কাউখালী প্রতিনিধি।
সিএইচটি টু ডে ডট কম। রাঙামাটি জেলার কাউখালী থেকে নাইল্যাছড়ি-তারাবুনিয়া হয়ে সুগারমিল পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা। যানবাহন চলাচল করছে মারাতœক ঝুঁকি নিয়ে। র্দুঘটনা ও ঘটছে প্রতিনয়ত। সড়কটির মালিকানা নিয়ে একাধিক কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানি,ধারণক্ষমতার দ্বিগুন ইট বোঝাই ট্রাক চলাচল এবং সর্বোপরি অপরিকল্পিত ও বিক্ষিপ্তভাবে সামঞ্জস্যহীন সংস্কার করার কারণে এমন দুরাবস্থা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে,এসড়কে জনদুর্ভোগর বিভিন্ন চিত্র। কাউখালী থেকে নাইল্যাছড়ি-তারাবুনিয়া হয়ে সুগারমিল পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়ক খানা খন্দকে ভরে গেছে। পিচ ঢালাই বিটুমিন এমনকি কংকর উঠে গিয়ে মুল সড়কের মাটি পর্যন্ত বেরিয়ে এসেছে। ফলে পুরো সড়কেই সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। কোথাও কোথাও এই গর্তের পরিধি ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই গর্তগুলো পানিতে ভরে যায়। এর ফলে গর্ত গুলো ঢেকে গিয়ে যানবাহন মারাতœক দূর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। আবার সড়কের অনেকাংশেই দেবে গিয়ে মূল সড়কের লেভেল থেকে নিচু হয়ে গেছে।
সড়কটির এমন দুরাবস্থা কেনো হলো এর অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, কাউখালী-সুগারমিল সড়কটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙামাটি জেলা পরিষদ এবং কাউখালী এলজিইডি উন্নয়ন, নির্মাণ ও সংস্কার করে আসছে। এর ফলে কখনো জেলা পরিষদ আবার কখনো বা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কিংবা কাউখালী এলজিইডি সংস্কার করেছে। সড়কটি এককভাবে এলজিইডির অধীনে থাকলেও সমন্বয়হীনতার কারণে বিক্ষিপ্তভাবে সামঞ্জস্যহীন সংস্কার করার ঘটনা ঘটেছে। আবার কখনো এই তিন প্রতিষ্ঠানই পরস্পর সড়ক মেরামত করবে ভেবে কেউই মেরামত করছে না।
রাঙামাটিস্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ইতিপুর্বে ২ কিলোমিটার সড়কের গর্ত গুলো সিমেন্ট দিয়ে মেরামত করেছে। যা ঐ সড়কের নির্মাণ কাজের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন ছিল না। অন্যদিকে নাইল্যাছড়ি দক্ষিণ মাথা থেকে তারাবুনিয়া ভরণছড়ি সেতু পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া উপজেলার অংশে পড়ায় নতুন নির্মানের পর থেকে একবার ও সংস্কার কিংবা মেরামত করা হয়নি।
সুগারমিল সড়কে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন (৩৫) জানান, দোকানে কোনো মালামাল রাখা যায় না। বৃষ্টি না থাকলে লালচে ধুলোর আস্তরণ পড়ে যায় আবার বৃষ্টি আসলে হাঁটু পানিতে সড়ক তলিয়ে যায়। পাঁচ বছর আগে সড়ক পাকা হয়েছে। এরপর একবার সংস্কার করা হলেও গত বর্ষায় এই সড়কের বিভিন্ন অংশ আবারো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান সড়ক বিধ্বস্ত থাকায় রিকশায় ১০ টাকার ভাড়া ২৫ টাকা নিচ্ছেন চালকেরা। অত্যধিক হারে চাকা পাংচার কিংবা ফেটে যাওয়ার কারণে তাও সবসময় রিকশা পাওয়া যায় না। ফলে জনসাধারণের বিশেষত নারী ও শিশুদের পায়ে হেটে গন্তব্যে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না।
সড়কটি সংস্কারে আশার বাণীও শুনাতে পারলেন না কাউখালী এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, আরো কিছুদিন কষ্ট করতে হবে। নতুন কোন প্রজেক্ট না আসা পর্যন্ত সড়ক মেরামতের কাজে হাত দেয়া হচ্ছেনা। তিনি জানান, ঐ সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে সাধারণত ১০ থেকে ১২টন ওজনের ভারী যান চলাচল করার জন্য কিন্তু প্রতিনিয়ত ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার ইট বোঝাই ট্রাক চলাচল করছে এ সড়ক দিয়ে। তখন ইটসহ ট্রাকের ওজন দাড়াচ্ছে ২০ থেকে ২২ টন। ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।