বিশেষ প্রতিবেদন, সিএইচটি টুডে ডট কম। পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৪ থেকে ১১ জনে উন্নীত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রনালয় ইতিমধ্যে প্রস্তাবের খসড়া চূড়ান্ত করেছে আগামী রোববার প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে তার কার্যালয়ে সার সংক্ষেপ পাঠানো হবে বলে মন্ত্রনালয় সুত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ১৯৮৯ সালে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট জেলা পরিষদ গঠন করা হয়। পরিষদের সদস্যের মধ্যে উপজাতি গোষ্ঠী থেকে ১ জন চেয়ারম্যান, ২০ জন উপজাতি সদস্য, ১০ জন অউপজাতি সদস্য এবং ৩ জন নারী সদস্য নির্বাচিত হবেন। নারীদের মধ্যে ২ জন উপজাতি ও ১ জন অউপজাতি সদস্য থাকবেন। তবে এ নিয়মে শুধু প্রথম এক দফায় নির্বাচন হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রনয়নের দাবীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যানের আপত্তির কারনে পরবর্তীতে আর নির্বাচন হয়নি। তার দাবি ছিল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা ভোট দেন তারা সবাই গড়ে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না। যারা কেবল পার্বত্য এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা তারাই ভোটার হতে পারবেন। তবে তার এই দাবি সরকার যেমন মেনে নেয়নি, তেমনি বিগত ২৫ বছর ধরে এখানে প্রত্যক্ষ ভোটে আর কোনো নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়নি।
পরিষদ সংক্রান্ত আইনের অপর একটি ধারার ক্ষমতাবলে যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তখন তাদের পছন্দমতো একটি অন্তর্বর্তীকালীন জেলা পরিষদ গঠন করে দেয়া হয়। তবে চেয়ারম্যানসহ এই কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা ৪ জন হওয়ায় খোদ পাহাড়িদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এতে করে এখানে যেসব উপজাতি গোষ্ঠী রয়েছে তাদের সমান প্রতিনিধিত্ব রক্ষা হচ্ছে না। এ অবস্থায় উপজাতি গোষ্ঠীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন জেলা পরিষদ গঠনে সদস্য সংখ্যা ১১ জনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রস্তাবিত এ কমিটির মধ্যে ১ জন চেয়ারম্যান ছাড়াও ১০ জন সদস্য থাকবেন। সদস্যদের মধ্যে ৭ জন হবেন উপজাতি এবং বাকি ৩ জন থাকবেন অউপজাতি। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ অনুমোদন করলে বিদ্যমান আইন সংশোধনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, অন্যান্য জেলা পরিষদের চেয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের ক্ষমতা ব্যাপক। এ পরিষদ সব ধরনের নিয়োগ প্রদানসহ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে থাকে। এক অর্থে এখানে ডিসির চেয়ে জেলা পরিষদের ক্ষমতা অনেক বেশি। অভিযোগ রয়েছে, জেলা পরিষদের পদে দায়িত্ব পালন করতে পারলে অনেকটা রাতারাতি নিজের ভাগ্য বদলে ফেলা যায়।
নাম প্রকাশে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ৪ সদস্যর স্থলে ১১জন করার ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সমর্থন রয়েছে। আর এটি হলে জেলা পরিষদগুলোর জবাবদিহীতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে।