সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। শত শত মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে রাঙামাটি কেন্দ্রীয় কবরস্থানে সামনের খালি জায়গায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন রাঙামাটির প্রবীন রাজনীতিবিদ ও সমাজ সেবক হাজী ফজলুর রহমান। তাঁর অন্তিম ইচ্ছে অনুয়ায়ী তাঁর এই কবরস্থানের স্থান নির্ধারন করা হয়। এর আগে দুপুর ২ টায় রাঙামাটি পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং মাঠ ঈদ গাহ ময়দানে মরহুম হাজী ফজলুর রহমানের নামাযে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকতা, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন পেশার কয়েক শ মানুষ এই জানাজায় অংশ নেন।
নামাযে জানাজায় ঈমামতি করেন রাঙামাটি মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ আলহাজ্ব নূরুল আলম হেজাজী । নামায শেষে মোনাযাত করেন রাঙ্গামাটি রিজার্ভ বাজার জামে মসজিদের পেশ ঈমাম ও রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম নঈমী।
মরহুম হাজী ফজলুর রহমানের নামায়ে জানাজায় রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামাল, রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক হাজী মোঃ মূছা মাতব্বর, পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য-প্রশাসন, নূরুল আলম চৌধুরী, রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম ভুট্টো, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইফ উদ্দিন আহমেদ, জেলা বিএনপির সম্পাদক মোঃ শাহ আলম, জেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল আলীম, রাঙামাটি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী নজরুল ইসলাম, দৈনিক গিরিদর্পন সম্পাদক এ কে এম মকছুদ আহমেদ, ঢাকা বিএসএমএম ইউ এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ মোঃ সাজ্জাদ হায়দার সহ মরহুমের আত্বীয় স্বজন ও শুভাকাংখীগন অংশ নেন। জানাযায় মরহুম হাজী ফজলুর রহমানের পরিবারের পক্ষে তাঁ জৈষ্ঠ্য সন্তান হারুনুর রশীদ তাঁ পিতার জন্য সকলের কাছে দোওয়া কামনা করেন।
দুপুর পৌনে ১ টার সময় মরহুম হাজী ফজলুর রহমানের মরদেহ জানাজার উদ্দেম্যে রিজার্ভ বাজারের চেঙ্গী মুখস্থ বাসভবন থেকে বের করে আনা হয়। এই সময় মরহুমের স্ত্রী, পুত্র, কণ্যা ও নিকটাত্বায়ীদের কান্নায় পুরো এলাকায় শোকাবহ পরিবশের সৃষ্ঠি হয়। চোখের জলে তাঁর প্রিয়জনেরা তাঁকে চির বিদায় জানান। পরে তাঁর লাশ রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার জামে মসজিদের বারান্দায় এনে রাখা হয়। দীর্ঘ দিন জীবদ্দশায় যিনি প্রতি ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে আদায় করার জন্য যেখানে ছুটে আসছেন সেই মসজিদেই তিনি শেষবারের মতো এসেছিলেন খাটিয়ায় চরে। মসজিদের প্রথম সারিতে ঈমাম সাহেবের পিছনে দাড়িয়ে যিনি নামায আদায় করতেন সেই হাজী ফজলুর রহমানের নিথর দেহকে পিছনে রেখে এদিন মসজিদের মুসল্লীগন জোহরের নামায আদায় করেন। পরে সেখান থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লী তাঁর লাশ জানাজার জন্য রাঙামাটি পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং ঈদগাহ ময়দানে আনা হয়।
এর আগে বুধবার রাত ৮ টা ৪০ মিনিটের সময় মরহুম হাজী ফজলুর রহমানের মরদেহ চট্রগ্রাম থেকে এ্যাম্বুলেন্স করে তাঁর রিজার্ভবাজারস্থ বাসভবনে নিয়ে আসা হয়।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার আমেনা বেগম, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মোঃ মূছা মাতব্বর, পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম ভুট্টো, জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, সম্পাদক মোঃ শাহ আলম, লেঃকঃ(অব) মনিষ দেওয়ান, আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোঃ কামাল উদ্দিন, জাতীয় পার্টির সভাপতি হারুনুর রশীদ মাতব্বর, জামায়াতের আমীর আব্দূর আলীম, পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মাওলানা মোঃ শাহজাহান, প্রাক্তন পৌর চেয়ার কাজী নজরুল ইসলাম, দৈনিক গিরিদর্পন সম্পাদক এ কে এম মকছুদ আহমেদ, পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমান সহ জেলা যুবলীগ এর সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী, যুবদল সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল, স্বেচ্ছা সেবক দলের সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এই সময় মরহুম হাজী ফজলুর রহমানকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। । এছাড়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠন , বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠন, জাতীয় পার্টি, এলডিপি, সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ হতে, রাঙামাটি প্রেসক্লাব, রাঙামাটি জেলা ক্রীড়াসংস্থা, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, করাত কল শ্রমিক সংগঠন, মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী, রিজার্ভ বাজার ও তবলছড়ি ব্যবসায়ী কল্যান সমিতি সহ বিভিন্ন সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে মরহুম হাজী ফজলুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানান।
এদিকে লংগদু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ তোফাজ্জল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারেক এক শোক বার্তায় পার্বত্য রাঙমাটির বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব হাজ্বী ফজলুর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, এই প্রবীন নেতার মৃত্যুতে জেলা বিএনপি পরিবার একজন সহসী যোদ্ধা ও অভিভাককে হারাল।
উল্লেখ্য হাজী ফজলুর রহমান ৭৮ বছর বয়সে ১৯ নভেম্বর বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে চট্রগ্রাম মেডিকেল সেন্টারে ইন্তেকাল করেন।