সিএইচটি টুডে ডট কম,বান্দরবান। বান্দরবানের বৌদ্ধ উপসনালয়গুলোতে মহাসমারোহে পালিত হয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান। এসময় পূণ্য লাভের আশায় শত শত দায়ক দায়িকারা বৌদ্ব বিহারগুলোতে বর্ষাবাস পালনকারী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর (কাপড়) দান করেছে এ উৎসবে।
কঠিন চীবর দান, বৌদ্ধ ধর্মের একটি ধর্মীয় আচার, ও উৎসব, যা সাধারণত বাংলা চন্দ্রপঞ্জিকা অনুযায়ী প্রবারণা পূর্ণিমা (ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা) পালনের এক মাসের মধ্যে যেকোনো সুবিধাজনক সময়ে পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে মূলত বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে ত্রি-চীবর নামে বিশেষ পোষাক দান করা হয়। ধর্মাবলম্বীগণ পূণ্যের আশায় প্রতি বছর এভাবে চীবরসহ ভিক্ষুদের অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রীও দান করে থাকেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বিদের বিশ্বাস হাজারো দানের চাইতে উত্তম এই চীবর দান।
সোমবার সকালে বান্দরবান রাজার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় চীবর দানোৎসবে অংশ নেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক কে.এম তারিকুল ইসলাম, বান্দরবান পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্য প্রমুখ। এসময় চীবর সহ ভিক্ষুদের অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সামগ্রী দান করেন অতিথিবৃন্দ।
এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বান্দরবানের ক্যাংগুলো সাজে সাজানো হয়েছে বাহারি সব কারু শৈলীতে। বিভিন্ন জায়গায় চীবর দান উৎসব উপলক্ষে চলছে ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আলোচনা সভা। পুরো নভেম্বর মাস জুড়ে চলবে এ উৎসব।
শহরের রাজগুরু বিহার, করুনাপুর বৌদ্ধ বিহার, রামজাদী ও রোয়াংছড়ি বাস স্টেশন বৌদ্ধ অনাথালয় মন্দিরে কঠিন চীবর দান উৎসব। এতে বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রান নর-নারী অংশ নেয় ।
উল্লেখ্য এ অনুষ্ঠান বান্দরবানের রাজবন বিহার-কে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ত্রি-চীবর তৈরির জন্য অংশ নেয় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়। ত্রি-চীবর তৈরির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন রাজমাতা। কঠোর ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে এর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ত্রি-চীবর তৈরির পর তা রাজা তুলে দেন রাজবন বিহারের অধ্যক্ষের হাতে। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় তিন মাসব্যাপী কঠোর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন। বিহার-প্রাঙ্গনে বসে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন লোকজ মেলা।