সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, জনগন ও দেশের গনমানুষের কল্যাণ এবং উন্নয়নের স্বার্থে সরকার আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন। তাই জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও তৃণমূল পর্যায়ের সকলকে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ জেলা তথা দেশের উন্নয়নে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।
বুধবার সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে জেলা উন্নয়ন কমিটির সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, সরকার পাহাড়ের মানুষের কল্যাণ ও শান্তির লক্ষ্যে শান্তিচুক্তি করেছেন। তাই শান্তি ও উন্নয়নে আমাদের সেভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এ জেলায় বসবাসরত সকলের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে পরিষদের প্রতিটি মাসিক ও সমন্বয় সভায় উপস্থিত থেকে জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিজ নিজ এলাকার সমস্যাগুলো উপস্থাপন এবং তা সমাধানে সুপরামর্শ ও মতামত প্রদান করারও আহ্বান জানান তিনি।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আব্দুস সামাদ, রাঙামাটি জেলা হেডম্যান এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি থোয়াই অং মারমা’সহ জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান, কমিটির সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরো বলেন, আইনকে অমান্য করে যারা কাপ্তাই লেকে জাঁক দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস করছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি সভায় মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন ও নৌ পুলিশ প্রসাশনকে অবগত করেন। তিনি বলেন, এতে করে পোনা ধ্বংসের পাশাপাশি নৌ চলাচলে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ জনগনের। তিনি দ্রুততার সাথে প্রশাসনের সমন্বয়ে জাঁক অপসারনের জন্য নির্দেশ দেন।
সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বলেন, পাহাড়ে এখন প্রচুর পরিমানে তামাক চাষ হচ্ছে যেটি একসময় মানব ও পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এখন থেকেই এ বিষয়ে চাষীদের নিরুৎসাহিত করতে হবে এবং এর ক্ষতির দিকগুলো তুলে ধরে সচেতন করতে হবে।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, জেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অন্যান জেলার তুলনায় অনেকাংশে স্বাভাবিক রয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রনে সর্বদা কাজ করছে পুলিশ বিভাগ।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে জেলা খাদ্য ভান্ডারে ৪হাজার ৯শত মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে এবং আগামী মার্চ-এপ্রিল মাসে খাদ্য বান্ধব চাল গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ বেতার এর আঞ্চলিক পরিচালক জানান, প্রতিদিন নিয়মিত সকাল ১১টা হতে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সম্প্রচার কার্যক্রম চলছে। সচেতন বার্তাসহ বিভিন্ন সুপরামর্শ প্রদানে তিনি সকলকে অনুরোধ জানান।
সুগার ক্রপ (চিনি শস্য) রিসার্স ইনষ্টিটিউট এর উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, জেলায় আখ চাষে চাষীদের উদ্বুব্ধকরণে জোর প্রচারনা ও আখ প্রদর্শণী চলছে। এছাড়া কাউখালী ও জুরাছড়ি উপজেলায় ২টি গুড় উৎপাদন যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে।
বিটিভি উপ কেন্দ্রের রক্ষণ প্রকৌশলী বলেন, বর্তমানে বিকাল ৫টা হতে রাত ১১টা পর্যন্ত সিটিভি এর সম্প্রচার কার্যক্রম চলছে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট রাঙামাটি ইউনিটের ইউনিট অফিসার জানান, গত ৩-২৫জানুয়ারী ২০১৭ পর্যন্ত রাঙামাটি ইউনিটের ইকোসেক প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন উপজেলার ৪২৭টি পরিবারকে ১৪টি ব্যাচের মাধ্যমে ২দিনব্যাপী জেলা ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে গবাদী পশু পালমন ও রোগ বালাই দমন বিষয়ক প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে। এঝাড়া ১৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যুব রেড ক্রিসেন্ট দল গঠন ও যুব সদস্যদের জন্য প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নের নিমিত্তে রেজিষ্ট্রি চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাঘাইছড়ি দূরছড়ি বাজারে অড়িœকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের ১শত পরিবারের মধ্যে নগদ ২লক্ষ টাকা সহায়তা প্রদান করা হবে।
ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স এর কর্মকর্তা বলেন, জেলার কাউখালী উপজেলায় নতুন ফায়ার স্টেশনভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে আগামী মাসে এটি উদ্বোধন হবে।
এছাড়া সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগ ও জেলার সমস্যা মতামত ও অন্যান্য কার্যক্রম উপস্থাপন করেন চেয়ারম্যান উপস্থাপিত সমস্যা ও মতামত গুলো গুরুত্বের সাথে আলোচনা করে সমাধানের পরামর্শ এবং পরিষদ হতে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন ।