শিরোনামঃ

আলোচিত সমালোচিত সেই আব্বাস উদ্দিনকে দেখা গেল দুদক চেয়ারম্যানে পাশে

বিশেষ প্রতিনিধি, সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। আব্বাস উদ্দিন। রাঙামাটির জনমুখে দুর্নীতিবাজদের মধ্যে একজন। তিনি তার এনজিও “পাড়া”র মাধ্যেমে বাংলাদেশ পরিবেশ ওDSC08422 বন মন্ত্রনালয়ের আওতায় ৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার “পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যেমে দারিদ্রতা দুরীকরণে ও জীবনযাত্রার নিরাপত্তা বিধান” শীর্ষক প্রকল্পের টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ আছে।

এই দুর্নীতি নিয়ে কয়েকটি টেলিভিশন , একাধিক প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইনসহ একাধিক মিডিয়ায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অথচ সেই আলোচিত আব্বাসকে দেখা গেল দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানে মো: বদিউজ্জমানের পাশে

জলবায়ু তহবিলে টাকার সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির বিরুদ্ধে মিডিয়া সংবাদ প্রচার হওয়ার পর কোন প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ দিতে পারেনি আব্বাস উদ্দিন ।
দুর্নীতির খবরের কারণে জেলার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্তাদের কাছে আপনজন হয়ে উঠে আব্বাস উদ্দিন। আসা যাওয়া বাড়ে জেলা দুদকসহ সরকারী অফিসে। অর্জন করে রাঙামাটি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য পদ। যেকোন সরকারী অনুষ্ঠানে স্পনসরের ভুমিকা পালন করতে দেখা যায় এই আব্বাসকে। আর সেই আব্বাসকে আজ দেখা গেল দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মো: বদিউজ্জমানের পাশে। এই নিয়ে দুদকের কার্যক্রম নিয়ে মানুষের মুখে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে।

Abbas 6

বুধবার সকালে রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সভাকক্ষে তিন পার্বত্য (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সাথে মত বিনিময় সভায় আব্বাসকে দুদকের চেয়ারম্যানের পাশে দেখা যায়। এসময় দুদকের চেয়ারম্যানের সাথে কানে কানে কথা বলতে দেখা যায়।
এছাড়াও তিনি অনুষ্ঠানে মাইক্রোফোন বহন, হাততালি দেওয়া, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর সভা কক্ষের জানালা খোলা-বন্ধ, পর্দা টানানো ফেলা, দুদক চেয়ারম্যানের চেয়ার ঠিক করা, প্রধান অতিথির চেয়ার দেখাশুনা করা, অতিথিদের আসন বিন্যাস নিশ্চিত করা, ক্যামরা নিয়ে পুরো অনুষ্ঠানের ছবি তোলা, সহকর্মীদের অনুরোধে তাদের মোবাইলে দিয়ে ছবি তুলে দেওয়া, অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করাসহ পুরো আয়োজনের তাকে দেখা যায় অলরাউন্ডারের ভুমিকায়।

বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের বাস্তবায়নাধীন জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ডের কাজে যার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ সেই পাড়ার নির্বাহী পরিচালক আব্বাসউদ্দিনকে দেখা গেছে খুব ব্যস্ত। কিছুক্ষন মাইকের কাছে, কিছুক্ষন দুদক চেয়ারম্যানের কানের কাছে গিয়ে কি সব কথা যেন বলছিলেন। মিডিয়া কর্মীসহ সবাই আশ্চার্য্য হয়ে গেছেন এত বড় দুর্নীতি করার পরও কি করে দুর্নীতি দমন কমিশনের সভায় এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের সাথে তার দহরম মহরম সর্ম্পক দেখে। জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পের মেয়াদ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হলেও এটি চলতি বছরের ৩০জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। প্রায় ৬ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে ইতিমধ্যে সাড়ে ৪ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বাকি আরো দেড় কোটি টাকা কাজ না করেই ভাউচার ঠিক ঠাক করে আত্বসাতের প্রচেষ্টা চলছে বলে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে।
উন্মুক্ত আলোচনা সভায় জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান মহসিন রানা, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সুনীল কান্তি দেসহ অনেকে আলোচকই নাম প্রকাশ না করেই জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটিগুলোতে থেকে বির্তকিত ব্যাক্তিদের বাদ দিতে কমিশন চেয়ারম্যানের প্রতি আহবান জানান। এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বিষয়টি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।

এই বিষয়ে জানতে রাঙামাটি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মায়াধন চাকমা বলেন, এই অনুষ্ঠানে আব্বাসকে অতিরিক্তকোন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। যা করেছেন নিজ উদ্যোগে করেছেন। তিনি রাঙ্গামাটি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির একজন পরীক্ষিত সদস্য। তিনি জেলার দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির পর পর তিনবার সদস্য হয়েছেন।
গত ৯ জানুয়ারী তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যপদ লাভ করেছেন। এর মেয়াদ আগামী তিন বছর বলে জানা মায়াধন চাকমা। তিনি বলেন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি হয় ডিএসবি, এনএসআই, পুলিশসহ অনেক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সদস্যর বিষয়ে নানান পরীক্ষা- নীরিক্ষার পর এই সদস্যপদ দেওয়া হয়। সেই প্রক্রিয়ায় উর্ত্তীর্ণ হয়ে আব্বাস সদস্য হয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

Share This:

খবরটি 2,047 বার পঠিত হয়েছে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Time limit is exhausted. Please reload CAPTCHA.

ChtToday DOT COMschliessen
oeffnen