নুরুচ্ছাফা মানিক, সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। পৌষের মাঝামাঝি সময় থেকে পাহাড়ে পাহাড়ে ফুটতে শুরু করে ঝাঁড়ু ফুল। প্রতিবছরের মতো খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ঝাঁড়ু ফুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। কম সময়ের মধ্যে ফুল সংগ্রহ ও শুকাতে হয় বিধায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন খাগড়াছড়ির ঝাঁড়ু ফুল ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী করা হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, কুমিল্লা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে করে পাহাড়ের বনে ফোটা ঝাঁড়ু ফুল অবদান রাখছে জাতীয় অর্থনীতিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, পৌষের মাঝামাঝি সময় থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত ঝাঁড়ু ফুল ফোটা ও সংগ্রহের সময়। কম সময়ের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা না হলে ফুলের দগায় বীজ ফুটতে শুরু হয়। তখন এটি ব্যবহার উপযোগী থাকে না। তাই মাঘের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ঝাঁড়ু ফুল সংগ্রহ করতে হয়। ভাল করে শুকিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ঝাঁড়ু ফুল ব্যবহার করা হচ্ছে পাহাড়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
প্রাকৃতিক ভাবে ঝাঁড়ু ফুল ফোটায় কী পরিমাণ ও কত পরিবার এ পেশার সাথে জড়িত তার কোন সঠিক তথ্য কৃষি বিভাগের কাছে নাই।
জেলা সদরের খবংপুড়িয়া এলাকার বিলে ঝাঁড়ু ফুল শুকানো কাজে ব্যস্ত কয়েকজন শ্রমিক। তাদের মধ্যে মনু মিয়া ও চাইøহা মার্মার সাথে কথা বলে জানা যায়, দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিতে তারা ঝাঁড়ু ফুল শুকানোর কাজ করছে। প্রতিদিন সকালে বিলের ফুলগুলো শুকাতে দেয়া হয় এবং বিকেলে কুড়িয়ে নেয়ায় তাদের কাজ।
ঝাঁড়ু ফুল ব্যবসায়ী মো: সরোয়ার ও মঞ্জুরুল আলম জানান, মৌসুমী ব্যবসা হলেও দীর্ঘ মেয়াদে এ ব্যবসায় মূলধন বিনিয়োগ করতে হয়। ফুল সংগ্রহ করতে পাহাড়ীদের অগ্রীম টাকা দিয়ে রাখতে হয়। এছাড়া কাঁচা ফুল শুকাতে ৭-১০ দিন সময় লাগে। তখন শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে খুব বেশী মুনাফা করতে পারিনা।
ইব্রাহিম খলিল নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, খাগড়াছড়ির চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার আড়ৎরা এখান থেকে ঝাঁড়ু ফুল নিচ্ছেন। প্রতি গাড়ী থেকে বন বিভাগকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা রাজস্ব দিতে হয়। কিন্তু বৈধ ভাবে ব্যবসা করলেও সড়ক পথে পরিবহনের সময় চাঁদা গুণতে হওয়ায় খরচ বেশী পড়ে যাচ্ছে। এতে করে কাঙ্খিত মুনাফা পাচ্ছিনা।