শিরোনামঃ

পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কে হচ্ছেন ? মোঃ মোস্তফা কামাল

কে হচ্ছেন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ? তিন পার্বত্য জেলার উন্নয়নের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিত এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পদে কে অধিষ্ঠিত হচ্ছেন এখন সে দিকে তাকিয়ে আছে পার্বত্য বাসী। পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান পদ হতে বান্দরবান জেলা হতে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ১ ডিসেম্বর এ পদ হতে অব্যাহতি গ্রহনের পর এ প্রশ্নের সৃষ্ঠি হয়েছে ।Mostafa-1 পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্ডিন্যান্স এবং পার্বত্য চট্রগ্রাম বোর্ড আইন ২০১৩ (খসড়া অনুমোদিত) এ চেয়ারম্যানের পদ খালি হলে বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের কথা বলা হলেও এই পদের জন্য পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার নাম আলোচিত হচ্ছে।

১৯৭৬ সালে পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৯০সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, সেনাবাহিনী চট্রগ্রামের জিওসি চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব দায়িত্ব পালন করে আসলেও ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ নেতুৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই পদটিতে বান্দরবান জেলা হতে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর কে (উপমন্ত্রীর পদ মর্যাদা দিয়ে) বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে ৭ অক্টোবর নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার গঠন করলে এই পদে নিয়োগ পান খাগড়াছড়ি জেলা থেকে নির্বাচিত বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ওয়াদূদ ভূইয়া । তিনি ১৩ ফেব্র“য়ারি ২০০২ সাল থেকে ২২ নভেম্বর২০০৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করার পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর দ্বিতীয় বারের মতো বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে বীর বারহাদুর কে নিয়োগ দেন।(প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায়)। ২৯ মার্চ ২০০৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগদান করেন এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান হতে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ১ লা ডিসেম্বর ২০১৩ সালে চেয়ারম্যানের পদ হতে পদত্যাগ করেন।

পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে জনপ্রতিনিধি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুর হওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ পত্র গ্রহন পূর্বক জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় হতে পদত্যাগ পত্র গ্রহনের প্রজ্ঞাপন জারী করা হয় এবং একই দিন মন্ত্রনালয় থেকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন পত্রে বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যানকে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনের আদেশ জারী করা হয়ে আসছে। এরই ধারাবিহকতায় প্রথমবার বীর বাহাদুর পদত্যাগের পরদিন ২৩ আগষ্ঠ ২০০১ সালে তৎকালীন ভাইস-চেয়ারম্যান তারাচরন চাকমা, ২০০৬ সালের ২২ নভেম্বর ওয়াদূধ ভুইয়া চেয়ারম্যান পদ হদে পদত্যাগের পরদিন ২৩ নভেম্বর বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান ফিরোজ কিবরিয়া চৌধুরী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অডিন্যান্স ১৯৭৬ এ চেয়ারম্যানের পদত্যাগের পর ভাইস-চেয়ারম্যানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের কথা বলা ছিল।পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন ২০১৩ (খসড়া অনুমোদিত )এর ৬ ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে চেয়ারম্যানে পদ শুন্য হলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থ্যতা বা অন্য কোন কারনে চেয়ারম্যান তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে, নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান তাহার পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত বোর্ডের ভাইস- চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে বীরবাহাদুর গত ১ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ করলে তাঁর পদত্যাগ পত্র করে ঐদিন হতেই এই পদত্যাগ পত্র গ্রহন করা হয়েছে ২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় হতে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বিগত সময় গুলোতে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ পত্র গ্রহনের প্রজ্ঞাপন জারির সাথে সাথে পৃথক প্রজ্ঞাপনে বোর্ডের-ভাইস- চেয়ারম্যানকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও এই বার ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সংক্রান্ত কোন প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় বোর্ডের পরবর্তী চেয়ারম্যান পদ নিয়ে জটিলতার সৃষ্ঠি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব প্রদানের বিষয়ে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় কি করছেন সে বিষয়টি পরিস্কার নয়। বোর্ডের অধ্যাদেশ ও খসড়া আইনে এই বিষয়ে সু স্পস্টত দিক নির্দেশনা দেয়া থাকলেও প্রজ্ঞাপন জারিতে বিলম্বের বিষয়টি নিয়ে নানা রকম প্রশ্নের সৃষ্ঠি হয়েছে। এই বিষয়ে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের ২ জন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলেও এই বিষয়ে তারা কোন কিছু জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে বোর্ডের অর্ডিন্যান্স এবং খসড়া আইনকে পাশ কাটিয়ে মন্ত্রনালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এবং এই ইচ্ছা কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারিতে বিলম্ব হচ্ছে।
মোঃ মোস্তফা কামাল
রাঙামাটি।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 596 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen