শিরোনামঃ

ঈদের বন্ধে ঘুরে আসুন বান্দরবান

কৌশিক দাশ, সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। পবিত্র ঈদুল ফিতরের বন্ধে বান্দরবান হতে পারে আপনার আনন্দের সঙ্গী। ভ্রমনের জন্য এই সময় আপনি বান্দরবানের নীলগিরি ,শৈল প্রপাত, মেঘলা ,চিম্বুক ,নীলাচল ,জাদি মন্দির সহ বামির্জ মাকেটগুলোকে বাছাই nilgiryকরতে পারেন।

যদি আকাশ ছুঁতে চান তাহলে চলে আসুন বান্দরবানের অন্যতম পর্যটন স্পট নীলগিরিতে। আকাশ ছুঁয়ে দেখা যায় এই বান্দরবানের নীলগিরি পর্যটন স্পটে! জেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় নীলগিরির অবস্থান। অল্প সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত পর্যটন স্পট নীলগিরি সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেছে। পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা পথে বান্দরবান থেকে চাঁদের গাড়ি কিংবা জীপ-মাইক্রো করে অথবা বাসে নীলগিরিতে যাওয়া যায়। জনপ্রতি ৫০টাকায় প্রবেশ করতে পারেন এই পর্যটন স্পটে । এই স্পটের প্রতিটি সময় আপনাকে মেঘের খুব কাছাকাছি নিয়ে যাবে। বিশ্বাস না হলে চলে আসুন নিজ চোখে দেখতে।

দুর্গম পাহাড়ে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে আকাশ নীলা, মেঘদূত, নীলাতানা নামে পর্যটকদের জন্য সকল সুবিধা সম্বলিত কয়েকটি কটেজ। কটেজগুলো রাত্রি যাপনের জন্য ভাড়া পাওয়া যায় ।

এখানে গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক একটি রেস্টুরেন্টও। নীলগিরি যেন প্রকৃতির এক অনন্য দান। যারা আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেন নীলগিরিতে গেলে তার কিঞ্চিত স্বপ্ন পূরণ হতে পারে। নীলগিরিতে গেলে মনে হবে আপনি আকাশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন।

মেঘেরা নিজ থেকে আপনাকে ছুঁয়ে যাবে। নীলগিরির চূড়া থেকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং, প্রাকৃতিক আশ্চর্য বগালেক, ককসবাজারের সমুদ্র, চট্টগ্রামের সমুদ্র বন্দরের আলো-আঁধারি বাতি এবং চোখ জুড়ানো পাহাড়ের সারিও দেখতে পাওয়া যায়।

নীলগিরির কাছাকাছি রয়েছে বেশ কয়েকটি ম্রো উপজাতীয় গ্রাম। নীলগিরির একদম কাছে কাপ্রু পাড়া আপনি সহজেই পরিদর্শন করে ম্রো আদিবাসী সম্পর্কে জানতে পারবেন। নীলগিরিতে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প। ফলে এখানে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। আপনার যে কোন প্রয়োজনে সেনা সদস্যরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।Nilachal
নীলগিরির রাতের সৌন্দর্য আরো হতবাক করে। চারিদিকের হরিণ, শিয়ালসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণীর ডাক আর পাহাড়গুলোর আলো-আঁধারির খেলা দেখে আপনার জীবনকেই যেন রহস্যময় বলে মনে হবে। যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্য রাতের নীলগিরি হতে পারে উৎকৃষ্ট স্থান।

নীলগিরি যাওয়ার পথে আপনি দেখে যেতে পারেন বান্দরবানের অপার সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাত। এখানে আদিবাসী বম তরুণীরা আপনাকে স্বাগত জানাবে। এখান থেকে কিনে নিতে পারেন আদিবাসীদের হাতের তৈরি নানা পণ্য। তাছাড়া বর্তমানে তাজা আনারস ,কলা ও আম তো আছেই । আপনাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকছে এই পর্যটন।

অপার সৌন্দর্যময় শৈলপ্রপাত পরই বাংলার দার্জিলিং খ্যাত চিম্বুকে পৌঁছে যাবেন আপনি। চিম্বুকের সুনাম সারা দেশব্যাপী। এখানে রয়েছে টি এন্ড টির বিশাল টাওয়ার, উন্নয়ন বোর্ড তৈরি করেছে সকল সুবিধা সম্বলিত রেস্ট হাউস। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পুরনো একটি রেস্ট হাউসও রয়েছে এখানে। চিম্বুকে পৌঁছেই স্থানীয় আদিবাসীদের হাতের তৈরি এক কাপ চা খেয়ে নিজেকে চাঙ্গা করে রওয়ানা দিতে পারেন নীলগিরির দিকে। অথবা এর একটু দূরেই সেনাবাহিনী পরিচালিত ক্যান্টিন রয়েছে। এখানে আপনি সেরে নিতে পারেন দুপুরের খাবার অথবা হালকা খাবার।

নীলগিরির সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এখান থেকে চোখে পড়ে বান্দরবানের উপর দিয়ে বয়ে চলা সর্পিল সাঙ্গু নদী। এখান থেকে মনে হবে সাঙ্গ নদী আপনার খুব কাছে। সাঙ্গু নদীর অপরূপ সৌন্দর্য এখান থেকে উপভোগ করা যায়। সাঙ্গুর বুক চিরে বয়ে চলা ছোট ছোট নৌকাগুলোকে দেখলে দূর থেকে মনে হবে স্বপ্নের কোন ডিঙি বয়ে চলছে সাঙ্গু নদী দিয়ে।gadi mandir

নীলগীরে ভ্রমনে আপনার মন তো ভালোই হবেই ,পাশাপাশি পরবর্তী সফরের প্রোগাম এর আইডিয়া আসবে। ভ্রমনে এই পথেই আপনি নানা পর্যটন স্পট পাবেন, যাকিনা এই ঈদ ও পরবর্তী শীতকাল বা সারা বছর ভ্রমনের জন্য আপনাকে অনুপ্রেরণা জাগাবে।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 850 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen