সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান।
তিন পার্বত্যজেলাসহ দেশের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রন প্রকল্পের আওতায় ম্যালেরিয়া পরীক্ষা, এ রোগে আক্রান্ত জটিল রোগী সনাক্তকরণ ও বিশেষ চিকিৎসা প্রদান বিষয়ক কার্যক্রম গত সেপ্টেম্বর থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে বান্দরবানে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের প্রায় ৫শ কোটি টাকার ৮ বছর মেয়াদী ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রন মহাপ্রকল্পের অধীনে বান্দরবান সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গনে দোতলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক ভবনে ম্যালেরিয়া সনাক্তকরণ ও বিশেষ চিকিৎসা বিষয়ক একটি প্রকল্প চালু করা হয় ২০১০ সালে। চালুর পর থেকে জেলার দুর্গম অঞ্চল হতে জটিল ম্যালেরিয়া রোগীরা এ প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিতে আসত। কিন্তু প্রকল্পটি বেশ তোড়জোড় নিয়ে কার্যক্রম চালুর ২ বছরের মাথায় গত সেপ্টেম্বর মাসে বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্ধ হওয়ার পর এখন ভবনটি ব্যবহার হচ্ছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে “নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম”- ওয়ানষ্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি) নামক একটি প্রকল্পের কাজে।
এ ভবনে দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি টিম ম্যালেরিয়া আক্রান্ত জটিল রোগীদের রক্ত-কাঁচ পরীক্ষা, রোগ সনাক্তকরণ এবং রোগীদের বিশেষ চিকিৎসা প্রদানের কাজ চালিয়ে আসছিল। কিন্তু বান্দরবানসহ সারা দেশের ১৩ জেলায় ৮ বছর মেয়াদী ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রন মহাপ্রকল্পের কার্যক্রমের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিশেষ চিকিৎসা প্রদান কার্যক্রম আকস্মিকভাবে বন্ধ হওয়ায় এ রোগের জটিল রোগীরা সংকটে পড়েছেন। ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রন কর্মসূচীর মেয়াদকাল শেষ হওয়ার কথা রয়েছে আগামী ২০১৫ সালে।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রনে গবেষনা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে অনেকবার দাবি জানানো হয়েছে কিন্তু ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে অতিঝুঁকিপূর্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত বান্দরবানে এখনো কোন স্থায়ী গবেষনা কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আশা করি এ ব্যাপারে সরকার আশু সিদ্বান্ত নেবে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবান ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হওয়া সত্বেও এখানে ম্যালেরিয়া রোগ সনাক্তকরনে কোন স্থায়ী প্রতিষ্ঠান বা গবেষনাগার স্থাপন না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ মংতেঝ বলেন, কর্তৃপক্ষ জনবল সংকটের কথা বলে প্রকল্পটি বান্দরবান থেকে গুটিয়ে নিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অবার হয়তো এ প্রকল্পটি চালু হতেও পারে। গুরুত্বপুর্ন এ প্রকল্পটির জন্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সাথে আমাদের যোগাযোগ আছে।