এডভোকেট দীপেন দেওয়ান রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি। তার পিতা প্রয়াত সুবিমল দেওয়ানও ছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের সহকারী উপদেষ্টা। এডভোকেট দীপেন দেওয়ান ১৯৬৩ সনের ৮জুন জন্মগ্রহন করেন। ১৯৭৮ সনে রাঙামাটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাশ করেন, পরবর্তীতে ১৯৮৫ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলএলবি (সম্মান) এবং এলএলএম পাশ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বার এসোসিয়েশনে যোগ দেন। ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারী বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিচার) বিভাগে যোগ দেন। ১৯৯৫ সনে তিনি জ্যেষ্ঠ্য জজ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ২০০০ সনে তিনি পার্বত্য চট্রগ্রাম ভুমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এডভোকেট দীপেন দেওয়ান বর্তমান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে ২০০৬ সনে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহন করে বিএনপিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সনে জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন, আইনী বাধ্য বাধকতার কারনে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহন করতে না পারলেও তার সহ ধর্মিনী মিসেস মৈত্রী চাকমা অংশ নেন। ২০০৯ সনে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক করা হয়। দীপেন দেওয়ান ছাত্র জীবনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। ব্যাক্তিগত জীবনে স্ত্রী মৈত্রী চাকমা ছাড়াও তার দুই অদিতি ও রাজেশ্বরী দেওয়ান নামে দুই কন্যা রয়েছে। সম্প্রতি সিএইচটি টু ডে ডট কমের সম্পাদক ফজলুর রহমান রাজন তার সাথে সম সাময়িক রাজনীতির নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানান, আগামীতে বিএনপি বা ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসলে পাহাড়ী বাঙালী সবাইকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সবার কল্যানে কাজ করবেন। সাক্ষাতকারটি হুবহু তলে ধরা হলো।
প্রশ্নঃ কেমন আছেন?
দীপেন দেওয়ান ঃ ভালো আছি।
প্রশ্নঃ দলীয় কার্যক্রম কেমন চলছে?
দীপেন দেওয়ানঃ দলীয় কার্যক্রম অত্যন্ত ভালোভাবে চলছে, আমরা এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন জাতীয় নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রশ্নঃ অভিযোগ রয়েছে বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত, অনেক সময় দলীয় নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় কর্মসুচী আলাদাভাবে পালন করেন, এর কারন কি?
দীপেন দেওয়ানঃ বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত হওয়ার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। বিএনপির জেলা ও কেন্দ্রীয় কার্যক্রম যথাযথভাবে জেলা সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের নেতৃত্বে প্রতিনিয়ত পালিত হচ্ছে। তবে বড় দলগুলোতে প্রতিযোগিতা থাকে।
প্রশ্নঃ আগামী নির্বাচনে আপনার মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে প্রত্যাশা কতটুকু? আপনাকে যদি মনোনয়ন দেয়া না হয় যাকে দেয়া হয় তার জন্য কাজ করবেন কি?
দীপেন দেওয়ানঃ আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়ে আমি শতভাগ নিশ্চিত। সেটি নির্বাচন এলে দেখতে পাবেন, এটি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোন অবকাশ নেই।
প্রশ্নঃ মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী? জনগন কেন আপনাকে ভোট দিবে বলে মনে করেন?
দীপেন দেওয়ানঃ আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আওয়ামীলীগের দুঃশাসনে জনগন অতিষ্ঠ, জনগন পরিবর্তন চায় তাই সারাদেশের মত পার্বত্য অঞ্চলে নেতৃত্বের পরিবর্তন ও নাগরিক সুবিধার জন্য জনগন আমাকে ভোট দিবে।
প্রশ্নঃ অভিযোগ রয়েছে আপনি এককভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে নতুনদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন, বিষয়টা কতটুকু সত্য?
দীপেন দেওয়ানঃ এককভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহন করার কোন সুযোগ নেই, অভিযোগটি সম্পুর্ন ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। আলোচনা করেই ত্যাগী নেতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ আপনার দল ক্ষমতায় গেলে কি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করবে?
দীপেন দেওয়ানঃ বিএনপির শাসন আমলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে ১২টি বিষয় হস্তান্তও করা হয়েছে , ইতিপুর্বে কোন সরকার এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় আসলে দেশ ও জনগনের স্বার্থে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য যে কোন উদ্যোগ নিবে।
প্রশ্নঃ আগামী নির্বাচনে জনগনের কাছে আপনাদের প্রতিশ্র“তি কি?
দীপেন দেওয়ানঃ জনগন যদি আমাদের নির্বাচিত করে তাহলে আমি পার্বত্য চট্রগ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের জনগনের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করব।
প্রশ্নঃ ক্ষমতায় আসলে কোনটিকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবেন?
দীপেন দেওয়ানঃ শান্তির বিকল্প নেই, শান্তি ও সৌহার্দ্যপুর্ন পরিবেশ ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়, তাই শান্তি ও উন্নয়নকে অগ্রাধিকার প্রদান করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করব।
প্রশ্নঃ মহাজোটের সময়কালকে কিভাবে মুল্যায়ন করবেন?
দীপেন দেওয়ানঃ পদ্মা সেতু দুর্নীতি, হলমার্ক কেলেংকারীসহ নানা দুর্নীতিতে ভরপুর সরকার চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকার জন্য পঞ্চদশ সংশোধনী করেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বর্তমান মহাজোট সরকার সার্বিকভাবে জনগনের প্রত্যাশা পূরন করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
আগামী শনিবার দেখুন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমার সাক্ষাতকার।