শিরোনামঃ

শান্তি চুক্তির অধিকাংশ ধারাই বাস্তবায়ন করা হয়েছে, বাকি ধারাগুলো বাস্তবায়নের কাজ চলছে : পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেছেন, পার্বত্য চুক্তির অধিকাংশ ধারাই বাস্তবায়ন করা হয়েছে, বাকি ধারাগুলো বাস্তবায়নের কাজ চলছে এজন্য ধের্য্য ধারন করতে হবে। চুক্তি পক্ষ যে অবিশ্বাস অনাস্থার কথা বলছে তা ঠিক নয় , কারন চুক্তির পক্ষই কেবল চুক্তি বাস্তবায়ন করবে। আর এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার।dipankar talukder-AL

শান্তি চুক্তির ১৬তম বর্ষপুর্তি উপলক্ষে আজ সোমবার রাঙামাটি  জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনটি গতকাল রোববার করার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারনে তা বাতিল করে আজ বিকালে আবার হঠাৎ করে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, এই সরকার আমলে চুক্তির ৭৮টি ধারার মধ্যে ৪২টি ধারা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামীতে মহাজোট সরকার গঠন করতে পারলে চুক্তির বাকি অংশ বাস্তবায়ন করা হবে। সন্তু লারমার অভিযোগ সর্ম্পকে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, উনি তো অনেক কথাই বলেন চুক্তি অনুযায়ী আঞ্চলিক পরিষদ গঠন, জেলা পরিষদ পুর্নগঠন, ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠন, ভারত প্রত্যাগত শরনার্থীদের পুর্নবাসন ও অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। চুক্তির বাকি অংশগুলো বাস্তবায়নের কাজ চলছে কিন্তু তার আগে চুক্তি পক্ষকে চুক্তি বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করতে হবে। চুক্তি পক্ষ যে দেরীতে হলেও বুঝেছে ইচ্ছা থাকলেও সবকিছু সীমাবদ্ধতার কারনে সম্ভব হয় না সে জন্য তাদের সাধুবাদ জানাই।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি জামাত জোট চুক্তি বাতিলের কথা বললেও তারা চুক্তি বাতিল বা বাস্তবায়ন কোনটাই করেনি।

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন একেঅপরকে দোষারোপ করে নিজেদের শক্তি ক্ষয় হচ্ছে মাত্র। চুক্তি বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। চুক্তির ফলে তিন পার্বত্য জেলার তিন জন নর্বাচিত সাংসদকে প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদায় মন্ত্রী, উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান মনোনীত করার মধ্যে সরকার সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে যারা অভিযোগ করেন তাদের মনে রাখা উচিত যে চুক্তির ফলে সৃষ্ঠ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সন্মানিত চেয়ারম্যানের পদটিও প্রতিমন্ত্রীর পদ মর্যাদায় সম্পন্ন। একথাও বাস্তবার নিরিখে স্বীকার করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা উত্তোরনের কথা যারা উচ্চকণ্ঠে বলে থাকেন তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্বাপর সময়ে কতটুকু গণতান্ত্রিক ছিলেন বা আসেন নিজেদেরকে উপলব্দি করা উচিত।
পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ বিধিমালা গেজেট হওয়ার পরও তা কেন প্রকাশিত হচ্ছে না সে ব্যাপারে জানতে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। অনেক ষিয়ে ছাড় দেয়া গেলেও অর্থ বিষয়ক একটি নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিষদের অভিযোগ থাকায় গেজেটি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। একই অবস্থা বিরাজ করছে ভূমি কমিশন প্রনয়নের ক্ষেত্রে। এই আইনের ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিষদের ১৩টি সংশোধনীর মধ্যে ১০টি সংশোধনী সরকারীভাবে গৃহীত হয়েছে। এবং বাকী তিনটি সংশোধনী আইন মন্ত্রনালয়ের পাঠানোর পর তা এ মন্ত্রনালয়ের বিচেনাধীন রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও তদপরবর্তী আইন সমুহের কিছু কিছু সংশোধনী যা আঞ্চলিক পরিষদ ও জনসংহতি সমিতি পরিবর্তন করতে চাইছেন সেগুলি অনেকটাই অত্যন্ত সংবেদনশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন ভূমি কমিশনকে পার্বত্য চট্টগ্রা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে অধীনের আনার যে দাবি আঞ্চলিক পরিষদের পক্ষ থেকে আনা হয়েছে তা এই মহুর্তে অত্যন্ত সংবেদনশীল বলে উল্লেখ করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের বেতনভাতা ও ঢাকায় স্থাপিত বিশ্রামাগারের ভাড়া প্রদানের বিষয়গুলো ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে বলে তিনি জানান।
তার আলোচনা শেষের দিকে এসে তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডের সাথে ব্রিটিশ সরকারের সাথে সম্পাদিত চুক্তির কথা উলেÍখ করে বলেন, ১৯৯৮ সালের ১০ এপ্রিল ৯দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তার মধ্যে ২০১৩ সালে ২ ডিসেম্বর পর্ষন্ত মাত্র ৪টি দফা বাস্তবায়িত হয়েছে। এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলে তার অর্থ এই নয় যে আয়ারল্যান্ডের মত আমরা পিছিয়ে থাকবো। তবে এ জন্য ধৈর্য্যশীল সহযোগিতামূলক অবস্থান গ্রহন প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বরসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 309 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen