সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রয়ে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ও বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স নেয়া বাধ্যতামুলক,কিন্তুু এই মানা হচ্ছে না বান্দরবানে। নিরাপত্তামুলক কোন ব্যবস্থা ছাড়াই বান্দরবানে চলছে সিলিন্ডার গ্যাস বেচা কেনা।
জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত এলপিজি গ্যাস অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ, তাই এর বেচাকেনা করতে ট্রেড লাইসেন্সের সাথে সাথে নিতে হয় বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স। গ্যাস সংরক্ষণে নিতে হয় বাড়তি সর্তকর্তা। কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বান্দরবান শহরের অলিতে গলিতে মুদিদোকান সহ যেনতেন ভাবে বিক্রি হচ্ছে এলপিজি গ্যাস। ক্রেতাদের ন্যায্যমুল্যে গ্যাস ক্রয়ের জন্য দোকানে প্রদর্শন থাকার কথা মুল্য তালিকা ,কিন্তু বেশিরভাগ দোকানে মুল্য তালিকার কোন অস্তিত্ব নেই আর সেই সাথে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ও কোন হদিস নেই। আর বেশিরভাগ দোকানে নেই ট্রেড ও ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স।
বান্দরবানের পূরবী বোডিং সংলগ্ন মেসার্স স্বাদ ফুড দোকানের গ্যাস বিক্রেতা মো:মোস্তাক এর দোকান পরিদর্শনে এলপিজি গ্যাস বিক্রয়ের কোন মূল্য তালিকা দেখা যায়নি এবং গ্রাহকদের অভিযোগ অনুযায়ী জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ বান্দরবানের সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে যার কাছ থেকে যে রকম মূল্য নেয়া যায় সেরকম মূল্য নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ব্যবসা করছে এই দোকানদার। মেসার্স স্বাদ ফুড দোকানের সত্বাধিকার এই মোস্তাকের নামে একই লাইসেন্স দিয়ে কয়েকটি দোকান পরিচালনা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের।
বান্দরবানের বালাঘাটার সোহেল এন্ড ফেন্ডস ট্রেডাসে দেখা যায় নিরাপত্তামুলক ফায়ার এক্সটুমসার বোতলের মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই , কিন্তুু দোকানদারের এই নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নেই হুুশ।
অতি মুনাফার লোভে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যাকে তাকেই বিক্রির জন্য সরবরাহ করছে,এতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আর নিরাপত্তমুলক কোন ব্যাবস্থা না থাকায় যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হওয়ার আশংকায় স্থানীয়রা।
বান্দরবান বাজারের বাসিন্দা কামাল জানান, পর্যটন শহর হিসেবে বান্দরবানের সুনাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কিšু‘ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বান্দরবানের সৌন্দর্য্য নষ্ট করছে আর রাস্তার পাশে যেখানে সেখানে এলপিজি গ্যাসের বোতল রেখে যানজট সৃষ্টি করছে। বান্দরবান কালেক্টর স্কুল এন্ড কলেজের এক অভিভাবক আব্দুল রহমান জানান,রাস্তার পাশে যেখানে সেখানে গ্যাসের বোতল রাখায় মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। পথচারীদের পাশাপাশি শিশুদের বিদ্যালয়ে আনাগোনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রয়েছে এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রেতাদের নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্ব,কিন্তুু এই বিষয়ে জানার জন্য বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( সহকারী পরিচালক) মো:ইকবাল হোসেনের সাথে দেখা করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কিছু বলতে রাজী হননি। অভিযোগ রয়েছে বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কিছু অসাধু কর্মকর্র্তা বেশিরভাগ দোকানে নিরাপত্তামুলক ফায়ার এক্সটুমসার বোতল বিক্রি করে টাকা উপার্জন করে দায়িত্ব শেষ করছে আর সাধারণ মানুষদের প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হচ্ছে চরম নিরাপত্তাহীনতায়।
বান্দরবান পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রিয়তোষ চৌধুরী বলেন,যে কোন দ্রব্য বিক্রির জন্য মূল্য তালিকা প্রদর্শন বাধ্যতামূলক আর অসাধু ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে পৌরসভার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে যেনতেনভাবে বিক্রি করা এ ধরনের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। তিনি জানান,বান্দরবানে ব্যাবসারত সকল এলপিজি গ্যাস বিক্রেতাদের নোটিশ প্রদান করা হবে এবং যারা আইন অমান্য করে ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় হবে।
বড় যে কোন দুর্ঘটনা এড়াতে এবং জীবন ও সম্পদ রক্ষায় শুধু আশ্বাস নয়, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সবসময় অভিযান পরিচালনা করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।