সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপি বলেছেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি যদি একশ ভাগ বাস্তবায়ন করে তাহলে সেটা আওয়ামী লীগ সরকারই করবে। আর এর বাস্তবায়ন অস্ত্রের ঝনঝনানী বা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে নয় সম্মিলিতভাবে সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুজে বের করতে হবে। সহযোগিতা সহমর্মিতা দ্বারা এ চুক্তি বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রেম এক পক্ষীয় হয় না দুইজনের সম্মতি লাগে, তেমনি চুক্তি বাস্তবায়ন সরকার একার পক্ষে সম্ভব নয় চুক্তি পক্ষীয়কে চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে হবে।
চুক্তি পক্ষ যদি কালো পতাকা উড়ানো চুক্তি বিরোধীদের সাথে হাত মিলায় তাহলে চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দীর্ঘ সুত্রিতায় পড়বে।
আজ শনিবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বন বিভাগের আয়োজনে বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৪ উদ্বোধন শেষে রাঙামাটি পৌর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, ৩৩৩নং মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, পুলিশ সুপার আমেনা বেগম, কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের উপ-পরিচালক নরেশ চন্দ্র বারই ও বন সংরক্ষক মোঃ আবু হানিফ পাটোয়ারী প্রমূখ।
সকালে প্রতিমন্ত্রী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৃক্ষ রোপন শেষে পৌরসভা প্রাঙ্গণে ফিতা কেটে ফেস্টুন ও কবুতর উড়েয়ে এ মেলার উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন স্টল পরিদর্শণ করেন। বৃক্ষমেলা উপলক্ষে শহরে বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়। র্যালীটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌর প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, গাছ আমাদের পরম বন্ধু, শান্তির প্রতীক জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই গাছ আমাদের সকলের বন্ধু হিসেবে পাশে থাকে। তিনি বলেন, বৃক্ষ কারো সাথে বেইমানী করে না, গাছ কখনো বলে না আমি আওয়ামী লীগ আমি বিএনপি বা আমি পাহাড়ী আমি বাঙ্গালী। বৃক্ষ রোপন করতে কোন দিবসের প্রয়োজন হয় না। আমাদের প্রাকৃতিক দূর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রচুর গাছ লাগানো প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সরকারী যেসব জায়গা রয়েছে যেখানে নিষ্কটক কোন জমি জমার ভেজাল নেই সেসব জায়গায় সামাজিক বনায়নের জন্য নির্ধারণ করতে হবে। আর বনায়নে যেসব সমস্যা রয়েছে তা নিরসন করে আমাদের সবুজ বনায়নে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সেগুন গামারীর পাশাপাশি ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা সংরক্ষণ ও রোপন করতে হবে। বাড়ীর আশেপাশে সঞ্চয়ী মনোভাব নিয়ে ফলজ ও বনজ চারা রোপন করলে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হওয়া যায়। তিনি বলেন, ফরমালিনের এই যুগে আমরা যদি বাড়ীর আঙ্গিনায় অনন্ত একটি করে ফলের চারা রোপন করি তাহলে নিঃসন্দেহে ফরমালিনমুক্ত ফল আমরা খেতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, দেশের এক দশমাংশ জায়গা হচ্ছে এই পার্বত্য চট্টগ্রাম। এ অঞ্চলের পাহাড় ও সমতল জায়গায় বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে সবুজ বনায়র করা গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের বোঝা নয় সম্পদে পরিনত হবে।
আলোচনা সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊশেসিং এমপি রাঙামাটি মহিলা কলেজের অ্যধক্ষের হাতে গাছের চারা বিতরণ করেন।