সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি পার্বত্য জেলার লংগদু উপজেলাধীন করল্যাছড়ি বাজার সংলগ্ন সাঁকোটির উপর ব্রীজ নির্মাণ করা হলে পাল্টে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অর্থনৈতিক অবস্থা। একটি সাকোর অভাবে প্রতিদিন ৪/৫টি গ্রামের কয়েকশ পরিবারের মানুষকে ৫/৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে করল্যাছড়ি বাজারে আসতে হয়। সম্প্রতি সময়ে করল্যাছড়ি বাজারের উত্তর পাশে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হবে এমন গুজব উঠলেও সেটিও হয়নি। দীর্ঘ দিন পরে সম্প্রতি করল্যাছড়ি বাজার এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান সেখানকার স্থানীয় লোকজনদের বাজারের পাশের সাঁকোটির উপর ব্রীজ নির্মাণ করার আশ^াস দেন। কিন্তু তিনি বদলি হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে হতাশা নেমে আসে।
লংগদু ১নং আটরকছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা বলেন,বাজারের পাশে ব্রীজটি নির্মাণ করা হলে গ্রামের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। অনেক জায়গায় এই ব্রীজটির জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু কোথাও কোন সহযোগিতা পাচ্ছিনা। তিনি বলেন,এই ব্রীজটি হলে ডানে আটরকছড়া,উত্তর ইয়ারংছড়ি ও আনসার ক্যাম্প এলাকার মানুষ আর ৪-৫ মাইল এলাকা আর ঘুরে আসতে হবে না। ব্রীজটি নির্মাণ করা হলে ওই এলাকার শিক্ষার্থীদের আর কষ্ট পোহাতে হবে না। এছাড়াও ব্যবসা বাণিজ্য যারা করে তাদের দুঃখ কষ্ট লাগাম হবে অতিসহজেই।
করল্যাছড়ি এলাকার ইউ পি সদস্য আবদুর রহিম বলেন,এ ব্রীজটির জন্য জেলা পরিষদ, উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিই ডিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/ দপ্তরে আবেদন করেছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কারও দৃষ্টি গোচর হয়নি সাঁকোটির উপর। তিনি বলেন,এ ব্রীজটি নির্মাণ করা হলে অত্র এলাকার উৎপাদিত লক্ষ লক্ষ টাকার পণ্য ও কাচামালসহ কৃষি পণ্য বাজারজাত করা সহজ হতো। ব্রীজটি সেখানে হবে সেখানে সারা বছর পানি থাকে তাই প্রতিনিয়ত পারাপার হতে হতে হয় বাঁেশর সাঁকোর উপর দিয়ে। এ সাঁকো দিয়ে পারা পারের সময় অনেকে পড়ে গিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। আবার স্কুল শিক্ষার্থীরা পারাপারের সময় বই পুস্তক পানিতে পড়ে গিয়েছে এতে গরিব ঘরের ছেলে মেয়েরা বিশাল ক্ষতির মুখে পড়ে। বর্ষাকালে সাঁকোটি পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীদের। এদিকে বাঁশের সাঁকোটি পারাপার হতে না পেরে শিশু শ্রেণির অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছেনা। তাই এ সাঁকোটির জন্য পিছিয়ে পড়েছে ওই এলাকার প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা।
ইতি মধ্যে করল্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে গিয়ে এখন আর ভয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছেনা। ওই শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে পাশের লোকজন তাৎক্ষণিক উদ্ধার না করলে সে মারা যেত।
করল্যাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম বলেন,সম্প্রতি রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান পরিদর্শনে এসে ১০০ফুট লম্বা এই সাঁকোটির উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি আরো জানান,এ সাঁকোটি দিয়ে ৪-৫টি গ্রামের সাধারণ মানুষসহ হাইস্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পারাপার হয়ে থাকেন। তাই জরুরী ভাবে এ সাঁকোটি উপর দ্রুত যেন ব্রীজ নির্মাণ করা হয়।