সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি।
রাঙামাটিতে বেড়াতে এসে হোটেলের কর্মচারীদের লালসার স্বীকার হয়ে গণধর্ষন ও বেদম মারধরের শিকার হয়েছেন নব বিবাহিত স্বামী-স্ত্রী।
পরিবারের অমতে বিয়ে করে বড় ভাইয়ের মারধরের ভয়ে প্রেম করে বিয়ে করা নিজের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে রাঙামাটিতে এসেও শেষ রা হলো না। সাতজন নর পিশাচের হাতুরি পেটা ও ছুরির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে আমার স্ত্রীকে। এমনইভাবে কথাগুলো বলে হাউমাউ করে কেদেঁ উঠলেন নির্মম এই ঘটনার শিকার চট্টগ্রামের ছেলে সাইফুদ্দিন লিটন।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় বসে ২৬ বছর বয়সী চট্রগ্রামের ছেলে সাইফুদ্দীন লিটন জানান, বিগত প্রায় ১৭ দিন আগে নিজের বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে পর্যটন শহর রাঙামাটিতে আসেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পর্যটন এই শহরে কিছুদিন বেড়িয়ে নিজেদের নব বিবাহিত জীবনকে স্মৃতিময় করে রাখার। আর তাই শহরে গাড়ি থেকে নেমেই রাত্রীযাপনের জন্য ওঠেন স্থানীয় আবাসিক হোটেল পাহাড়িকায়।
এই হোটেলে থেকেই তারা ঘুরে দেখে রাঙামাটি শহর ঘুরে দেখেছে। বৃহস্পতিবার রাত একটার সময় হঠাৎ করেই জরুরি কথা আছে বলে রুমের দরজায় নক করতে থাকে আবাসিক হোটেল পাহাড়িকার ম্যানেজার আশিষ ওরফে আশু। ম্যানেজারের পরিচিতি কন্ঠ শুনে রুমের দরজা খুলে দেন সাইফুদ্দিন লিটন।
এসময় তিনি দেখতে পান হোটেল ম্যানেজারের সাথে আরো ছয়জন যুবক রুমে প্রবেশ করে তাদের স্বামী-স্ত্রীকে ঘিরে ধরে ফেলে। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই হোটেল ম্যানেজার আশু নিজের হাতে থাকে লোহার হাতুরি দিয়ে মাথার পেছন দিক থেকে সজোরে আঘাত করে।
এসময় তাকে ধরার চেষ্টা করলে উপস্থিত আরো ছয়জন যুবকও তাদের স্বামী-স্ত্রীকে মারধর করতে থাকে। এসময় হোটেল ম্যানেজারসহ আরো কয়েকজন বলতে থাকেন তোমাদের টাকা-পয়সা কোথায় রেখেছ বল? এমন প্রশ্নের জবাবে আমি তাদের বলি ভাই আমাদেরকে মারবেন না। এই কথা বলে আমি তাদেরকে আমার পকেটে থাকা ১০ হাজার ২শ টাকা ও মোবাইল সেট তাদের হাতে তুলে দিই।
অন্যদিকে একই সময় আমার স্ত্রীকে রুম থেকে বের করে পাহাড়িকা হোটেলের দ্বিতীয় তলার একটি রুমে নিয়ে রফিক, আবুল হোসেন, আলমগীর ও অপর একজনসহ মোট চারজন মিলে গণধর্ষণ করে। এসময়তাদের বাধাঁ দিতে গেলে তারা আমার স্ত্রীকে লোহার হাতুরি ও একটি ভোতা চুরি দিয়ে বেদম মারধর করে এক সময়ে আমার স্ত্রী নিস্তেজ হয়ে পড়লে তারা সকলে মিলে তাকে গণধর্ষণ করে।
খোজঁ নিয়ে জানাগেছে অভিযুক্তদের মধ্যে পুলিশ কর্তৃক আটককৃত মোঃ রফিক পাহাড়িকা আবাসিক হোটেলের পার্শ্বোক্ত খাবার হোটেল আল মক্কা’ মালিক। অপর অভিযুক্তদের মধ্যে আবুল হোসেনের বাড়ি শহরের পুরাতন বস্তি এলাকায়। অভিযুক্ত নাছির পেশায় একজন সিএনজি ড্রাইভার, তার বাড়ি শহরের রিজার্ভ এলাকার ২ নং ওয়ার্ডস্থ প্রধান সড়কের পাশে। অভিযুক্ত আলমগীর পেশার একজন হোটেল বয়। সে পাহাড়িকা হোটেল সংলগ্ন খাবার রেস্তোরা খাজাঁ হোটেলে বয় এর কাজ করতো। এই ঘটনায় আরো এক অভিযুক্ত হলেন আনোয়ার। সে ঘটনাস্থল পাহাড়িকা হোটেলে হোটেল বয় হিসেবে কর্মরত ছিলো। নির্মম ও ন্যাক্কারজনক এই ঘটনায় অপর অভিযুক্ত’র নাম জানা যায়নি। তবে তার বাড়িও শহরের পুরাতন বস্তি এলাকায় বলে জানাগেছে। সে অভিযুক্ত আবুল হোসেনের ভাগিনা বলে জানিয়েছে ঘটনার শিকার আহতদ্বয়।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং অভিযুক্তদের মধ্য থেকে একজনকে আটক করতে সক্ষম হই।