সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় ওরফে সন্তু লারমা সরকারকে আবারো পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সময় সুচী ভিত্তিক রোড ম্যাপ ঘোষনার আহবান জানিয়েছেন, অন্যথায় ১লা মে থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ যে কোন কঠিন আন্দোলন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়তে প্রস্তুত আছে বলে হুশিয়ারি উচ্ছারন করেছেন।
শুক্রবার সকালে বান্দরবান সদরের অদূরে ফারুকপাড়াঁ কমিউনিটি হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সম্মেলন ও কাউন্সিলের উদ্বোধন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
জুম্ম জনগণের বিরুদ্বে সকল রাষ্টীয় আগ্রাসন রুখে দাড়ান ,“পার্বত্য চট্রগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে অসহযোগ আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন” এ শ্লোগানকে সামনে রেখে বান্দরবানে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ১৬ তম বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
বান্দরবান পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি মংস্তু মারমার সভাপতিত্বে সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় নেতা কে এস মং, শক্তিপদ ত্রিপুরাসহ তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন শাখা সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।
সরকারের উদ্দেশে সন্তু লারমা আরো বলেন, আমরা আগে বলে দিয়েছি আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সময়সূচিভিত্তিক পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করা না হলে ১ মে থেকে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে যেতে বাধ্য জুম্ম জনগণ। আমরা আশা করি সরকার এগিয়ে আসবে। এখনও সময় আছে। অচিরেই চুক্তি বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। আমরা কঠিন বাস্তবতার দিকে যেতে চাই না। কিন্তু সরকার এগিয়ে না এলে জুম্ম জনগণকে যে কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে যেতে বাধ্য হতে হবে। কাজেই আমাদের সেই পরিস্থিতিতে যেতে বাধ্য করবেন না। আমরা সংখ্যায় কম। কিন্তু অধিকারের জন্য মৃত্যুকে জয় করেছি। মৃত্যুকে ভয় পাই না। কারণ অধিকার ছাড়া মৃত বেঁচে থেকে কোনো লাভ নেই। জনসংহতি সমিতির জন্ম জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে। এ পর্যন্ত অনেক কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এসেছি। আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়ব।
সরকারের কর্মকান্ডে তীব্র সমালোচনা করে সন্তু লারমা বলেন, শাসকগোষ্ঠী এখনও ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলের আদলে পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণের ওপর শাসন নিপীড়ন, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে ইসলামি অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক শাসন উপস্থিতি ও সেনা কর্তৃত্ব বজায় রাখা হয়েছে। এ সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে চায় না। এজন্য আন্তরিক নয়। কোনো সদিচ্ছা নেই। সরকার শুধু জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব ধংস করে দিতে মরিয়া। শাসকগোষ্ঠীর মদদে পার্বত্য চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফের জন্ম। ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসে মেতেছে। অথচ সরকার নির্বিকার। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে জুম্ম জনগণকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ ও তাদের অস্তিত্ব বিলোপ করে দিয়ে ইসলামি সম্প্রসারণ ঘটাতে চায় সরকার।