সিএইচটি টুডে ডট কম,রাঙামাটি।
পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের একমাত্র কৃষি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউট রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউ প্রতিষ্ঠার ৭ বছর পর জাতীয় স্বীকৃতি পেলো। এমনটা জানিয়েছেন কৃষ্টি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি বলেছেন, দক্ষ জনবল, শিক্ষক সংকট, পরিবহন সংকট, আবাসিক হোষ্টেলগুলোতে পানি সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে কেটে যাবে।
রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউট
রাঙামাটি শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪ একর জমির উপর ২০০৬ সালে কৃষি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউটটি উদ্বাধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। কৃষি সম্প্রসারণের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট প্রকল্প, রাঙামাটি’র তত্ত্বাবধানে প্রায় ২৪ একর জায়গার ওপর নির্মিত এ প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের মোট আসন সংখ্যা চারশ’। জেলা ভিত্তিক কোটা অনুযায়ী প্রতিবছর ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে দূরশিক্ষণে ১০ জন এবং মুখোমুখী ব্যবস্থায় রাঙামাটি জেলা হতে ৩৪ জন, খাগড়াছড়ি জেলা হতে ৩৪ জন এবং বান্দরবান জেলা হতে ২২ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। আবার ১০০ আসনের মধ্যে মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ, উপজাতীয়দের জন্য ৫ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা পোষ্যদের জন্য ২ শতাংশ হারে সংরক্ষিত রেখে সাধারণ মেধা কোটায় ৮৩ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয় প্রতি বছর। ইনষ্টিটিউটের পৃথক দুটি আবাসিক হোস্টেলে ৮৮ জন ছাত্র এবং ৪৪ জন ছাত্রীর আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। এদিকে কৃষি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৬ বছরে ১ জন এবং ১জন কর্মচারীও নিয়োগ করতে পারেনি। কৃষি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং চট্রগ্রাম থেকে আসা প্রশিক্ষকরা ক্লাশ করান তাদের মাস শেষে যৎসামান্য সম্মানী দেয়া হয়। শিক্ষক ও কর্মচারী সংকটে এবং সরকারী স্বীকৃতি না পাওয়ায় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকট, পানি,যাতায়ত, লাইব্রেরী না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবী জানিয়েছেন। প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউটের আবাসিক হোষ্টেল ঘুরে দেখা গেছে সেখানে ময়লা আর্বজনা দুর্গন্ধ হয়ে পড়ছে হোষ্টেলের আবাসিক কক্ষগুলো বাথরুমের অবস্থা খুবই খারাপ। ডাইনিং টেবিল এবং কিচেন রুম এত নোংরা যে খাওয়ার পরিবেশ নেই। শিক্ষার্থীরা নিজ শয়ন রুমে গিয়ে খাবার খায়।
এ প্রসঙ্গে আবাসিক হোষ্টেলের ছাত্র প্রনয় মারমা বলেন হোষ্টেলে খাবার পানির অভাবে আমাদেরকে প্রায় সময় খাবার পানি আনতে অনেক দুরে গ্রামে যেতে হয়। হোষ্টেলটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এখানে প্রচুর জনবলের অভাব রয়েছে। ইনষ্টিটিউটের শেষ বর্ষের ছাত্র সোহেল রানা জানান, এখানে নানাবিধ সমস্যা আছে।এ কলেজে যাতায়াতের সমস্যাটা খুবই করুন। এখানে টিউবওয়লের যে পানি রয়েছে তার গুনগত মান নিম্নমানের যা পান করার অযোগ্য। আমাদের এখানে নিজস্ব কোন ক্যান্টিন নেই। এখানে লাইব্রেরী আছে, কিন্তু কোন লাইব্রেরীয়ান নাই। শিক্ষার কাজে ব্যবহার করা যায় এই রকম প্রচুর সরঞ্জাম আছে কিন্তু এগুলো দেখাশোনা করার জন্য কোন লোকবলের অভাব রয়েছে। এসব সমস্যার কারনে অন্যান্য ইনষ্টিটিউটের তুলনায় এখানে শিক্ষার গুনগত মান খুব কম । এ প্রসঙ্গে ইনষ্টিটিউটের ছাত্রী শাহিদা সুলতানা বলেন- এখানে আমাদের যে পরিমান মৌখিক এবং প্রাকটিক্যাল ক্লাস হওয়া প্রয়োজন ওই পরিমানে ক্লাস এখানে হচ্ছে না। এখানে মাঠ পর্যায়ে আমাদেরকে কোন প্রশিক্ষনও দেয়া হয় না।
রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউট ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নরেশ চন্দ্র বাড়ই জানান, আমরা মন্ত্রনালয় থেকে গত জুন মাসে চিঠি পেয়েছি কৃষ্টি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউটকে রাজস্ব খাতে হস্তান্তর করার। ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৪জন শিক্ষক যোগ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি রাজস্ব খাতে গেলে সব সমস্যার সমাধান হবে।