শিরোনামঃ

রাঙামাটিতে জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পের দ্বিতীয় কিস্তিতে বনায়নের কাজ চলছে

সিএইচটি টু ডে ডট কম,রাঙামাটি।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের অধীন জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ডের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন দারিদ্রতা দুরকলীন ও জীবনযাত্রার নিরাপত্তা বিধান প্রকল্পের প্রথম মেয়াদে নানা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও দ্বিতীয় মেয়াদে বনায়নের কাজ চলছে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ একটি এনজিওর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

Picture8

রাঙামাটি জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্প

জানা গেছে, বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের অধীন জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাষ্টের অর্থায়নে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দারিদ্রতা দুরীকরন ও জীবনযাত্রার নিরাপত্তা বিধান শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয়। প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর। ২০১২ সনের জানুয়ারীতে শুরু হয়েছে ২০১৩ সনের ডিসেম্বরে শেষ হবে। প্রকল্পের মুল উদ্দ্য্যেশে কাপ্তাই লেকের কচুরীপানা বিকল্প ব্যবহার জৈবসার তৈরি করা, রাঙামাটি শহরের বর্জ্য জৈবসারে রুপান্তরের মাধ্যমে পর্যটন নগরী রাঙামাটিকে পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা, বনায়ন ও মিশ্র ফলজ বাগানের মাধ্যমে পাহাড়ি পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষন, কাপ্তাই হ্রদে মাছের অভয়াশ্রম সংরক্ষন ও পাহাড়ে বন্যপ্রানীর অবাধ বিচরনের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি এবং বন ও তার আশে পাশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও বায়োগ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থা করা। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাষ্টের অধীন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার মধ্যে গত বছর ৩ কোটি ২৫ লাখ ছাড় দেয়া হয়। এরপর এ বছরের জুনে দেয়া হয় ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা মোট ৫ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে। প্রথম কিস্তির খরচে বনায়ন খাতে ১ কোটি ২৩ লাখ, বায়োগ্যাস প্লান্টে ১ কোটি ৫০ লাখ এবং কচুরীপানি দ্বারা সার তৈরিতে ২০ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির টাকায় ৫ লাখ চারা বিতরন এবং কচুরীপানা পাতা সংগ্রহ স্তুপীকরন, বাছাই জৈবসার উৎপাদনের জন্য ২কোটি টাকা ব্যয় করার কথা রয়েছে।

প্রকল্প সুত্রে জানা গেছে, জেলার ১০টি উপজেলা এবং সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জেলা পরিষদ স্থানীয় একটি এনজিওর মাধ্যমে চারা বিতরন করছে। চারা রোপন ও ঠিকমত পরিচর্যা করা হলেও বনায়নের পাশাপাশি মানুষের আয়ও বাড়বে। বর্জ্যমুক্ত সবুজ রাঙামাটি গড়ে তোলার লক্ষে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে বনায়ন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে জেলার দশ উপজেলার ১৩শ’ প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় বা পাড়া কেন্দ্রকেও। বনায়নের জন্য এসব পাড়া কেন্দ্রে বিতরণ করা হয়েছে বনজ, ফলজ ও ওষুধি গাছের চারা। ইতিমধ্যে ১৩শ’ পাড়া কেন্দ্রে চারা বিতরণ করেছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এছাড়া ইতিপুর্বে বাস্তবায়নাধীন বায়োগ্যাস স্থাপনের বিষয়ে নানা বির্তক সৃষ্টি হওয়াতে নতুনভাবে বায়োগ্যাস স্থাপন করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইরফান শরীফ জানান, প্রকল্পে ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বনায়নের জন্য প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলজ ও ওষুধি গাছের চারা সরবরাহের কাজ করছি। ঠিকমত চারা পরিচর্যা করলেও এটি কেবল পরিবেশ বান্ধবই না অনেকের আয়ের উৎস হতে পারে। আমি জুলাই মাসে প্রকল্পটির দায়িত্ব গ্রহন করি তখন চারা রোপন করার শেষ সময় ছিল তবুও আমরা অনেক কষ্ট করে বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করেছি। তিনি আরো জানান, প্রকল্পের পিপি অনুসারে আমরা বায়োগ্যাস স্থাপনের কাজ করছি। তিনি আরো জানান, আমরা শহরকে আর্বজনামুক্ত রাখতে শহরের বিভিন্ন স্থানে ত্রিবিন সরবরাহ করছি এতে জনগনের সচেতনতা ও সহযোগিতা দরকার যাতে ময়লাগুলো ত্রিবিনে ফেলে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা জানান, প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে কাপ্তাই লেকের কচুরিপানার বিকল্প ব্যবহার জৈবসার নিশ্চিতকরণ, রাঙামাটি শহরের বর্জ্য জৈবসার রুপান্তরের মাধ্যমে পর্যটন নগরী হিসেবে রাঙামাটিকে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলা, বনায়ন ও মিশ্র ফলজ বাগানের মাধ্যমে পাহাড়ি পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ, কাপ্তাই হ্রদে মাছের অভয়াশ্রম সংরক্ষণ ও পাহাড়ে বন্যপ্রাণির অবাধ বিচরণের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি এবং বন ও তার আশেপাশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়ন ও বায়োগ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থাকরণ নিশ্চিত করা।
জনগনের সার্বিক সহযোগিতা পেলে আমরা প্রকল্পটি সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 306 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen