সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এই প্রথম কারো ফাঁসি কার করা হলো। কাদের মোল্লার ফাসির কিছু সময় পর তার অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী মৃতদেহ ফরিদপুরে রওয়া হয়। এদিকে কাদের মোল্লার ফাসির প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে জামাত।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর জামায়াতের এই নেতাকে যাবজ্জীবন সাজা থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে রায় দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ।
এরপর দীর্ঘ তিন মাস পর গত ৫ ডিসেম্বর মোট ৭৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে আদালত।
রায়ে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনসহ চার বিচারপতি মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে মত দেন। একজন দ্বিমত পোষণ করেন।
প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ছাড়াও আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি হলে- বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা, বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
সরকার পক্ষ ও আসামী পক্ষের আপীল শুনানীর বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় আপীল বিভাগ কাদের মোল্লার ফাসির রায় বহাল রাখেন। যা বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১মিনিটে কার্যকর করা হলো।
স্বজনদের সাক্ষাৎ
আজ সন্ধ্যায় আবদুল কাদের মোল্লার সঙ্গে আবার দেখা করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করতে পরিবারের সদস্যরা আজ সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে যান। সন্ধ্যা সাতটার পরে তাঁরা বের হয়ে আসেন।
সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে কারা চিকিত্সক শামসুল আলম কারাগারের ভেতর ঢোকেন। রাতে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন), দুই জন ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন, একজন মাওলানা, একজন ইমাম কারাগারের ভেতরে যান।
কারাগারের সামনে পুলিশ-র্যাবের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছিল। এ ছাড়াও আশপাশের ভবনের ওপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। কারা চিকিত্সক শামসুল আলম সন্ধ্যা সাতটার দিকে কারাগারের ভেতর ঢোকেন।
ফাঁসি কার্যকর করেন ছয় জল্লাদ
জল্লাদ শাজাহান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করেন বলে জানা গেছে। দলের বাকি সদস্যরা হলেন ফারুক, হামিদ, সারোয়ার, তানভির ও জনি। কাউকে ফাঁসি দিলে সেই জল্লাদ এক মাসের সাজা মওকুফ পান।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয় :
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ (পল্লব হত্যা)
কাদের মোল্লার নির্দেশে আকতার গুন্ডা একাত্তরের ৫ এপ্রিল মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যা করে। রায়ে বলা হয়, প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পাওয়া গেছে, একাত্তরে নবাবপুর থেকে পল্লবকে ধরে আনার মতো দুষ্কর্মে আসামির ‘সহযোগিতা’ ছিল। পল্লব মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, এ জন্য তিনি আসামির শিকারে পরিণত হন। এ হত্যাকাণ্ড ছিল দেশের বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে পদ্ধতিগত আক্রমণের অংশ।
দ্বিতীয় অভিযোগ (কবি মেহেরুননিসা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা)
এ অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে মিরপুরের বাসায় গিয়ে হত্যা করেন। রায়ে এ বিষয়ে বলা হয়, সহযোগীদের নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে কাদের মোল্লা এ হত্যাকাণ্ডে ‘নৈতিক সমর্থন’ ও ‘উত্সাহ’ জুগিয়েছেন, যা দুষ্কর্মে ‘সহযোগিতার’ মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তৃতীয় অভিযোগ (সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব হত্যা)
একাত্তরের ২৯ মার্চ সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে মিরপুরের জল্লাদখানা পাম্প হাউসে নিয়ে কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা জবাই করে হত্যা করেন। প্রাপ্ত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়, খন্দকার আবু তালেব হত্যাকাণ্ডে কাদের মোল্লা মূল অপরাধীদের নৈতিক সমর্থন ও উত্সাহ জুগিয়েছেন, যা মানবতাবিরোধী অপরাধে সহযোগিতার মধ্যে পড়ে।
চতুর্থ অভিযোগ (ঘাটারচর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ড)
একাত্তরের ২৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ১১টা পর্যন্ত কাদের মোল্লা ও ৬০-৭০ জন রাজাকার কেরানীগঞ্জ থানার ভাওয়াল খানবাড়ি ও ঘাটারচর (শহীদনগর) এলাকায় শতাধিক নিরস্ত্র গ্রামবাসী ও দুজন নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন। এ বিষয়ে রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষের সপ্তম সাক্ষী আবদুল মজিদ পালোয়ান ও অষ্টম সাক্ষী নূরজাহান বেগম যে আসামিকে চিনতেন, তা প্রাপ্ত সাক্ষ্যে ট্রাইব্যুনাল বিশ্বাস করতে পারেননি। ফলে এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয় না যে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাকিস্তানি সহযোগীদের সঙ্গে রাইফেল হাতে কাদের মোল্লা নিজে উপস্থিত ছিলেন। হত্যাকাণ্ড যে ঘটেছিল, তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই, কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আসামির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।
পঞ্চম অভিযোগ (আলুব্দীতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ)
একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাদের একটি হেলিকপ্টার মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামের পশ্চিম দিকে নামে। কাদের মোল্লা অর্ধশত অবাঙালি, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনাসদস্য নিয়ে গ্রামের পূর্ব দিক থেকে ঢোকেন এবং এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। ওই ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি মারা যান। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে, হত্যাকাণ্ডের সময় কাদের মোল্লাকে রাইফেল হাতে সশরীরে উপস্থিত দেখা গেছে। কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ যখন অনেক ব্যক্তি ঘটায়, তখন ওই ব্যক্তিদের প্রত্যেকে ওই অপরাধ এককভাবে সংঘটনের জন্য সমানভাবে দায়ী।
ষষ্ঠ অভিযোগ (হযরত আলী, তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও ধর্ষণ)
একাত্তরের ২৬ মার্চ মিরপুরের ১২ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর কালাপানি লেনের হযরত আলী, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই বছরের ছেলেকে হত্যা এবং তাঁর ১১ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের সঙ্গে কাদের মোল্লা সংশ্লিষ্ট ছিলেন। হযরতের আরেক মেয়ে ওই ঘটনা লুকিয়ে থেকে দেখেছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন হযরতের পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য লুকিয়ে থাকা ওই মেয়ে। রায়ে বলা হয়, প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণে অপরাধের ঘটনাস্থলে কাদের মোল্লার উপস্থিতি অপরাধের সঙ্গে তাঁর সংযুক্ততা প্রমাণ করে। আইনগতভাবে ধরে নেওয়া যায়, অপরাধ সংঘটনে আসামি নৈতিক সমর্থন ও সাহায্য করেছেন।
সংক্ষিপ্ত রায় অনুসারে, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে চতুর্থ অভিযোগ ছাড়া বাকি পাঁচটি অভিযোগ অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে সংশ্লিষ্টতা বা সহযোগিতার জন্য, পঞ্চম অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে হত্যা এবং ষষ্ঠ অভিযোগে হত্যা ও ধর্ষণের অপরাধে কাদের মোল্লাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
শাস্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বলা হয়, হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ মানবতাবোধের জন্য এক প্রচণ্ড আঘাত, ট্রাইব্যুনাল তা বিবেচনায় নিয়েছেন। অপরাধে আসামির সম্পৃক্ততার ধরন ও অপরাধের গভীরতা ট্রাইব্যুনাল সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করেছেন। শাস্তি এমন হতে হবে যেন অপরাধের গভীরতার সঙ্গে অপরাধীর দায়ের মাত্রা সম্পর্কযুক্ত হয়। ট্রাইব্যুনাল একমত যে পঞ্চম ও ষষ্ঠ অভিযোগের জন্য কাদের মোল্লা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগের জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার যোগ্য।
চূড়ান্ত আদেশে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর ২০(২) ধারা অনুসারে কাদের মোল্লাকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
এ রায়ের পর তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তরুণ সমাজের ডাকে শাহবাগে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ। পরে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সমান সুযোগ রেখে ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) সংশোধন বিল, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। আগে আইনে সরকারের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ ছিল না। গত ৩ মার্চ সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আর সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে পরদিন আপিল করেন কাদের মোল্লা। গত ১ এপ্রিল থেকে শুনানি শুরু হয়।
আসামি ও সরকার—উভয় পক্ষের দুটি আপিলের ওপর ৩৯ কার্যদিবস শুনানি শেষে গত ২৩ জুন আপিল বিভাগ রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। শুনানি শেষ হওয়ার ৫৫ দিনের মাথায় ১৭ সেপ্টেম্বর রায় দেওয়া হয়।
আপিল বিভাগের রায়ে কাদের মোল্লাকে দোষী সাব্যস্ত করার ব্যাপারে পাঁচ বিচারপতি একমত হলেও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা ভিন্নমত দেন। আপিল বিভাগের আদেশে বলা হয়, ষষ্ঠ অভিযোগে (সপরিবারে হযরত আলী লস্কর হত্যা ও ধর্ষণ) সংখ্যাগরিষ্ঠ (৪:১) মতামতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। চতুর্থ অভিযোগ (ঘাটারচর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ড) থেকে ট্রাইব্যুনাল আসামিকে খালাস দিয়েছেন, রায়ের এ অংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে বাতিল করা হলো। এ অভিযোগে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো। প্রথম (পল্লব হত্যাকাণ্ড), দ্বিতীয় (সপরিবারে কবি মেহেরুননিসা হত্যা), তৃতীয় (সাংবাদিক আবু তালেব হত্যাকাণ্ড) ও পঞ্চম অভিযোগে (আলুব্দী হত্যাযজ্ঞ) ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ড সংখ্যাগরিষ্ঠ (৪: ১) মতামতে বহাল রাখা হলো।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে রোববার হরতালসহ চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী।
কাল শুক্রবার দেশের সকল মহানগরী, জেলা, উপজেলায় গায়েবানা জানাযা। শনিবার আবদুল কাদের মোল্লাসহ সকল শহীদদের জন্য দোয়া অনুষ্ঠান। রোববার সকাল-সন্ধ্যা সারাদেশে হরতাল ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী।
কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ।
বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান অগ্রাহ্য করে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে আব্দুল কাদের মোল্লাকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সরকারের এ নৃশংস, বর্বরোচিত, সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ জানাচ্ছি ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার তাকে হত্যা করে নিজেদের রাজনৈতিক মৃত্যু ডেকে এনেছে। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার প্রতিফোঁটা রক্ত তার হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেকের জন্য অভিশাপ বয়ে আনবে। তাদের ধ্বংস অনিবার্য। তাদের করুণ পরিণতি দেশবাসী অতি শিগগিরই প্রত্যক্ষ করবে।”