সিএইচটি টুডে ডট ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি বিএনপিতে আবারো গৃহদাহ শুরু হয়েছে। দুটি বিবদমান গ্র“পের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাচনে বহিস্কৃতরাও একট্রা হয়েছেন। একসময় এবং এখনো জেলা বিএনপি’র একচ্ছত্র কর্তৃত্বের দাবী করেছিলেন সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি ওয়াদুদ ভূইয়া একাই।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচনে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সমীরণ দেওয়ান পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এবং ওয়াদুদ ভুইয়া জেলে থাকায় ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন। ওয়াদুদ ভূইয়া তাঁকে মানতে পারেননি বলে বিদ্রোহী প্রার্থী করেছিলেন, ভাতিজা দাউদুল ইসলাম ভূইয়াকে।
পরে সমীরণ দেওয়ান হন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী সদস্য আর ওয়াদুদ ভূইয়া হন, জেলা বিএনপি’র সভাপতি।
তাঁর বড় ভাই বেলায়েত হোসেন ভূইয়া পারিবারিক সহায়-সম্পত্তির বিরোধে পুর্বে হয়েছেন, শত্র“।
মনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পাবলিক রিলেশন অফিসার। অতি আনুগত্যের কারণে ২০০৬ সালে তাঁকে মনোনয়ন দিয়ে নিয়ে আসেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে। পরে মনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা হন, জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি।
কিন্তু গত ১৯ ফেব্র“য়ারী অনুষ্ঠিত খাগড়াছড়ি ৬ উপজেলার প্রার্থী মনোনয়ন, নির্বাচনে হার-জিত সব মিলে সৃষ্টি হয়, জেলা বিএনপিতে নতুন মেরুকরণ।
আর এই বিরোধ ওয়াদুদ ভূইয়া’র একক কর্তৃত্বের প্রশ্ন এক করে দেয় তিন মেরু’র তিন নেতাকে।
আর সমীরণ দেওয়ান-বেলায়েত ভূইয়া এবং মনীন্দ্র লাল, হয়ে গেলেন একজোট। তাঁরা ওয়াদুদ বিরোধী সবাইকে নিয়ে গতকাল বুধবার দিনভর দেখা করলেন, দলের স্থায়ী কমিটির দুই নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) হান্নান শাহ এবং আব্দুল্লাহ আল নোমানের সাথে।
এতোদিন এলাকায় না থেকেও কেন্দ্রের কাছে ওয়াদুদ ভূইয়াই ছিলেন, অবিকল্প। কিন্তু তাঁর নানামুখী একক সিদ্ধান্ত আর জনপ্রিয়তায় অন্যরা ছিলেন তটস্থ।
কিন্তু গতকাল (বুধবার) ঢাকায় ওয়াদুদ বিরোধী বলয়ের তিন শীর্ষনেতা এবং অন্যান্যদের জোটবদ্ধ হয়ে দুই কেন্দ্রীয় নেতার সাক্ষাতের ঘটনা পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
সাক্ষাতের সত্যতা স্বীকার করে জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, আমরা দলের সাংগঠনিক শক্তিমত্তা এবং বৃহত্তর স্বার্থে দুই কেন্দ্রীয় নেতার সাথে সাক্ষাত করেছি। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেইনি।
জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াদুদ ভূইয়া ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আবু ইউসুফ চৌধুরী বলেন, এটা বড় দলে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। দলীয় সংসদ সদস্য পদের মনোনয়ন এবং ক্ষমতায় আসলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং শরণার্থী পূর্নবাসন টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান পদের লবিং করতেই তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে গিয়েছেন।
তিনি বলেন, তাঁরা আমি ও ওয়াদুদ ভূইয়ার বিরুদ্ধে আলাদাভাবে আলাদা রকমের অভিযোগ করেছেন, এটাও শুনেছি। তবে বিষয়টি একেবারেই আভ্যন্তরীন।
উল্লেখ্য, এই সাক্ষাতে তিন মেরু’র তিন শীর্ষ নেতার পাশাপাশি মাটিরাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র নাসির উদ্দিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-উপজাতীয় বিষয়ক সম্পাদক বাতায়ন দেওয়ান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইদুল ইসলাম বাবুল, খাগড়াছড়ি জেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুস সালাম, মানিকছড়ি বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতা রবিউল ফারুকসহ ওয়াদুদ বলয়ের বিরোধী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।