শিরোনামঃ

প্রতিটি স্তরে পাহাড়ি-বাঙ্গালী সমতা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার

পাহাড়ে ইউএনডিপি’র আরো ৭ বছর মেয়াদী ২৫০ মিলিয়ন ডলারের নতুন প্রকল্প

সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। নানা তর্ক বির্তক রয়েছে দাতা সংস্থার ইউএনডিপির কার্যক্রম নিয়ে। পার্বত্য চুক্তির পর উন্নয়নের কথা বলে বিগত ২০০৩ সালে পার্বত্য তিন জেলায় যখন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি)-এর বিশাল রাজকীয় কর্মযজ্ঞ শুরু হয়, তখন logo-undp--থেকেই সংস্থাটির স্বচছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে সমালোচনার শুরু। প্রথমদিকে বিষয়টি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও জনসংহতি সমিতির সাথে সীমাবদ্ধ থাকলেও সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নানা প্রতিপক্ষ।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ইউএনডিপি’র সবকটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগামী বছর থেকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার অর্থায়নে নতুন করে ৭ বছর মেয়াদী ২৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি বিশালাকার উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।
কিন্তু প্রকল্পের ক্ষেত্রে অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পার্বত্যাঞ্চলের জন্য বিদেশী উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য নতুন কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছে। সে কৌশল অনুযায়ী এখন থেকে বিদেশী কোনো উন্নয়ন সংস্থা পার্বত্যাঞ্চলে সরাসরি কোন প্রকল্পে অর্থায়ন, পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করতে পারবে না। এখন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ডের পরিকল্পনা, পরিচালনা এবং বাস্তবায়ন হবে সরকারী লাইন ডিপার্টেেন্টর মাধ্যমেই। এবং তত্ত্বাবধানও করবে বাংলাদেশ সরকার।
২০১২ সালে ‘ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ’ প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ৩৫ শতাংশ অর্থ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ইউএনডিপি কর্র্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেও আর্ন্তজাতিক খ্যাতিমান সংস্থাটির উন্নয়ন কর্মকান্ড সব মহলে গ্রহনযোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, অদক্ষ লোকবল নিয়োগের পাশাপাশি কোন কোন সম্প্রদায়কে অবজ্ঞা ও বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠতে থাকে।
দীর্ঘদিন থেকে সরকারের বেশকিছু দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের প্রধানরাও প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশে বিপুল অর্থ অপচয়ের অভিযোগ তুলেন। বিদেশী দাতাদের উদারতার সুযোগে প্রকল্পের কর্মকর্তারা অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছেন।
এসব বিষয়কে আমলে নিয়ে সরকারের কাছে জাতিসংঘের দেয়া ৭ বছর মেয়াদী নতুন প্রকল্পে উন্নয়নে অধিকতার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় সরকারের আরো বেশী মনোযোগ প্রত্যাশা করা হয়। সে লক্ষে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, এনজিও এ্যাফেয়ার্স ব্যুরো’-সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নতুন এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এরিমধ্যে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বৈঠকে পার্বত্যাঞ্চলের জন্য অধিকতর সরকারী কর্তৃত্ব নিশ্চিতে ঐক্যমত প্রকাশ করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পার্বত্য তিন জেলার উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘ ২০২২ সাল পর্যন্ত নতুন প্রকল্পের প্রস্তাব জমা দিয়েছে যা আমাদের কাছে প্রক্রিয়াধীন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গুণগত পরিবর্তনটা হচ্ছে- এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সরকারের হাতে থাকবে। শুধু তাই নয়, নতুন প্রকল্পে সুবিধাভোগী ও প্রকল্প এলাকা নির্ধারণ, লোকবল নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রতিটি স্তরে পাহাড়ি-বাঙ্গালি সমতা নিশ্চিত করবে সরকার।
তিনি আরো বলেন, ব্যবস্থাপনা মানে প্রকল্প বাছাই, পরিচালনা, পর্যালোচনা, পরিবীক্ষণ সব কিছুই এখন থেকে সরকার করবে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন প্রকল্পে স্থায়িত্বশীল জীবিকা, সুশাসন ও সামাজিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে নেয়া হবে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ। সেক্ষেত্রে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী নীতির সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করা হবে।
২৫০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে বেশিরভাগ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সরবরাহ করবে। ইউএনডিপি ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), কানাডা, ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও আরও কয়েকটি দেশ অর্থায়ন করবে। এরমধ্যে ইইউ ২০১৩ সালের মতো এবারও সর্বোচ্চ সাহায্য প্রদান করছে।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 1,890 বার পঠিত হয়েছে


Subscribe to Comments RSS Feed in this post

3 Responses

  1. Pingback: Shobad Almammun

  2. Pingback: Borendra Lal Tripura

  3. Pingback: Nikhil Chowdhury

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen