সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় পার্বত্য অঞ্চল থেকে অনেক অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরকালীন সময়ে ২৩২টি অস্থায়ী সেনাক্যাম্প থেকে গত ১৭ বছরে ১১৯টি সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকিগুলোও কয়েকটি ধাপে প্রত্যাহার করা হবে।
বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরকালে রাঙামাটির স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদারের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, “এ সমস্যাকে আমরা রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখেছি এবং বলেছি মিলিটারির মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, আলোচনা করে সমাধান করতে হবে।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক দীর্ঘ বক্তৃতায় শেখ হাসিনা শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং সে এলাকার উন্নয়ন সম্পর্কে সংসদে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, শান্তি চুক্তির আলোকে মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর সব অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ছয়টি গ্যারিসন দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, রুমা ও আলীকদমে প্রত্যাবর্তনের বিধান রয়েছে। এ লক্ষ্যে গ্যারিসন সমূহের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলছে। রুমা গ্যারিসনের ৯৯৭ একর ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন। গ্যারিসন সমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন করে সময়োচিতভাবে অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহারের মাধ্যমে মোতায়েনরত সেনাবাহিনীকে নির্দিষ্ট গ্যারিসনসমূহে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে।
১২ হাজার শরণার্থীকে পুনর্বাসন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ভারত প্রত্যাগত ১২ হাজার ২২৩টি শরণার্থী পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে ৫০ হাজার নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে। ২০ বছর আগে যারা চাকরির স্থান ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন, তাদের পুনরায় চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিধিমালা শিথিল করে পার্বত্যবাসীদের পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীতে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “শান্তি চুক্তি যখন করেছি, কাজেই চুক্তির ধারাগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব। আমরা আরও আগেই বাস্তবায়ন করতে পারতাম, কিন্তু হাতে সময় ছিল না। যে ধারাগুলো এখনো বাস্তবায়িত হয়নি সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।” শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর ওই অঞ্চলের যখনই কোনো ঘটনা ঘটেছে, তখনই সেখানে ছুটে গেছি। সমাধানের পথ কী তা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছি।”