শিরোনামঃ

জরুরী সভায় সিদ্ধান্ত

রিপোর্টার্স ইউনিটির ২ সদস্যকে অব্যাহতি

সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। সংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গঠনতন্ত্রের ধারা-৬ এর (১৮) ও ‘ধারা-৭ এর (৪) অনুচ্ছেদ বলে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সম্পাদক বিজয় ধর এবং অর্থ সম্পাদক ফাতেমা জান্নাত মুমুর সদস্য পদ বাতিল ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।7777

সংগঠনটির পক্ষ থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘শুক্রবার দুপুরে অনুষ্ঠিত সংগঠনের এক বিশেষ জরুরী সভায় অভিযোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা-পর্যালোচনাসহ সবকিছু যাচাইয়ে অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণিত হওয়ায় এবং পূর্বে দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের প্রেক্ষিতে তাদের জবাব যৌক্তিক, গঠনতান্ত্রিক ও সন্তোষজনক না হওয়ায় সংগঠনটির বৃহত্তর স্বার্থরক্ষা, গঠনতান্ত্রিক মর্যাদা ও ভাবমূর্তি অক্ষুণœ এবং সমুন্নত রাখতে তথা সর্বোপরি সংগঠনের গঠনতন্ত্রের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’

সংগঠনের সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিশেষ জরুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি চৌধুরী হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান রাজন, নির্বাহী সদস্য সত্রং চাকমা, ফজলে এলাহী, এম কামাল উদ্দিন, হেফাজত-উল বারি সবুজ ও শংকর হোড়।

সভায় উল্লেখ করে বলা হয়, সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির বর্তমান অর্থ সম্পাদক ফাতেমা জান্নাত মুমু এবং যুগ্ম সম্পাদক বিজয় ধর ‘রাঙ্গামাটি সাংবাদিক সমিতি’ নামে অন্য একটি সাংবাদিক সংগঠনের সাথে সরাসরি যুক্ত হয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা লাভ করেন, যা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উত্থাপিত ও রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে দেয়া অভিযোড়পত্রের ভিত্তিতে প্রাপ্ত কাগজপত্রাদিসহ প্রমাণিত হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় যে, ফাতেমা জান্নাত মুমু ও বিজয় ধর রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির গঠনতন্ত্রের ধারা-৬ এর (১৮) এবং ‘ধারা-৭ এর (৪) অনুচ্ছেদ সরাসরি লংঘন করে অত্র সংগঠনের শৃংখলা ভঙ্গসহ সাংগঠনিক স্বার্থ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থীমূলক অপরাধ করেছেন।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘এমতাবস্থায় সংগঠনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সবকিছু বিষয়াদি মূল্যায়নসহ গঠনতন্ত্রের ধারা-বিধি বিশ্লেষণ পূর্বক উল্লিখিত অপরাধের দায়ে ফাতেমা জান্নাত মুমু এবং বিজয় ধরকে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির যাবতীয় কার্যক্রম ও সম্পৃক্ততা থেকে অব্যাহতি দিয়ে গঠনতন্ত্রের উল্লিখিত ধারা মোতাবেক সংগঠন থেকে তাদের সদস্যপদ বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে গঠনতন্ত্রের উল্লিখিত ধারার ক্ষমতা বলে উক্ত দুইজনের অত্র সংগঠন হতে কোনো রকম সুযোগ-সুবিধা অথবা কোনো রকম অংশীদারিত্ব থাকবে না মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়- যা ২৪/০৬/২০১৬ ইং তারিখ হতে সিদ্ধান্তটি কার্যকর বলে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আজ (শুক্রবার) থেকে তাদের কোনো কার্যক্রমের দায় রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটি বহন করবে না।’
রাঙামাটি রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা সংগঠনের পক্ষে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি প্রেরণ করেন।
যোগাযোগ করা হলে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা বলেন, ‘অব্যাহতি দেয়া এই দুই সদস্যের বিরুদ্ধে রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে তাদের নামে বরাদ্ধকৃত টাকা আত্মসাতের তথ্য প্রমাণসহ অভিযোগ করা হয়েছে আমাদের কাছে। এরই ভিত্তিতে আমরা বিজয় ধর এবং ফাতেমা জান্নাত মুমুকে সাতদিনের মধ্যে জবাব দিতে নোটিশ দেই, নির্ধারিত মেয়াদে তারা নোটিশের জবাব দিতে ব্যর্থ হলে আমরা আরো তিনদিন সময় বাড়িয়ে দেই। কিন্তু তারা নোটিশের যে জবাব দিয়েছে তা সংগঠনের সদস্যদের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। তাই শুক্রবার অনুষ্ঠিত সংগঠনের জরুরী সভায় প্রায় সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্সার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

এছাড়া রাঙামাটি জার্নালিষ্ট এন্টারটেইনমেন্ট ক্লাব নামে আরেকটি সংগঠনের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে উল্লেখিত ২জন ছাড়াও আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাদাবাজিসহ হুমকি ধামকির অভিযোগ পাওয়া যায়।

17196_n

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটি ও রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নকে পৃথক দুটি অভিযোগ জানানো হয় যে, সংসদ সদস্য উষাতন তালুকাদারের সুপারিশে দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের একটি বরাদ্দ দেয়া হয় রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরামকে। কিন্তু রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সম্পাদক বিজয় ধর,অর্থ সম্পাদক ফাতেমা জান্নাত মুমু এবং সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য উচিংচা রাখাইন কায়েস তিনজনে মিলে সাংবাদিক নয় এমন আরো দুইজনের নামসহ ‘রাঙামাটি সাংবাদিক সমিতি’ নামের পৃথক একটি ভূয়া সংগঠন দেখিয়ে সেই বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছে। নাম ব্যবহার করা হয়েছে এমন একজন,শহরের ইহার্ট কম্পিউটারের কর্মী মো: শাহ আলম সজীবও এই বিষয়ে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পৃথক একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন। একই ঘটনায় রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে উচিংসা রাখাইন কায়েসের বিরুদ্ধেও রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নে পৃথক আরেকটি অভিযোগ দিয়েছে রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরাম। কায়েসকেও ইতোমধ্যেই কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে সাংবাদিক ইউনিয়ন।applicationnn

উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে কর্মরত সাংবাদিকদের চারটি সংগঠন,যা হলো রাঙামাটি প্রেসক্লাব,রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরাম,রাঙামাটি সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটি। তবে রাঙামাটি সাংবাদিক সমিতি নামে যে ভূয়া সংগঠনের নাম ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সেই নামে কোন সংগঠন নেই জেলায়। যে পাঁচ জনকে সদস্য দেখানো হয়েছে তার মধ্যে ২ জন রিপোর্টার্স ইউনিটির,১ জন সাংবাদিক ইউনিয়নের এবং বাকী দুইজন সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত নয়।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 496 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen