রফিকুল আলম,সিএইচটি টুডে ডট কম,বান্দরবান। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রাবার চাষে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী হয়ে উঠতে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ৮০’র দশক থেকে বিভিন্ন বহুজাতিক ও ব্যক্তিমালিকানায় গড়ে তোলা রাবার বাগান এখন ব্যবসায়িকভাবে লাভের মুখ দেখছে। নাইক্ষ্যংছড়ির রাবার শিল্প সম্ভাবনাময় হওয়ায় স্থানীয়রা এখানকার উৎপাদিত রাবার ল্যাটেক্স’কে তরল ‘সাদা সোনা’ বলে আখ্যায়িত করেন। এখানকার উৎপাদিত রাবার দেশীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
উপজেলাটির মোট ৪৫ হাজার ২৩০ একর বনভূমির মধ্যে ১৩টি মৌজায় ৪শত ৩১ জন মালিক প্রায় ১০ হাজার ৫শত একরের বেশি পাহাড়ি এলাকাজুড়ে রাবার বাগান গড়ে তুলেছেন। প্রতিজন মালিকের ২৫ একর জমির জন্য তিন হাজার ৭শত ৫০ টাকা লিজের কিস্তির হার নির্ধারণপূর্বক বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ৪০ বছর মেয়াদে এসব বাগান লিজ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় মৌজা হেডম্যানও উল্লেখিত রাবার বাগান থেকে মোটা অংকের রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকের লীজের বাইরেও এ উপজেলায় সম্প্রতি স্থানীয়রা খন্ড খন্ড ভাবে আরও প্রায় ৬ হাজার একর পাহাড়ি এলাকায় রাবার চাষ করছে। নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন বাগান শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চারা লাগানোর ৭ বছর পর থেকে রাবার উৎপাদন শুরু করা যায়। প্রতিটি গাছে উৎপাদনের প্রথম থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট হারে রাবার উৎপাদন হয়। আর প্রতি গাছ থেকে গড়ে বার্ষিক ১২ কেজি ল্যাটেক্স ( সাদা কষ) পাওয়া যায় প্রতি কেজি ‘গ্রেড-১’ রাবার ২৫০ থেকে ৩৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বহুজাতিক কোম্পানি ও ব্যক্তিমালিকানায় বিগত ২০১১ সালের হিসাব মতে প্রায় ১০ হাজার ৫৬৭ একর লিজের রাবার বাগান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে মৌজা অনুপাতে বাইশারীতে ২ হাজার ৫০ একর, তুমব্র“ ১ হাজার ২শ ৬৭ , আলিক্ষং ২ হাজার ২শত, ঈদগড়ে ১ হাজার ৩ শত৫০ , নাইক্ষ্যংছড়ি ১ হাজার ৯শ ২৫ , দোছড়ি ৪শ, বাঁকখালী ৩শ , রেজু ১শ৭৫ , ঘুমধুম ৪শ ৫০ , জারুলিয়া ২শ , ভালুকখাইয়া ১শ১৫ , খোয়াইঝিরি ৫০ একর ও পাগলী মৌজায় ৭৫ একর। এসব বাগানের পরিচর্যা ও পরিচালনায় নিয়োজিত আছে প্রায় ৩ হাজারের অধিক রাবার শ্রমিক।
রাবার বাগান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া খাতুন ও রাবার প্লানটেশনের মালিক শাহ সিরাজুর রহমান সজল বলেন, উপজেলায় রাবার শিল্প আরও গতিশীল করার জন্য রাবার বাগানের ধুমঘরগুলো আরও আধুনিকীকরণ, চুরি ও পাচার থেকে রাবার সেক্টরকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। তাহলে অত্র এলাকার রাবার শিল্প বিকাশে সহায়ক হবে।