সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি জেলার জনবহুল উপজেলা মাটিরাঙ্গায় বছরের পর বছর চিকিৎসক সংকটে নাকাল সরকারি স্বাস্থ্যসেবার পরিধি। তার ওপর চক্ষু চিকিৎসার সুবিধা তো স্বপ্নেরও অতীত। সে কারণে চোখের চিকিৎসার জন্য মানুষকে অনেক টাকা ব্যয় করে ছুটতে হয়, পাশের জেলা চট্টগ্রাম এবং ফেনী-কুমিল্লায়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সেনাবাহিনীর মাটিরাঙ্গা জোনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু শিবির আয়োজনের ফলে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন এলাকাবাসী। সেনাবাহিনীর আহ্বানে কুমিল্লার ‘জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি ও হাসপাতাল’ এই উদ্যোগে স্বত:স্ফূর্ত সাড়া দিচ্ছে। আর তাতে চোখের যত্ম এবং সময় মতো চিকিৎসা গ্রহণে সচেতনতা বাড়ছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের।
একটি পৌরসভা এবং সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৪৯৫.৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পাহাড়ি উপজেলা মাটিরাঙায় দেড় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর অবস্থা যেমন নাজুক তেমনি বছরের অধিকাংশ সময় চিকিৎসক সংকটে থাকে খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রও। ফলে দূরের ও দূর্গম এলাকার দরিদ্র-প্রান্তিক মানুষের চিকিৎসা ভোগান্তি লেগেই থাকে। তাই রোববার সকালে মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিনামূল্যের চক্ষু শিবিরে রোগীর ঢল নামে বাঁধ ভাঙ্গা ¯্রােতের মতো।
মাটিরাঙ্গার মতো প্রত্যন্ত পাহাড়ি জনপদে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রোগীদের ব্যাপক সাড়া দেখে সন্তুষ্ট আয়োজকরা। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে বার বার সেবা দেয়ার কথা জানান।
কুমিল্লাস্থ ‘জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি ও হাসপাতাল’ এর স্পেশাল ম্যানেজার এবং প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম-সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন সিদ্দিকী জানান, বছর জুড়েই দেশের নানা প্রান্তে জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি’ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডাকে সাড়া দিয়ে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা এবং অপারেশন সেবা দিয়ে থাকে। মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ সেবা, প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র দেয়ার পাশাপাশি ছোট-খাটো অপারেশন সারানো হয়। আর যেসব অপারেশন আবাসিক পর্যায়ের সেসব রোগীদেরকে কুমিল্লায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শেষে নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়।
রোববারের তৃতীয় বারের বিনামূল্যের চক্ষু সেবা আয়োজনে মধ্য দুপুর পর্যন্ত কয়েক হাজার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নানা বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু চোখের চিকিৎসা নিয়েছে। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ানো রোগীর সারি দেখেই বোঝা গেছে মাটিরাঙ্গার মানুষ কতোটা চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত। কুমিল্লাস্থ ‘জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি’র দুইজন বিশেষজ্ঞ, চারজন চিকিৎসক এবং একজন সার্জন দিনভর কয়েক হাজার রোগীকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়েছেন। তাই এই আয়োজনের ধারাবাহিকতা দেখতে চান এলাকাবাসী।