গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত খাগড়াছড়ি জেলা শহরে আমরা অন্ধকারে এক ভূতুরে পরিবেশে দিনাতিপাত করছি। গত দুদিন এখানে বিদ্যুৎ এক মিনিটের জন্যেও আসে নাই, যায়ও নাই। এখন এখানকার মানুষের খাওয়ার পানিতো দূরে থাক টয়েলেট করে পানি ব্যবহার করার পানিও নাই। এতে মানুষ এখন এখানে নিজেকে পবিত্রতা রক্ষায় কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। টয়লেটের কমোড ফ্লাশ করাও যাচ্ছেনা। রান্নাবান্না করার পানিতো পাওয়াই যাচ্ছেনা। ফ্রিজের সকল মাছ মাংস ও তরিতরকারি নষ্ট হয়ে গেছে।
পাওয়ার ব্যাংক যাদের আছে তাদেরই কেবল এই মূহুর্তে
মোবাইল চালু আছে তাও অল্প সময়ের মধ্যেই সেই সকল মোবাইল বন্ধ হয়ে যাবে যদি সহসা বিদ্যুৎ না আসে। বাকি অন্যদের মোবাইল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাটারি চালিত টমটম গুলো বিদ্যুৎ এর অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রী ও চালকরা কঠিন সমস্যা মোকাবেলা করছে।
হাসপাতাল ও রুগীদের অবস্থা আরো ভয়াবহ। বিদ্যুৎ না থাকলে মানুষের আরো যতসব ক্ষতি হয় তা আপনারা জানেন। এই পোস্টে আমার সে সব লেখার কোন আগ্রহ নাই।
কিন্তু আমি এখানে জানতে চাই সরকার জাতীকে বলে আসছে হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশকে বিদ্যুৎ এ সয়লাব করে দিয়েছে। যদি সরকারের এই কথাই সত্যি হয় তাহলে আমার জেলা খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎ এর এই দশা কেন?
শুধু উল্লেখিত দুদিনের কথাই আমি বলছিনা, সপ্তাহের শনিবার ও সোমবার স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের ঘোষনা অনুযায়ী এমনিতে এই জেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে। বাকি পাঁচদিনের মধ্যে প্রতি ঘন্টায় বার বার বিদ্যুৎ চলে যায়, কখনো কখনো একবার গেলে প্রায় সারাদিনই আসেনা। গড় হিসাব করে বলতে গেলে ওই পাঁচদিনের মধ্যেও দুদিন বিদ্যুৎ থাকেনা। অথচ উন্নয়নের জোয়ারে দেশ বিদ্যুৎ এ ভেসে যাচ্ছে কিন্ত খাগড়াছড়ির এই অবস্থা আমি টকশোতে সরকারের উদ্দেশ্যে বার বার তুলে ধরার পরও খাগড়াছড়িবাসি বিদ্যুৎ এর এই অত্যাচার হতে রেহাই পাইনি। অথচ সারাদেশে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের প্রতিযোগতায় খাগড়াছড়ি জেলার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রথম স্থান অধিকার করে সরকার থেকে পুরস্কৃত হয়েছে!
দেখুন একি আজব দেশ আর তার সরকার, একটা জেলাকে দিনের পর দিন অন্ধকারে রেখে, বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত করে সরকার তার নির্বাহী প্রকৌশলীকে নাটকীয়ভাবে পুরস্কৃত করে জাতীর সাথে প্রতারণা করছে।
লেখক: ওয়াদুদ ভুইয়া, সাবেক সংসদ সদস্য, খাগড়াছড়ি