সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাড়িয়ে রাঙামাটি ২৯৯নং আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার বলেছেন, যেভাবে
মৌলবাদী, জঙ্গীবাদী এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তি তাদের অপতৎপরতা চালিয়ে আমাদের দেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তারই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য অঞ্চলেও সেভাবে অপতৎপরতা চালানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গত বছরে খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং এলাকায় সামান্য একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাইন্দং এলাকায় সর্Ÿেশ্বর পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ার লোকজনকে সেখানে উদ্বাস্তু হতে হয়েছে এবং অনেকের ঘরবাড়ি জ্বালানো হয়েছে। জনৈক কালাম নামক একজন মোটর সাইকেল চালককে অপহরণ করা হয়েছে- এ গুজব ছড়িয়ে যারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আছে তারা ষড়যন্ত্র করে গুজব রটিয়ে সেই সর্Ÿেশ্বর পাড়া, তানাক্কা পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়াতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এবং জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে।
উষাতন তালুকদার স্পীকারের দৃষ্টি আর্কষন করে আরো বলেন, আমি যে বিষয়টা এখানে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি তা হচ্ছে যে, পার্বত্য অঞ্চলে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গভাবে, বিশেষ করে, মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়িত না হওয়া; বন ও পরিবেশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও স্থানীয় পুলিশ হস্তান্তর না হওয়ার কারণে যে অপশক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি, মৌলবাদী শক্তি, জঙ্গিবাদী শক্তি তাদের অপতৎপরতা চালাতে সুযোগ পাচ্ছে। এজন্যে আমি যে বিষয়টা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছি সেটা হলো, দোষী বা অপরাধী কারা বা কারা আপত্তি দিয়েছে বা মামলা করেছে সেটা বিষয় নয়; যেমন- কিশোরগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে- পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাইলে অপরাধীদের ধরতে পারে আমাদের দেশে এমন প্রমাণ আছে- ১৬ কোটি টাকা কিশোরগঞ্জে ব্যাংক থেকে ডাকাতি করার পরও অতি দ্রুত সেটা ঢাকা থেকে উদ্ধার করা গেছে। পুলিশ সেখানে সার্থক হয়েছে। আমি পুলিশ বাহিনীকে সেজন্য ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু খাগড়াছড়িতে এখনও পর্যন্ত কোন অপরাধীকে ধৃত করা সম্ভব হয় নাই। আমি তাই অচিরেই সেখানে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমাদের এই মহান সংসদে মাননীয় সাংসদদের সমন্বয়ে একটা প্রতিনিধিদল সে এলাকায় ঘুরে আসার জন্য আমি মাননীয় স্পীকারের মাধ্যমে মাননীয় সাংসদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উষাতন তালুকদার আরো বলেন,, পার্বত্য ।লোকায় সংিহস ঘটনায় আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবী এবং সাংবাদিক সেই এলাকা সফর করেছেন। এ মাসের পনের তারিখে খাগড়াছড়ি জেলার কমলছড়ি ইউনিয়নের চেঙ্গীচর পাড়ার জনৈক গৃহবধু সবিতা চাকমাকে গণধর্ষণ করে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছিল। আমাদের পুলিশবাহিনী বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আজ অবধি আসামীদের ধরতে পারেন নাই এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় নাই। তারই ধারাবাহিকতায় বাদী হয়ে মৃত মহিলার স্বামী মামলা করেছেন। যারা বিবাদী হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়েছিল। মানববন্ধন করার পরে বাড়িতে ফেরার পথে কমলছড়ি নামক গ্রামে আপত্তিকর শ্লোগান দেওয়ার কারণে সেখানে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এবং দু’জন উপজাতীয় লোককে দা দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তারা এখন গুরুতর জখম অবস্থায় রয়েছে। এবং তারই ধারাবাহিকতায় খ্রিস্টানপাড়া নামে বেতছড়িতে খাগড়াছড়ি জেলায় অউপজাতীয় লোকজন গিয়ে ওই পাড়াতে হামলা করে এবং এতে ১০/১২ জন জখম হয়ে আহতরা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি সংসদে আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে অপশক্তি, সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী শক্তি গুলো পাহাড়ে আবারো মাথাছাড়া উঠছে এসব অশুভ শক্তিকে যে কোন উপায়ে রুখতে হবে।
(উষাতন তালুকদার এমপি ২৬ ফেব্র“য়ারী ২০১৪ জাতীয় সংসদে পয়েণ্ট অব অর্ডারে এসব কথা বলেন।)
Pingback: Mongwai Marma
Pingback: অরুণ মারমা