শিরোনামঃ

রাঙামাটিতে ১৭৫টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ১২২টি পদই শুন্য

সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটিতে ১৭৫জন ডাক্তারের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫৩জন, ১২২টি পদই শুন্য রয়েছে। ডাক্তার স্বল্পতার কারনে রাঙামাটির স্বাস্থ্যর সেবার DSC03807বেহাল অবস্থা। এছাড়া জুড়াছড়ি, বিলাইছড়ি, নায়িারচরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মান্দাতা আমলের টিনশেড দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। এদিকে রাঙামাটি জেলার একমাত্র আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল ৫০ শয্যা থেকে ১শ শয্যায় রুপান্তরিত করা হলেও বাড়ানো হয়নি ভবন সংখ্যা। ডাক্তারের স্বল্পতায় রোগীরা পাচ্ছে না কাঙ্খিত সেবা।
রাঙামাটি জেলার একমাত্র আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল হাসপাতাল চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসার বেহাল অবস্থা। চিকিৎসক স্বল্পতায় অনেক সময় রোগীদের সেবা দিতে ডাক্তার হিমশিম খেতে হয়। ১৯৮৩ সনে ৫০ শয্যা বেড হিসেবে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল চালু করা হলেও পরবর্তী সময়ে এটিকে ১শ শয্যায় রুপান্তরিত করা হয়। নতুন ভবন না করে ১শ শয্যা বিশিষ্ট করায় রোগীদের চাপে এটি দিন দিন ঝুকিপুর্ন হয়ে উঠছে। ইউএনডিপি এক জরিপে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালকে ঝুকিপুর্ন ভবন হিসেবে চিহিৃত করেছে। এই ঝুকিপুর্ন ভবনে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ৩০জনের স্থলে ১৫ জন ডাক্তার থাকলেও এর মধ্যে ৫ জন ডেপুটিশনে অন্য হাসপাতালে কর্মরত। গুরুত্বপুর্ন পদগুলোতে ডাক্তার নেই। যে সব ডাক্তারদের পোষ্টিং দেয়া হয়েছে তারাও নিয়মিত হাসপাতালে আসেন না। হাসপাতালে ১টি মাত্র এ্যাম্বুলেন্স তাও প্রায় সময় নষ্ট থাকে। হাসপাতালে মাত্র ২টি কেবিন রয়েছে। হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন নষ্ট থাকে প্রায়ই সময়। গুরুতর জখম বা আঘাত প্রাপ্ত হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এত সব সমস্যার মধ্যে রোগীদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বললে তারা জানান ডাক্তার সারাদিনে কেবল একবারই আসেন ঔষুধ পত্র নার্সরাই খাওয়ার সময় এসে খাইয়ে যান। আবার কয়েকজন রোগী অভিযোগ করেন হাসপাতালে এসে ভর্তি হবার কেউ তাদের খবর নিতে আসেনি। বাথ রুম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলেও বেডের বিছানার কাপড় ময়লা ২দিন হলে আর পরিবর্তন করে নতুর বিছানার কাপড় দেয়া হয় না।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক প্রধান ডা. নুয়ের খীসা জানিয়েছেন, আমাদের ডাক্তার স্বল্পতা আছে তবুও আমরা সীমাবদ্ধতার মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। হাসপাতালটি ভবনটি ঝুকিপুর্ন হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। রোগীদের দাবীর প্রেক্ষিতে আমরা কেবিন বাড়ানোর ব্যাপারে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তিনি বলেছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।DSC03812
রাঙামাটি জেলা সদরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস, এছাড়া উপজেলাগুলো থেকেও রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা নিতে রাঙামাটি সদরে আসেন। এরকম পরিস্থিতিতে ডাক্তার সংকট নিরসন, এ্যাম্বুলেন্স বাড়ানোসহ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার দাবী এলাকাবাসীর।
এদিকে রাঙামাটি জেলায় ১৭৫জন ডাক্তারের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫৩জন, ১২২টি পদই শুন্য রয়েছে। ডাক্তার স্বল্পতার কারনে রাঙামাটির স্বাস্থ্যর সেবার বেহাল অবস্থা। অনেকের পোষ্টিং থাকলেও তারা কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন না। এছাড়া জুড়াছড়ি, বিলাইছড়ি, নায়িারচরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মান্দাতা আমলের টিনশেড ভবন দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। উপজেলা গুলোতে ৩১ শয্যার হাসপাতাল চালু থাকার কথা থাকলেও সেগুলো ১০ শয্যা বিশিষ্ট এখনো রয়েছে।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ডাক্তার স্বল্পতা সত্বেও আমরা স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি গত বছর সার্ভিসের জন্য ডিভিশনাল পুরস্কারও পেয়েছি। এখানে ডাক্তার সাহেব যারা আসেন সামগ্রিক পরিবেশ পরিস্থিতি তাদের প্রতিকুলে বলে তারা থাকতে চান না। বিশেষ করে আবাসন, যাতায়াত ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে হবে। ঢাকা বা চট্টগ্রামের একজন ডাক্তার যে সুযোগ সুবিধা পান মফস্বলের ডাক্তার সেই সুবিধা পান না তাই তারা থাকতেও চান না। যে সব ডাক্তার উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী তাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে ২/৩ বছর কাজ করতে হবে এরকম শর্ত দিয়ে যদি সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় তাহলে হয়ত ডাক্তাররা এখানে সার্ভিস দিতে উৎসাহিত হবেন।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 643 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen