কৌশিক দাশ, সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। ফুটবলকে ভালবেসে স্বল্প সময়ে চষে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত। যে মাঠেই খেলেছেন দুর্দান্ত খেলার মাধ্যমে সবার নজর কেড়েছেন। সম্ভাবনাময় এ তরুন ইতিমধ্যেই এবারের প্রিমিয়ার লীগে চট্টগ্রাম মোহামেডানের হয়ে খেলার ডাক পেয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলকে তার ভাললাগা। নিজ উপজেলা ছাড়িয়ে জেলা, বিভাগ ও প্রথম শ্রেণীর লীগে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন। বলছিলাম উসাই মং মার্মা ছোট’র কথা। পার্বত্য বান্দরবানের ফুটবল অঙ্গনে নতুন এক প্রতিভার নাম। যার ধ্যান, জ্ঞান, চিন্তায় শুধুই ফুটবল। ছিলাম খেলা পাগল। সব খেলোয়াড়ের মত সেও স্বপ্ন দেখে ফুটবল খেলে দেশের জন্য কিছু বয়ে আনবে।
গ্রামের মাঠে ছোটবেলা থেকেই তাঁর ফুটবল খেলার নৈপুণ্য ফুটে উঠে। এরপর থেকে বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন বিভিন্ন টুর্ণামেন্টে। কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন প্রতিটি খেলায়। আক্রমণভাগে বিপক্ষ দলের জাল ভেঙ্গে ব্যবধান গড়ে দিতে যার শিল্প নৈপুণ্য বিপক্ষ দলের রক্ষণভাগের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় উসাই মং মার্মা।
পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের ধুংরী হেডম্যান পাড়ায় ১৯৯৪ সনে জম্ম গ্রহণ করেন উসাই মং মার্মা ছোট। পিতা মংওয়াই মার্মা। গ্রামের বড় ভাই হোসাইন এর সব চেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা নিয়ে ফুটবলে খেলার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন রামুর সাবেক কৃতি ফুটবলার জ্যেতির্ময় বড়–য়া মঙ্গলের কাছ থেকে। কোচ হিসেবে শুধু প্রশিক্ষণে সীমাব্ধ ছিলেন না তিনি, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার জন্য একটি সুযোগও করে দিয়েছেন উসাই মংকে। বর্তমানে উসাই মং অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র।
উসাই মং মার্মা ছোট তার স্বপ্ন নিয়ে বলেন- ছোটবেলায় বাড়ির সামনে স্কুলের খেলার মাঠে বড়দের প্র্যাকটিস দেখে বড় ভাই হোসাইনের পরামর্শে ফুটবল খেলায় জড়িয়ে পড়ি। এলাকার বড় ভাইদের সাথে খেলতে যেতাম বিভিন্ন জেলায়। যখনই খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামি সেরা পারফর্মের মাধ্যমে দলের জয় ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে মোহামেডানের হয়ে খেলার সুযোগ করে দেওয়ায় তার ফুটবল শিক্ষা জ্যের্তিময় বড়–য়া মঙ্গলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং প্রিমিয়ারলীগে ভালো খেলা উপহার দিয়ে আগামীতে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেন।
উসাই মং কে নিয়ে খোদ স্বপ্ন দেখেন সাবেক ফুটবলার জ্যোর্তিময় বড়–য়া মঙ্গল। তার উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথাই জানালেন তিনি। উসাই মংকে নিয়ে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন- ‘ওর ভেতরে অনেক কিছু আছে, যা আশাবাদী করে’। সে একজন প্রতিভাবান ফুটবলার, তার স্কিল, ড্রিবলিং এবং পজিশন সেন্স খুুবই ভাল। সবচেয়ে বড় কথা গোল করার যে স্পৃহা বা জিদ তার কাছে সেটা অনেক বেশী। এটাই তাকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের বর্তমান ফুটবলের প্রেক্ষাপটে একজন ভাল গোলদাতার খুুবই অভাব। আমার মনে হয় বাংলাদেশ একজন ভাল স্ট্রাইকার পেতে যাচ্ছে।
এদিকে উসাই মং মার্মা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে চট্টগ্রাম মোহামেডানের হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার শুভাকাঙ্খীদের মাঝে আনন্দ উল্লাস লক্ষ্য করা যায়। দুর্ভাগ্যক্রমে পর্দার অন্তরালে থাকা উসাই মং আগামীতে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাবে এমনটি প্রত্যাশা করে এলাকার সর্বত্র মিষ্টি বিতরণ করেছেন তারা।