শিরোনামঃ

কে হচ্ছেন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ? কামাল পাশা

কে হচ্ছেন পার্বত্য চট্রগ্রামের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ? খাগড়াছড়ি থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যMostafa55 কুজেন্দ্র ত্রিপুরা, নাকি পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সদ্য বিদায়ী প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার , নাকি রায়ামাটির নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য পার্বত্য চট্রগ্র্মা জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা ঊষাতন তালুকদার ? নাকি অন্য কেউ ?

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী টানা দ্বিতীয় বারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর পার্বত্য চট্রগ্রাম বাসীর দৃষ্টি এখন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের দিকে। পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পাওয়া বীর বাহাদুর ঊশে সিং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার পর পদত্যাগ করেন বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ থেকে । এর পর দীর্ঘ ২৩ দিনের মতো চেয়ারম্যানের পদ শুন্য থাকার পর স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয় পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে। বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি এখনো রাঙ্গামাটিস্থ বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে তাঁর দপ্তরে আসেননি।

যদিওবা সচিবালয়ে বসেই তিনি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে বোর্ডের বিভিন্ন ফাইলে সই করছেন। এখন বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যানের নিয়োগের কথা শোনা যাওয়ার প্রেক্ষিতে আলোচনায় উঠে এসেছে তাহলে কি রাঙ্গামাটিতে বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে আসার আগেই নতুন চেয়ারম্যানের ঘোসনা পাচ্ছে পার্বত্য চট্রগ্রাম বাসী? পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদটিতে জনপ্রতিনিধিদের নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে (১৯৯৬-২০০১) । এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয় প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত সম্মতি নেয়ার পর। প্রধানমন্ত্রীই নির্ধারন করেন চেয়ারম্যানের পদ মর্যাদা। প্রথমবারের মতো বীর বাহাদুর এম.পিকে এই পদে নিয়োগ দেয়ার পর তাঁর পদ মর্যাদা উপমন্ত্রী হিসাবে এবং ২০০৯ সনে দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনের পর আবারো বীর বাহাদুর এম.পিকে প্রতিমন্ত্রীর পদ মর্যাদায় বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয। অপরদিকে ২০০১ সালে সরকার গঠনের পর বিএনপির খাগড়াছড়ি হতে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ওয়াদূদ ভুইয়াকে বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হলেও বাড়তি কোন পদ মর্যাদা দেয়া হয়নি সে সময়। ১২ জানুয়ারি মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহনের মাধ্যমে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর নতুন সরকারে বান্দরবান থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর ঊশে সিং এম.পিকে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দেয়ায় বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে।

খাগড়াছড়ি জেলা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নাম বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে এখন সবচেয়ে বেশী উচ্চারিত হচ্ছে। খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একই জেলার জেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান এর পাশাপাশি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর অভাবনীয় বিজয় তাকে এই আলোচনায় নিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগ সরকার যখনি ক্ষমতায় আসে তখনি তিন পার্বত্য জেলা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের উপমন্ত্রী কিংবা প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কিংবা পার্বত্য চট্রগ্রাম শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়ির আওয়ামী লীগ দলীয় এই সংসদ সদস্যের বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়ার বিষযটি সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাচ্ছে। কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পাশাপাশি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সদ্য বিদায়ী প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের নাম ও আলোচনায় এসেছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী হিসাবে রাঙ্গামাটির আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার পরও পরাজিত হওয়ার পর দীপংকর তালুকদার পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে বাদ পড়ার পর এখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির স্বার্থেই তাকে অন্তত উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগের প্রত্যাশা করছে এখানকার আওয়ামী লীগ ঘরনার রাজনীতিবিদরা । তাদের মতে এই আসনে দীপংকর তালুকদারের পরাজয়ের পিছনে ভিন্নতর হিসাব নিকাশ রয়েছে তাই এই আসনে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনে জয়ের স্বার্থে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে চাঙ্গা রাখার জন্যই আওয়ামী লীগের কান্ডারী দীপংকর তালুকদারকে অন্তত বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ প্রদান প্রয়োজন। পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে রাঙ্গামাটি জেলা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদারের নাম ও এখন উচ্চারিত হচ্ছে ।

পার্বত্য চট্রগ্রাম জনসংহতি সমতির কেন্দ্রীয় এই নেতা এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীকে হারিয়ে চমক সৃষ্ঠি করেছেন এবং এই কারনেই তিনি এখন সর্বত্র আলোচিত। বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে তাঁকে নিয়োগ চমক সৃষ্ঠি করা হতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে আলোচিত এই সব নামের পাশাপাশি আরো একাধিক নাম ও এখন আলোচনায় আসছে। তবে রাঙ্গামাটির যে কোন একজন উপজাতীয় ব্যক্তিকে এই পদে নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সে হিসাবে এই সব আলোচিত নামের পাশাপাশি রাঙ্গামাটির আওয়ামী লীগ নেতা চিংকিউ রেয়ায়ার নামও উচ্চারিত হচ্ছে। পাশাপাশি দলীয় ঘরনার বাইরে কিন্তু মক্তিযুদ্ধের স্ব পক্ষীয় চিন্তা ধারার পক্ষের শক্তি হিসাবে পরিচিত একাািধক উপজাতীয় নেতার নাম উচ্চারিত হচ্ছে ।তবে এই পদে নিয়োগের ব্যাপারে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সদ্য নিযুক্ত প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এম.পির মতামতকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে ।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 474 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen