাল ১০টায় রাঙামাটি পৌরসভায় জমায়েত হয়ে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নিউ মার্কেট চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৯৭ সনের ২রা ডিসেম্বর সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করলেও পাহাড়ে শান্তি আসেনি। একটি সশস্ত্র গ্রুপের পরিবর্তে চুক্তির পর আরো ৪টি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ জন্ম নেয়। পাহাড়ী বাঙ্গালী দাঙ্গার পাশাপাশি চলে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত। ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে হাজারের কাছাকাছি পাহাড়ী নিহত হয়। আহত, গুম, অপহরন হয় অসংখ্য পাহাড়ী বাঙ্গালী। শান্তি চুক্তির পরও পাহাড়ে শান্তি আসেনি। ২০১৪ সনের ৫ জানুয়ারী বিএনপি বিহীন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান সে সময়কার পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। অভিযোগ উঠে অস্ত্রের মুখে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের ভোট দিতে দেয়া হয়নি। গত বছরের ডিসেম্বরে রাঙামাটিতে আওয়ামীলীগের এক নেতাকে গুলি করে হত্যা, ২জনকে কুপিয়ে আহত ও আরেকজনকে গুলি করে আহত করে দুবৃর্ত্তরা। এঘটনার জন্য আওয়ামীলীগ আঞ্চলিক দল জেএসএস দায়ী করেছে। একই সময়ে ইউপিডিএফ দুই গ্রুপের আধিপত্যে বিস্তারের লড়াইয়ে ৫জন মারা যায়। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে চলছে নিরব চাদাবাজি, সবকিছু মিলিয়ে এবার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, প্রতিনিয়ত সন্ত্রাস চাঁদাবাজি,অপহরণ, খুন, গুম এবং হুমকি ধামকি বন্ধসহ সকল প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও নৈরাজ্য বন্ধের প্রতিবাদে ক্ষমতসীনদল আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে সচেতন নাগরিক সমাজ মাঠে নামছে। সামনে নির্বাচন সেটিকে সামনে রেখে সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামীলীগ।

সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসীদের আক্রমনে আহত বিলাইছড়ি আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রাসেল মার্মা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ীদের অবস্থা ভয়াবহ, পাহাড়ীরা আওয়ামীলীগ করতে পারবে না আওয়ামলীগ থেকে পদ ত্যাগ করতে হবে। আমাদের দোষ আওয়ামীলীগ করি। আর অন্য কোনো দোষ নাই আওয়ামীলীগ করার কারনে আমার উপর হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা।
প্রাণভয়ে অনেকে পদত্যাগ করলেও তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ আছে। তিনি আরো বলেন, আঞ্চলিক দলগুলোর চাপে রাঙামাটির প্রত্যন্ত এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের আর্থিক অবস্থা খারাপ। তারা যেন ব্যবসা বাণিজ্য কিছু করতে না পারে সে জন্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। আওয়ামীলীগ করার কারনে এখন আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর বলেছেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের নেতা কর্মীদের খুন, হামলা করা হচ্ছে। ব্যবসা বাণিজ্য বাঁধা দেয়া হচ্ছে তাই সন্ত্রাস ও চাদাবাজির বিরুদ্ধে তাদের মহাসমাবেশ ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র, চাদাবাজি ক্রমবর্ধমান বাড়ছে, এটা চলমান প্রক্রিয়া যতক্ষন পর্যন্ত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হবে না ততদিন পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। যারা রাজনীতির নামে পাহাড়ে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাস চাঁদাবাজি করছে তাদের প্রতিরোধ করতে সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মানুষ অস্ত্রের কাছে আর জিম্মি থাকতে চায় না। পাহাড়ে যতক্ষণ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে সন্ত্রাস নির্মূল না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথে সন্ত্রাস বিরোধ আন্দোলন চলবে। এর অংশ হিসেবে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান তীব্র করার দাবীতে রোববার রাঙামাটিতে সন্ত্রাস বিরোধী মহা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 263 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen