সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিএনপির অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত খাগড়াছড়িতে আগের সেই জৌলুস নেই। টানা ৮ বছরের নানামুখী ঝড়ঝঞ্ছায় খাগড়াছড়ি বিএনপির নেতৃত্বও অনেকটা পর্যদস্ত। ক্ষমতার বদৌলতে ব্যবসা-ঠিকাদারী-জায়গা-চাকুরীসহ অপরিমেয় সম্পদের মালিক বনে যাওয়া নেতাদের অধিকাংশই লাপাত্তা। পদ-পদবীতে ছিলেন, এমন অনেকেই এখন মুল ¯্রােতের বাইরে। তৃণমুলের অনেকে হয়েছেন, দলছুট অথবা নৌকার মাঝি।
কিন্তু এতোসব বৈরী হাওয়ার মধ্যেও পঞ্চম উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে জয়-পরাজয় এবং ভোটের হিসেবে সবাইকে চমক লাগিয়ে দিতে সক্ষম হয়।
তাই আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে জেলাসদর, রামগড় ও মাটিরাঙ্গায় পূর্ন প্যানেলে দল সমর্থিত প্রার্থী দেয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে জেলার শীর্ষ নেতারা। চলতি রমজান মাসে সে লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি ইফতার মাহফিলে দলের সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূইয়ার উপস্থিতির কথা রয়েছে। তবে সরকারী দল এবং প্রশাসনের চাপ থাকলেও নেতাকর্মীদের জেলার বাইরে কোথাও নিয়ে গিয়ে নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণ করা হবে।
বিগত ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি পৌর সভার মধ্যে মাটিরাঙ্গায় বিপুল ভোটে জয়ী হয় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। রামগড়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামাপূর্ন নির্বাচনে অল্প ভোটে হেরেছে। আর রাজনৈতিক কৌশলের কারণে জেলাসদরে ভোটের পাল্লা অনেক ভারী হলেও বিএনপির কোন প্রার্থী ছিলনা। তবে অধিকাংশ কাউন্সিলর প্রার্থী জয়ী হয়ে আসেন।
এবারের নির্বাচনে পৌর বিএনপির সভাপতি ও টানা দুইবারের কাউন্সিলর আব্দুর রব রাজা, টানা তিনবারের কাউন্সিলর এ.টি.এম. রাশেদ উদ্দিন, জেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এড. আব্দুল মালেক মিন্টু এবং সদর উপজেলা শাখার সভাপতি অনিমেষ দেওয়ান নন্দিতের নাম শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া বিএনপি ঘরানার ‘মারমা সংগঠন ঐক্য পরিষদ’র একজন প্রভাবশালী নেতাকে বিএনপি সমর্থন দিতে পারে বলে জেলাশহরে জোর গুঞ্জন রয়েছে।
আর মাটিরাঙ্গাতে বর্তমান মেয়রকেই দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা দেখতে চান। তবে আলোচিত নেতা বাদশা মিয়া এবং জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবা সম্পাদক নুরুল আলম রানাও দলের সমর্থন চাইবেন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিধন্য রামগড় পৌরসভায় আশির দশক থেকেই ভূইয়া পরিবারের বিপুল দাপট রয়েছে। পৌরসভাসহ উপজেলাটির বাসিন্দারা নানা কারণে ভূইয়া পরিবারকেই নিজেদের অভিভাবক মনে করেন। আর সেই কারণে পৌর নির্বাচনে এই পরিবারটির কাউকেই দেখতে চাচ্ছেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এবারের নির্বাচনেও রাজনৈতিক কৌশল কী হবে তা নির্ধারিত না হলেও দলের সমর্থন পেতে আগ্রহীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন, মাটিরাঙ্গা পৌরমেয়র ও জেলা বিএনপির সা: সম্পাদক আবু ইউসুফ চৌধুরী।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে অতীতে কখনো বিএনপি নেতা-কর্মী কিংবা সমর্থকের সংকটে ছিলোনা। অনেকে বহিস্কৃত অথবা স্বেচ্ছায় সুবিধার সন্ধানে পালালেও তৃণমূলে এটির কোন প্রভাব পড়েনি। তাই তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে জেলাসদর, রামগড় এবং মাটিরাঙ্গাতে প্রার্থী মনোনীত করা হবে।