ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/ তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ/ তোর সোনাদানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ/ দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ/ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/ আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে/ যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ/ ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ… কাল সোমবার ঈদ। সারাদেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর মদিনাতে হিজরতের অব্যবহিত পরই সংযম আর আনন্দের প্রতীক পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উৎসব শুরু হয়। সৃষ্টি হয় সংযম আর সম্প্রীতির বৈষম্যমুক্ত এক নতুন মূল্যবোধের। প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘চাঁদ দেখে রোজা পালন এবং চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করবে। চান্দ্র মাস ২৯ দিনে হয়, আবার ৩০ দিনেও হয়। এবছর বাংলাদেশে ২৯ রোজা পালন করা হয়।
পবিত্র কোরআন নাজিল ও মাগফিরাতের মাস রমজান শেষে ঈদের চাঁদ দেখামাত্র ছোট-বড়, ধনী-গরিব প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে বইবে আনন্দের ঝরনাধারা। ঈদের দিন সকালে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব মুসলমান এক কাতারে ঈদের নামাজ আদায় শেষে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। কোলাকুলি আর ফিরনি সেমাই খাওয়ার ধুম থেকে বাদ যাবে না কেউই।
রাঙামাটিতে এবার শোকাবহ পরিবেশে ঈদ
শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করে কাল সোমবার রাঙামাটিতে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পালন করবে মুসলিম সম্প্রদায়। গত ১৩ জুন রাঙামাটিতে প্রবল বর্ষণে ও পাহাড় ধব্বসে মাটি চাপা পড়ে মারা যায় ১২০জন। ভুমি ধব্বসের ঘটনায় এমনও করুন কাহিনী রয়েছে যার মধ্যে দুধের শিশু বেঁচে গেছে, কিন্তু মাটি চাপা পড়ে মারা গেছে বাবা-মা। অভিভাবক এখন বড় বোন যার বয়স ৬ বছর। আবার বাবা, মা, মেয়ে তিন জনই মারা গেছে বেঁচে আছে শুধু ছেলে। এমনই মর্মস্পর্শী অসংখ্য ঘটনার জন্ম দিয়েছে রাঙামাটির পাহাড় ধস। ছয় বছরের এই ছোট্ট জীবনেই মিম বুঝে গেছে তার শৈশব আর কখনই রঙিন হবে না। হয়তো মেনেও নিয়েছে নিজের নিয়তি। বাবা, মামা দুজনেই হাড়িয়ে গেছে পাহাড়ের মাটিতে। কিন্তু রেখে গেছে বিরাট দায়িত্ব। ছোট বোন সুমাইয়ার বয়স মাত্র ১৭ মাস। এ দুনিয়ায় সে ছাড়া তার আর কেউ নেই। তার এই অপলক দৃষ্টি বোঝার ক্ষমতা কারো নেই। কিন্তু এটুকু বোঝা যায়, এই নিস্তব্ধতা অভিশাপের চেয়েও ভয়ংকর।
আরেকটি যাতে প্রানহানির ঘটনা না ঘটে সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাঙামাটি শহরে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে, সেখানে এখন ৮শ পরিবারের ৩,৫০০ জন সদস্য অবস্থান করছেন। তাদের জন্য জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনী ঈদের কাপড় দিয়েছে, কাল ঈদের দিন সেমাই সহ দুবেলা পোলাও মাংস দেয়া হবে, কিন্তু বাসায় খাওয়ার যে তৃপ্তি সেটি হয়ত তারা পাবেন না। প্রকৃতির ভয়ানক ভুমি ধব্বস তাদের জীবনের শেষ সম্বলটুকু কেড়ে নিয়েছে তারা কোথায় যাবেন, কি করবেন, কতদিন আশ্রয় কেন্দ্রে থাকবেন তারও হিসাব নেই।
তবুও শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করে রাঙামাটিবাসী এবার পালন করবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। পবিত্র ঈদুল ফিতর জাতি, ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে সকলের মাঝে নিয়ে আসুক সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি। পবিত্র ঈদুল ফিতর হোক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধন। সবাইকে পাহাড়ের জনপ্রিয় অনলাইন সিএইচটি টুডে ডট কম পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। “ঈদ মোবারক”।