সিএইচটি টুডে ডট কম, লামা (বান্দরবান)। পাহাড়ি-বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী, উচুঁ-নিচু রাস্তা, বেঁকে যাওয়া মাতামুহুরী নদী, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সম্পদের অনিন্দ্য নিকেতন লীলাভূমি অপার সম্ভাবনা আর দর্শনীয় স্থানের নাম লামা উপজেলা।
এ অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া সকল গোত্রের মানুষের ভাগ্যোন্নোয়নের লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৮ এপ্রিল উপজেলাটি মহকুমা শহর নামে পরিচয় লাভ করে। আবহমান কাল থেকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শান্তি পূর্ণ সহাবস্থান এ উপজেলায়। লামা উপজেলায় রয়েছে সাতটি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা, ১৮টি মৌজা এবং ৩৫৯টি গ্রাম। এর আয়তন ৬৭১.৮৪ বর্গ কিলোমিটার। অধিকাংশ ভূমিই পাহাড় ও বনভূমির অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে উপজেলাটি রূপান্তরিত হয়েছে এক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে। ধারণা করা হয় পার্বত্য অঞ্চলের অবস্থিত মাতামুহুরী নদীর ভাটি অঞ্চলে লামের খালের নাম হতেই লামা উপজেলা নামের উৎপত্তি।
এই উপজেলায় দেখার মত দৃর্শ্য রয়েছে পর্যটন কেন্দ্র মিরিঞ্জা আর পাহাড়ের মাঝখানে বেঁকে যাওয়া মাতামুহুরী নদী। পর্যটনটি ফাঁসিয়াখালী-লামা-আলীকদম সড়কে পাশে অবস্থিত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দেড় হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এখানে রয়েছে টাইটানিক নামে একটি পাহাড়, সেখান থেকে দেখা মিলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের। মিরিঞ্জা পর্যটন কেন্দ্র প্রায় ১ হাজার ফুট নিচুতে রয়েছে একটি ঝরণা। বান্দরবান জেলার বৃহত্তর উপজেলা লামা শহর থেকে সাড়ে ৭কি.মি দূরে রিরিঞ্জা পাহাড়ে অবস্থিত পর্যটন মিরিঞ্জা। সমতল ভূমি থেকে প্রায় ২২শত ফুট উচ্চতায় আবস্থিত মিরিঞ্জা। পাহাড় আর মেঘের মিলনের অপরুপ দৃশ্য দেখা যাবে এখানে। প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা। পিকনিকের রান্না করার সুযোগ রয়েছে। প্রায় ৩৩একর জায়গায় নির্মিত পর্যটন মিরিঞ্জা সহজেই সকলের মন কেড়ে নেবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া থেকে জীপ, বাস ও প্রাইভেট গাড়ীতে করে আসা যাবে। দূরত্ব ১৭ কি.মি। চকরিয়া হতে মিরিঞ্জা পর্যটনের ভাড়া ৪৫-৫০ টাকা। রাতে থাকার সুব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি থাকলে ভাল। তবে লামা শহরে মাঝারি ধরনের হোটেল রয়েছে। প্রতিরুমের ভাড়া পড়বে ৩শত থেকে ৮শত টাকা পর্যন্ত। ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস স্থল লামা যে কোন ভ্রমণ পিপাসু মানুষের মন কাঁড়বে।
বেঁকে যাওয়া পাহাড়ের মাঝখান হতে বয়ে যাওয়া মাতামুহুরীর নদীর অববাহিকা ও মনোরম দৃর্শ্য উপভোগ করার জন্য লামা শহর হতে টমটম বা রিক্সা করে যেতে হবে।
শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং অর্থনৈতিক সম্বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বান্দরবান জেলার মধ্যে উপজেলাটি শীর্ষস্থানে রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নতুন-নতুন শিক্ষা ও কলকারখানা গড়ে উঠার কারণে এখানকার জনসাধারণ অর্থনৈতিকভাবেও ক্রমশঃ সমৃদ্ধ হয়েছে।
বান্দরবান জেলা সদর হতে লামা উপজেলার দূরত্ব মাত্র ৯৫ কিলোমিটার। উপজেলাটির উত্তরে- বান্দরবান সদর এবং থানচি উপজেলা, দক্ষিণে- নাইক্ষ্যংছড়ি, পূর্বে- মায়ানমার বর্ডার, রুমা, থানচি ও আলীকদম উপজেলা এবং পশ্চিমে- চকরিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা বিদ্যমান রয়েছে।