সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। চাঞ্চল্যকর বিডিআর বিদ্রোহে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। নৃশংস এ হত্যাকা-ের ৪ বছর ৮ মাস পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। গত ৩১ অক্টোবর রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে রায় প্রস্তুত না হওয়ায় পরবর্তীতে ৫ নভেম্বর ফের দিন ধার্য করা হয়।
এর আগে ২০ অক্টোবর আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন পুরনো ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন স্থানে স্থাপিত অস্থায়ী মহানগর তৃতীয় দায়রা জজ ড. আক্তারুজ্জামান। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেয়া অভিযোগপত্রে এ মামলায় সাক্ষী ছিলেন এক হাজার ২৭৫ জন। তাদের মধ্যে ৬৫৪ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
পিলখানা হত্যা মামলায় আসামির সংখ্যা ৮৫০ জন। তাদের মধ্যে পোশাকধারী বিডিআর সদস্য ৭৮২ জন। বিডিআরে কর্মরত বেসামরিক সদস্য ২৩ জন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহীদের হাতে খুন হন ৫৭ জন সেনা-কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পিলখানা হত্যা মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা ছিল এক হাজার দুই শতাধিক। এই সাক্ষীদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দসহ ৬৫৪ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণকারী ২৭ জন তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা ৪৫৮ জন আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছেন বলে আদালতকে জানান।
প্রসঙ্গত, পিলখানায় হত্যা, নির্যাতন, লুটপাট, অগি্নসংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে ডিএমপির নিউ মার্কেট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি ২০১০ সালের ১২ জুলাই ৮২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। পরে সম্পূরক চার্জশিটে আরো ২৬ জনকে যোগ করা হয়। ৮৫০ জন আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম চলে। এর মধ্যে ২০ জন পলাতক রয়েছেন। চারজন মারা গেছেন। আসামিদের মধ্যে চারজন মহিলাসহ ২৩ জন বিডিআর-বহির্ভূত লোক। তাদের মধ্যে বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু এবং আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীও রয়েছেন।
গত বছরের ২০ অক্টোবর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার শেষ হয়। সদর রাইফেলস ব্যাটালিয়নের ৭২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়ার মধ্যদিয়ে বিদ্রোহ মামলার বিচার শেষ হয়।
বিদ্রোহের ঘটনায় ১১টি বিশেষ আদালতে ৬ হাজার ৪৬ জওয়ানকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। তাদের মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে ৫ হাজার ৯২৬ জনের। খালাস পেয়েছেন ১১৫ জন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারুক আহম্মেদ জানান, হত্যার ঘটনা সত্য। একে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তবে কোন কোন আসামি হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এটা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তার মক্কেলরা বেকসুর খালাস পাবেন বলে তিনি আশা করেন।