সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত রাঙামাটির ডিসি বাংলো এলাকা। শীত প্রধান দেশেগুলো থেকে প্রতিদিন অগণিত অতিথি পাখি আসছে নৈসর্গিক এ পাহাড়ি জনপদে। পাহাড়, বন আর স্বচ্ছ জলধারা অতিথি পাখিকে বেশি আকর্ষণ করে। তাই অতিথি পাখিগুলোর ভিড় জমাচ্ছে ডিসি বাংলোর শত বছরের পুরোনও বৃক্ষগুলোতে।
শীতের মৌসুমী পাখি আর দেশীয় শালিক-টিয়া ও বাদুরের জন্যে বাংলোটি অভয়াশ্রম। বাংলোর পিছনে হ্রদের উপর গাছগুলোতে শত শত অতিথি পাখির দলের কলতানে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি একাকার হয়ে মিশে গেছে। ডিসির বাংলোর চারদিকে এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ পরিবেষ্টিত রাঙামাটি জেলা গড়ে উঠেছে ছোট বড় অসংখ্য পাহাড়ের সমন্বয়ে। তাই সবুজ পাহাড়ের হাতছানিতে প্রকৃতির ডাকে দূর দূরান্ত থেকে যেন ছুটে চলে আসে অতিথি পাখি।
শীত মৌসুমের শুরুতেই পর্যটন শহর রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলাসহ রাঙামাটির ডিসি বাংলো, সুভলং, লংগদু, কাট্টলী, মাইনিমুখ,সাজেক, বাঘাইছড়ি, হরিণা, বিলাইছড়ি, বরকলসহ পাহাড়ের বিভিন্ন বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে থাকে অতিথি পাখির দল। বিভিন্ন দেশ হতে আসা এসব পাখির কলরবে কানায় কানায় ভরে যায় নদীর তীর ও জলে ভাসা চরগুলো। প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় সাধারণত অতিথি পাখি বেশি দেখা যায়। প্রতি বছরের মত এবছরও শীতের শুরুতেই পাহাড়ি অঞ্চলে অতিথি পাখি এসেছে চোখে পড়ারমত। ভোর হলেই খালি চোখে দেখা যায় খাবারের খুঁজে জলেভাসা চরে দল বেধে নামে অসংখ্যা অতিথি পাখি।
শীতকালে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে অতিথি পাখির সমাহার দেখা যায়। ডুব চরে ও নদীর পাড়ে যে সব পাখি বেশি দেখা যায় এর মধ্যে রয়েছে- পাতিহাস, ডাহুক, কালাম, বক, বইধরসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি। তবে পাখী শিখারীদের আক্রমনে নির্বিচারে পাখি হত্যার কারনে অতীতের চেয়ে আস্তে আস্তে শীত সহ বিভিন্ন মৌসুমে রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকায় কমে আসছে অতিথি পাখির অবস্থান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতিখি পাখি নিধনের জন্য উঠে পরে লেগেছে কিছুসংখ্যা অসাধু পাখি ব্যবসায়ী। প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় নির্বিচারে চলছে অতিথি পাখি নিধন। বিভিন্ন রকম ফাঁদ পেতে শিকার করছে অতিখি পাখি। আর এসব পাখি ধরার জন্য শিকারিরা বিভিন্ন ফাঁদ পেতে থাকে। অতিথি পাখি শিকারের ফাঁদগুলোর মধ্যে রয়েছে-মাছ ধরার জাল, বাশেঁ তৈরি (স্থানীয় ভাষায় এদি), বড়শি ও বিষ। এসব ফঁদের সাহাযে খুব সহযে শিকার করা যায় অতিথি পাখি। শিকার করা পাখিগুলো গোপনে বিক্রি করা হয় বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে কিংবা হোটেলে।
প্রাণি বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে অতিথি পাখি শিকার হতে থাকলে, একদিন অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। প্রকৃতির সৌন্দর্যও একদিন হারিয়ে যাবে। এই বিষয়ে সচেতন হয়ে পাখি শিকার বন্ধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।