সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি বিলাইছড়িতে দুই কিশোরীর উপর নির্যাতনের ঘটনা কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি রাজনৈতিক দল মিথ্যা প্রচারনা চালিয়ে পার্বত্য এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ঘটনার সাথে নিরাপত্তাবাহিনী জড়িত নয়, মুখোশধারীরা নির্যাতনের সাথে জড়িত।
আজ বুধবার দুপুরে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবে বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতিত কিশোরীর বাবা উ সুই শিং মারা, মা সুই ক্রা চিং মারমা ও ভাই অংসিং থোয়াই মারমাসহ তাদের অভিভাবক রাসেল মারমা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২১ জানুয়ারী একদল স্থানীয় অজ্ঞাত যুবক ফারুয়ার ওড়াছড়ি গ্রামে বসত ঘরে ঢুকে দুই কিশোরীকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। কিন্তু এই ঘটনাকে পুঁজি করে নিরাপত্তা বাহিনীকে জড়িয়ে স্থানীয় একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যা আদৌ সত্য নয়। এতে পরিবারের মান মর্যাদা মারাত্মক ভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও দাবী করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে, ষড়যন্ত্রকারীদের মিথ্যা প্ররোচনায় জনসাধারণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবারটি তার ঘনিষ্ট আত্মীয় বলে উল্লেখ করে রাসেল মারমা বলেন, ওই দুই মেয়ের বিষয়ে সমাজে কিছু রটনা ছড়িয়ে পড়ায় আমরা ব্রিবতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছি। তারা ধর্ষিত হয়নি। দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে নির্যাতন করেছে। আসলে বলতে দ্বিধা নেই, আমরা একটি চক্রের খপ্পড়ে পড়ে দিশেহারা বোধ করছি। চক্রটি আমাদের পরিবার নিয়ে রাজনীতির কঠিন খেলায় মেতে ওঠার চেষ্টা করছে, যা আমাদের পরিবার বিশেষ করে দুই নিষ্পাপ কিশোরীর মান-ইজ্জত ও ভবিষ্যৎ জড়িত।
ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে রাসেল মারমা বলেন, মূলত ঘটনাটি ছিল ওইদিন নিরাপত্তাবাহিনীর একটি টহল দল ওই এলাকায় সরকারি কাজে যায়। কাজ শেষে নিরাপত্তাবাহিনীর টহল দল ফিরে যায়। তার কিছুক্ষণ পর উসৈচিং মারমা ও সুইক্রাচিং মারমা তাদের দুই কিশোরী মেয়ে ও এক শিশুসন্তানকে সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে রেখে সাংসারিক কাজে বাইরে চলে যান। সেই সময়ে স্থানীয় একদল যুবক কে বা কারা ঘরে ঢুকে দুই মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালায়, যা দূর থেকে দেখলেও প্রাণভয়ে কাছে যাওয়ার সাহস পায়নি তাদের বাবা, মা। তবে সে সময় কোনো সরকারি পোশাকধারী লোকজনকে দেখতে পাননি বলে জানান তারা। কিন্তু ওই দুই কিশোরীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর একটি চক্র ঘটনাটি নিয়ে পানি ঘোলা করে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। অথচ যার সঙ্গে পরিবারটির কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহবান জানান, রাসেল মারমা।
এদিকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই নির্যাতিত কিশোরীকে বুধবার হাসপাতাল দেখতে গেছেন চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের সহধর্মিনী রাণী য়েন য়েন রায়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, সদস্য মো. মুছা মাতব্বর এবং স্থানীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির নেত্রীরা।