শিরোনামঃ

শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস আজ

সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর দিন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাময় দিন। তবে এবারে এ দিবসটি পালিত হবে নতুন আঙ্গিকে। কেননা এদিনে স্বজনহারারা টানা ৪২ বছর যে কষ্ট বুকে চেপে রেখেছিল, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির মধ্যদিয়ে তাদের বুক থেকে সে কষ্টের জগদ্দল পাথর কিছুটা হলেও সরে গেছে।1111

আজকের এইদিনে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বুঝতে পেরেছিল, পরাজয় তাদের অনিবার্য।পরিকল্পিতভাবে জাতিকে মেধাহীন ও পঙ্গু করতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের রাতের আঁধারে চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।এ হত্যাকাণ্ডের ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী বর্বর বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকান্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বর ঘটনা যা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষকে স্তম্ভিত করেছিল। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়।

১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিকট আত্মীয়রা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে তাদের গলিত ও ক্ষত বিক্ষত লাশ খুঁজে পায়। বুদ্ধিজীবীদের লাশে ছিল আঘাতের চিহ্ন। চোখ, হাত-পা ছিল বাঁধা। কারো কারো শরীরে ছিল একাধিক গুলি। অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে। লাশের ক্ষত চিহ্নের কারণে অনেকেই প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারেননি।

১৯৭২ সালে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সঙ্কলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’ এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে একাত্তরের ২৯ ডিসেম্বর গঠিত বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাও ফরমান আলী এদেশের ২০,০০০ বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এই পরিকল্পনা মতো হত্যাযজ্ঞ চালানো সম্ভব হয়নি। কারণ ফরমান আলীর টার্গেট ছিল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদেরকে গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে মেরে ফেলা।

দিনটিতে গোটা জাতি বিনয় এবং শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। এবারের শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসের পেক্ষাপট অন্যান্য বছরের তুলনায় আদালা। মাত্র এক দিন আগেই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্তদের এক জনের ফাঁসি কার্যযকর হয়েছে। এবার জাতির প্রত্যাশা, জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের যারা হত্যা করেছে তাদের সকলের বিচারের রায কার্যকর করে দেশকে কলংক মুক্ত করা হবে।

বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রতি বছর এই দিবসটি জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে। এ বছরও দিবসটি পালনে রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও নিয়েছে পৃথক পৃথক কর্মসূচি। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 463 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen