সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আর্ন্তজাতিক কমিশনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় ওরফে সন্তু লারমার সাথে বৈঠক করেছেন। শুক্রবার বিকালে তারা আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
সিএইচটি কমিশনের সদস্যরা রাঙামাটি সফর বাতিল করেছে এমন তথ্যর ভিত্তিতে ৬টি বাঙ্গালী সংগঠনের ডাকা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়ার পর কমিশন সদস্যরা চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি আসেন।
আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকের সময় কমিশনের কো চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ও টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখায়রুজ্জামান, ব্যারিষ্টার সারা হোসেন, খুশী কবীর, কমিশনের সদস্য ড. স্বপন আদনান, ও কমিশনের বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েটের সমন্বয়কারী হানা শামস আহমেদ।
বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধি প্রিয় ওরফে সন্তু লারমা অভিযোগ করেছেন, সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অগ্রসর না করে চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। চুক্তি যাতে বাস্তবায়ন না হয় সে জন্য সরকারের ভিতর থাক্ াচুক্তি বিরোধীরা নানা তৎপরতা চালাচ্ছে।
জেলা পরিষদ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি বিষয়ে সন্তু লারমা অভিযোগ করেন, চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদের সাথে আলোচনা করে আইন সংশোধন করার কথা থাকলেও সরকার পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদকে পাশ কাটিয়ে জেলা পরিষদ সদস্য সংখ্যা ৫ থেকে ১১ করার জন্য সংসদে বিল উপস্থাপন করেছে যা চুক্তি লংঘনের সামিল।
তিনি বলেন সদস্য সংখ্যা বাড়ালে জেলা পরিষদগুলোর দুর্নীতি কমবে না বা সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে না প্রয়োজন চুক্তি অনুযায়ী স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রনয়ন করে নির্বাচন দেয়া।
সন্তু লারমা আরো জানান, সরকার চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কার্যকর এবং প্রবিধানমালা প্রনয়ন করেনি। সরকার আঞ্চলিক পরিষদকে কার্যত: অকার্যকর করে রেখেছে।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভুমি কমিশনকে সরকার অকার্যকর রেখেছে অভিযোগ করে বলেন,দীর্ঘ ২ বছরেও ভুমি কমিশন চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়নি। তিনি কমিশন সদস্যদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং আন্ত:মন্ত্রনালয় কর্তৃক সংশোধিত ভুমি কমিশন আইন সংসদে পাস না করে সরকার নিজেদের মন গড়া আইন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সন্তু লারমা ইউপিডিএফকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে এরা সন্ত্রাস চাদাবাজি চালালে সরকার বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করার দাবী জানান।
সন্তু লারমা সিএইচটি কমিশনের সদস্যদের জানান, জনসংহতি সমিতি মেডিকেল কলেজ বাপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে নয়, কিন্তু এখানকার বাস্তবতা হলো বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আগে এখানকার প্রাথমিক পর্যায় থেকে কলেজ পর্যন্ত যে বিরাজমান সংকট রয়েছে সেগুলো দুর করতে হবে। এখানকার ছাত্রদের আগে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার মত যোগ্য করে তুলতে হবে তারপরে বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল স্থাপন করলে জনগনের উপকারে আসবে।
তিনি আরো বলেন, কাপ্তাই বাধের সময় এখানকার জনগনকে নানা প্রতিশ্র“তি দিলেও কোনটাই সরকার রক্ষা করেনি বরং কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বড় প্রকল্পগুলো জুম্ম জনগনের মরন ফাদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। জুম্ম জনগন আর প্রতারিত হতে চায় না।