সিএইচটি টুডে ডট কম, জুরাছড়ি (রাঙামাটি)। নদীর দুই পাড়ে উপচে পড়া দর্শক। ইঞ্জিন চালিত বোট ও নৌকা নিয়ে নদীতেও মানুষের উপস্থিতি। কোন কোন নৌকায় উচ্চ শব্দে বাজছিল গন। দর্শকদের টান টান উত্তেজনার মধ্যেই বাইচের নৌকার মাঝিরা হাঁক দিলেন হেঁইয়ো রে হেঁইয়ো। দর্শকদেরহ হর্ষধ্বনি আর হাততালি বাড়তি উৎসাহ জোগাল নৌকাগুলোকে।
শান্তি-সম্প্রীতি-উন্নয়ন মূল মন্ত্রে সোমবার রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে নৌকা-বাইচ। জুরাছড়ি জোনের আর্দশ একুশ এর ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সেনা বাহিনীর আয়োজিত নৌকা বাইচ দেখতে শত শত নারী পুরুষের ঢল নামে। কেউ নৌকা, কেউ বা বোটে করে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসেন।
প্রতিযোগীতা উপজেলা দোকান ঘাট থেকে শুরু হয়ে জোনে হেলিপেটের ঘাটে এসে শেষ হয়। রাঙামাটি সদর, জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা ১০টি নৌকা অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিযোগীতায় জুরাছড়ি উপজেলার কতরখাইয়া গ্রামের দলের নৌকা প্রথম স্থান অধিকার করে। বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়ন থেকে আসা দলের নৌকা দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান লাভ করে রাঙামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের রাজ মুনি পাড়া দলের নৌকা।
জুরাছড়ি জোন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল কে এম ওবায়েদুল হকের সভাপতিত্বে বিজয়ীদের মাধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন রাঙামাটি রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সানাউল হক। এ সময় মেজর মোরশেদ, বনযোগীছড়া চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা, স্থানীয় হেডম্যান করুনা ময় চাকমা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমাসহ সেনা বাহিনীর পদস্থ্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ কালে রাঙামাটি রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সানাউল হক বলেন, নৌকা বাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেলা। যুগে যুগে গ্রাম বাংলায় এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। নৌকা বাইচ মানুষের জনপ্রিয় খেলা হিসেবে বিনোদন প্রদান করে। এ খেলাকে কেন্দ্র করে গ্রাম বাংলার সকল মানুষ একত্রে মিলিত হয়। এলাকায় বিনোদনের মাধ্যমে শান্তি সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সেনা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য আদর্শ একুশ এর ৪১তম প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী উপলক্ষে যক্ষা বাজার ও জোন সদর দপ্তরে স্থানীয় হেডম্যান কার্ব্বারী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে প্রীতি ভোজন অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা সেনা বাহিনী ও স্থানীয় আদিবাসী শিল্পীদের যোথ প্রয়াসে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।