শিরোনামঃ

কোটি ভক্তকে চোখের জলে ভাসিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব থেকে বিদায় নিলেন ভারত রত্ন শচীন টেন্ডুলকার

সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। ক্রিকেট বিশ্বের কোটি ভক্তকে চোখের জলে ভাসিয়ে বিদায় নিলেন ক্রিকেটার ভারত রত্ন শচীন টেন্ডুলকার। মাঠে যখন বিদায়ী বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন ষ্টেডিয়ামে উপস্থিত তার ভক্ত অনুরাগী চোখের ফেলেছেন। আর বিদায়ী দিনে ভারত সরকার ঘোষনা করেছে শচীন টেন্ডুলকারকে ভারত রত্ন পুরস্কারে।Sochin tenduloker

দুই যুগের বেশি সময় ধরে বোলারদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়া টেন্ডুলকার আজ নিজেই কেঁপে উঠলেন। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠেই কথা বলা শুরু করলেন। কিন্তু পারলেন না। ভক্তদের মুহুর্মুহু করতালিতে আটকে গেল তাঁর কথা। বেরিয়ে এল তাঁর ভেতরের চিত্রটা। টেন্ডুলকার বললেন, ‘আপনারা এমন করলে আমি আরও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ব।’ বারবার কণ্ঠ ভেঙে আসছিল ক্রিকেট কিংবদন্তির। গলা শুকিয়ে আসছিল। কথা আটকে যাচ্ছিল বলে বেশ কয়েকবার পানিও খেলেন। এর মধ্যেই বলে গেলেন নিজের কথা। তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে যাঁদের অবদান রয়েছে, তাঁদের সবার নামের তালিকা ছিল টেন্ডুলকারের হাতে। কেউ যেন বাদ পড়ে না যায়!

টেন্ডুলকার শুরুটা করেন বাবা রমেশ টেন্ডুলকারকে স্মরণ করে। ১৯৯৯ সালে তাঁকে হারিয়েছেন। লিটল মাস্টার জানান, প্রতিমুহূর্তই বাবাকে অনুভব করেন তিনি। এরপর একে একে পরিবারের সব সদস্য, বন্ধুবান্ধব, কোচ, সাবেক ও বর্তমান সতীর্থ, ফিজিও, চিকিত্সক মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড—সবার অবদান স্বীকার করেন টেন্ডুলকার। সবশেষে ধন্যবাদ দেন গোটা বিশ্বে তাঁর ভক্তদের। জানান, ভক্তদের ভালোবাসার কারণেই এ পর্যায়ে আসতে পেরেছেন তিনি।sachin

বিদায়ী বক্তৃতায় বাবার প্রসঙ্গ তুলে যথেষ্টই আপ্লুত টেন্ডুলকার। ১৯৯৯ সালে বাবাকে হারানোর পর থেকে প্রতিটি পদক্ষেপেই যে তিনি তাঁর প্রয়াত বাবাকে অনুভব করেন, সেটা জানিয়েছেন তিনি। বলতে ভোলেননি প্রতিটি বড় ইনিংস খেলার পর আকাশের দিকে তাকিয়ে বাবাকে খোঁজার ওই মুহূর্তর কথা।

বিদায় বক্তৃতাটা আবেগে আপ্লুত হয়ে শুনেছেন ওয়াংখেড়ের দর্শকেরা। আবেগে আপ্লুত টেলিভিশনের সামনে বসা লাখোকোটি দর্শকেরাও। ক্রিকেট মাঠের গ্রেট আজ তাঁর বিদায় অনুষ্ঠানেও প্রমাণ করে দিয়ে গেলেন মানুষ হিসেবেও তিনি কত বড়!

এদিকে ক্রিকেটের বিদায় দিনে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শচীন টেন্ডুলকারকে ভারত রত্ন উপাধিতে ভুষিত করার। এই প্রথম কোনো ক্রীড়াবিদ পাচ্ছেন দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব।

ভারতের প্রায় সব কটি বেসামরিক পুরস্কারই উঠেছে টেন্ডুলকারের হাতে। ‘পদ্মশ্রী’, ‘পদ্মভূষণ’, ‘মহারাষ্ট্র ভূষণ’, ‘খেলরত্ন’—সবই পাওয়া হয়েছে লিটল মাস্টারের। বাদ ছিল শুধু ‘ভারতরত্ন’টাই। সেই অপূর্ণতাটাও দূর হয়ে গেল বিদায়বেলায়। মুম্বাইয়ে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টটা শেষ হওয়ার পরপরই টেন্ডুলকারকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার।

১৯৫৪ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪১ জন পেয়েছেন এই ‘ভারতরত্ন’ খেতাব। তবে তাঁদের কেউই খেলাধুলা জগতের মানুষ ছিলেন না। গত বছর ক্যারিয়ারের শততম সেঞ্চুরিটি করার পর জোরেশোরেই উঠেছিল টেন্ডুলকারকে ভারতরত্ন খেতাবে ভূষিত করার দাবি। সম্প্রতি সেটাই সবাইকে আবার মনে করিয়ে দিয়েছিলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের জন্য শচীন যা করেছে, সেটা খুব কম মানুষই করতে পারে। সে এই সম্মান পাওয়ার দাবি রাখে। সে আমাদের সবাইকে গর্বিত করেছে।’

 

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 352 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen